English Version
আপডেট : ৯ জানুয়ারি, ২০১৯ ১৮:২৬
সূত্র:

বছরের শুরুতেই বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম

বছরের শুরুতেই বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম

চলতি বছরের শুরুতেই অস্থির হয়ে উঠেছে ভোজ্যতেল, চিনি, ডাল, মসলাসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের বাজার। গত সপ্তাহের শেষ সময় থেকে পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে বাড়তে শুরু করে এসব পণ্যের দাম।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে পণ্যের চাহিদা বাড়লেও ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে আমদানি কমে যাওয়ায় বাজারে এ অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।

খাতুনগঞ্জের পাইকারি দোকান ও আড়তগুলোয় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েক দিনে পাইকারি পর্যায়ে বেশির ভাগ ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে ভোজ্যতেল, চিনি, ডাল ও মসলাজাতীয় পণ্যের দাম বেড়েছে সবচেয়ে বেশি।

গত এক সপ্তাহে পাইকারি বাজারে পাম অয়েলের দাম বেড়েছে মণপ্রতি (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) প্রায় ১২০ টাকা। তিনদিন ধরে বাজারে প্রতি মণ পাম অয়েল ২ হাজার ১০ থেকে ২ হাজার ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা নির্বাচনের আগে ছিল ১ হাজার ৯০০ টাকা। একই সময়ে সুপার পাম অয়েলের দামও মণপ্রতি ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। নির্বাচনের আগে প্রতি মণ সুপার পাম ২ হাজার টাকায় বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ১০০ টাকায়।

তেলের পাশাপাশি বেড়েছে চিনির দামও। বর্তমানে বাজারে প্রতি মণ চিনি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৬৮০ টাকায়, যা গত সপ্তাহের শুরুতে ১ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সে হিসাবে মণে প্রায় ৮০ টাকা বেড়েছে পণ্যটির দাম।

খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক জামাল হোসেন বলেন, নির্বাচন শেষ হওয়ায় দেশব্যাপী ব্যবসা-বাণিজ্য চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। বাজারে পণ্য বিক্রি গত এক-দুই মাসের চেয়ে অনেক বেড়েছে। কিন্তু এ সময়ে সরবরাহ কমে যাওয়ায় কিছুটা বেড়ে গেছে প্রায় সব পণ্যের দাম। সরবরাহ বাড়লে অল্প সময়ের মধ্যেই দাম আবার স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে আশা করছি।

বাজারে ডালজাতীয় কয়েকটি পণ্যের দামও অতিরিক্ত বেড়ে গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে মুগ ডালের দাম। গত কয়েক দিনে পণ্যটির দাম বেড়েছে মণে ৬৭০ টাকা। নির্বাচনের আগে প্রতি মণ মুগ ডালের দাম ৩ হাজার ২৫০ টাকার নিচে থাকলেও বর্তমানে একই মানের মুগ ডাল বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৯২০ টাকায়। একই সময়ে মসুরের দামও বেড়েছে। গতকাল বাজারে প্রতি মণ দেশী মসুর বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার ৬০ থেকে ৩ হাজার ৯০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগেও প্রতি মণ ২ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

গত সপ্তাহে প্রতি মণ নেপালি মসুর ২ হাজার ৭৯০ টাকায় বিক্রি হলেও চলতি সপ্তাহে একই মানের মসুরের দাম বেড়ে ৩ হাজার ৯০ টাকায় দাঁড়িয়েছে।

গত সপ্তাহ পর্যন্ত পাইকারিতে প্রতি মণ খেসারি বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৩৭৫ টাকায়। গতকাল একই মানের খেসারি দেড় হাজার টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া মটর ডালের দামও মণে প্রায় ১১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

নির্বাচনের আগে অস্ট্রেলিয়া থেকে আমদানিকৃত ছোলা বিক্রি হয়েছে প্রতি মণ ২ হাজার ৪৫০ টাকায়। এখন তা মণে প্রায় ২০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ডালজাতীয় পণ্য আমদানিকারক আবু নোমান বলেন, কয়েক মাস ধরে ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও অন্যান্য সংকটের কারণে পণ্য আমদানি আগের চেয়ে কিছুটা কমে গেছে।

মসলাজাতীয় কয়েকটি পণ্যের দামও বেড়েছে। এর মধ্যে অস্বাভাবিক বেড়েছে এলাচের দাম। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭৫০ টাকায়, যা নির্বাচনের আগে ১ হাজার ৬৭০ টাকায় বিক্রি হতো।

মসলাপণ্যের মধ্যে জিরার দামও অতিরিক্ত বেড়েছে। গত এক সপ্তাহে পণ্যটির দাম বেড়েছে মণে ৩৭০ টাকা। তবে মিষ্টি জিরার দাম বেড়েছে মণে প্রায় ১ হাজার ৫০ টাকা। গতকাল বাজারে প্রতি কেজি জিরা ৩২০ ও মিষ্টি জিরা ১৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। যদিও গত সপ্তাহে প্রতি কেজি জিরা ৩১০ ও মিষ্টি জিরা ১০৭ টাকায় বিক্রি হতো।

বেড়েছে জয়ত্রির দামও। বর্তমানে পাইকারিতে প্রতি কেজি জয়ত্রি ১ হাজার ৫২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১ হাজার ৪৭০ টাকা।

মসলাজাতীয় অন্যান্য পণ্যের মধ্যে এক সপ্তাহ ধরে বাড়তির দিকে বাদাম, হলুদ ও ধনিয়ার দামও। এ সময়ে প্রতি মণ বাদামে ৯৩০ টাকা, হলুদে ১৫০ ও ধনিয়ায় ৩৭০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে বলে জানা গেছে।