English Version
আপডেট : ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০৭:৩২
সূত্র:

এক বছরে বিনিয়োগ ২২ কোটি টাকা

এক বছরে বিনিয়োগ ২২ কোটি টাকা

চট্টগ্রাম অঞ্চলে বিদেশী ও স্থানীয় বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভাটা পড়েছে। দেশে বর্তমানে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ বিরাজের কথা বলা হলেও বিদেশী বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছেন কম। ২০১৯ সালে চট্টগ্রাম অঞ্চলে শতভাগ বিদেশী বিনিয়োগ হয়েছে ২১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। সেখানে ২০১৮ সালে এর পরিমাণ ছিল ২৩ কোটি ১১ লাখ টাকার কিছু বেশি। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে বিনিয়োগ কমেছে ১ কোটি ২১ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। তবে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ কমলেও যৌথ বিনিয়োগের পরিমাণ বেড়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার কারণে বিনিয়োগে স্থবিরতা বিরাজ করছে। তবে চট্টগ্রাম অঞ্চলে অনেক উন্নয়ন প্রকল্প চলমান আছে। এ প্রকল্পগুলোর কাজ সম্পন্ন হলে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক এলাকায় পরিণত হবে চট্টগ্রাম। এত কিছুর পরও চট্টগ্রামে বিদেশী বিনিয়োগ কম হওয়াকে ভালো লক্ষণ নয় বলে মনে করছেন তারা।

বিনিয়োগ বোর্ডের তথ্যমতে, চট্টগ্রাম অঞ্চলে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ২০১৯ সালে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের জন্য ১২০টি প্রকল্পে বিনিয়োগ নিবন্ধন করা হয়। এসব প্রকল্পের বিপরীতে সম্ভাব্য বিনিয়োগের পরিমাণ ৪ হাজার ৩৯৯ কোটি ৯৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এতে কর্মসংস্থান হয় ৭ হাজার ৬৪৭ জনের, যেখানে আগের বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালে স্থানীয় বিনিয়োগের জন্য ১৬৬টি বিনিয়োগ প্রকল্পের নিবন্ধন হয়। এসব প্রকল্পের বিপরীতে মোট বিনিয়োগের সম্ভাব্য পরিমাণ ছিল ৬ হাজার ২০৮ কোটি ৫৭ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। আর কর্মসংস্থান ছিল ১৫ হাজার ৩৯৭ জনের। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে বিনিয়োগ নিবন্ধনের পরিমাণ কমেছে ১ হাজার ৮০৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। একইভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ কমেছে ৭ হাজার ৭৫০ জনের।

তথ্যমতে, ২০১৯ সালে চট্টগ্রাম অঞ্চলে চারটি বাণিজ্যিক প্রকল্পের বিপরীতে বিদেশী প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ নিবন্ধন নেয়া হয় মাত্র ২১ কোটি ৯০ লাখ টাকার। ২০১৮ সালে শতভাগ বিদেশী বিনিয়োগ চারটি প্রকল্পের বিপরীতে বিনিয়োগ নিবন্ধন নেয়া হয় ২৩ কোটি ১১ লাখ। এতে বিদেশী বিনিয়োগ নিবন্ধন কমেছে ১ কোটি ২১ লাখ ৭৬ হাজার টাকা।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চট্টগ্রামের পরিচালক মোহাম্মদ ইয়াসিন বলেন, বিশ্বব্যাপী বিদেশী বিনিয়োগকারীরা ইজ অব ডুয়িং বিজনেসের ক্ষেত্রে যারা দুই ডিজিটে আছে তাদের  অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। বাংলাদেশও এ দুই ডিজিটে যাওয়ার  চেষ্টা করছে। শতভাগ বিদেশী বিনিয়োগ কমলেও উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে যৌথ বিনিয়োগ। তাছাড়া বিশ্বব্যাপী মন্দার প্রভাবের কারণেও সবক্ষেত্রে বিনিয়োগ একটু ধীরগতির হলেও আশা করছি, সামনে এ হার দ্রুত বাড়বে।

এছাড়া দেশী-বিদেশী উদ্যোক্তাদের যৌথ বিনিয়োগ বেড়েছে প্রায় ১০ গুণ। ২০১৯ সালের নয়টি প্রকল্পের বিপরীতে যেখানে বিনিয়োগ নিবন্ধন হয় ৭০৮ কোটি ৩০ লাখ, সেখানে ২০১৮ সালে বিনিয়োগ নিবন্ধন হয় মাত্র ৭৪ কোটি ৫৮ হাজার টাকা।

থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, চায়না ও ইন্দোনেশিয়ার বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়ে এ যৌথ বিনিয়োগ করছেন।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, চট্টগ্রাম অর্থনৈতিক হাব। চট্টগ্রামের মিরসরাই ইকোনমিক জোনের ব্যাপারে বিদেশীরা অনেক আগ্রহী। অন্যান্য জায়গায় যাতে বিদেশী প্রতিষ্ঠানগুলো বিনিয়োগ বাড়ায়, সেজন্য চট্টগ্রাম চেম্বার কাজ করে যাচ্ছে। বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে। তারাও আমাদের এখানে বিনিয়োগে আগ্রহী। বিদেশীদের ব্যবসা করার প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং বন্দরে পণ্য লোড-আনলোডের কাট টাইমও কমাতে হবে।

ব্যবসায়ীরা বলেছেন, বছর ঘুরতে না ঘুরতেই চট্টগ্রামে বিদেশীসহ দেশী বিনিয়োগ কমে গেছে অনেক, যা চট্টগ্রামের অর্থনীতির জন্য আশাব্যঞ্জক নয়। চট্টগ্রামের যে ব্যবসায়িক সংগঠন আছে, তাদের এ বিনিয়োগ কীভাবে বাড়ানো যায় সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।