English Version
আপডেট : ৩ নভেম্বর, ২০১৮ ১৩:৪৯

প্রণয়ন করা হচ্ছে নতুন রফতানি নীতিমালা

অনলাইন ডেস্ক
প্রণয়ন করা হচ্ছে নতুন রফতানি নীতিমালা

সহজ শর্তে ঋণ প্রদান, শিল্পনগরী প্রতিষ্ঠাসহ রফতানিমুখী শিল্পের জন্য বিভিন্ন ধরনের সুবিধা রেখে প্রণয়ন করা হচ্ছে নতুন রফতানি নীতিমালা। এছাড়া সরকারের বাস্তবায়নাধীন ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকায় রফতানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠার জন্য ভূমি বরাদ্দসহ অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও কমপ্লায়েন্স প্রতিপালনে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথাও এ নীতিমালায় বলা হয়েছে।

এক সময় পোশাক ছিল রফতানির একমাত্র উপাদান। পরে এর সাথে যুক্ত হয় চামড়াজাত পণ্য। নতুন নীতিমালায় চামড়া শিল্পের কাঁচামাল সহজলভ্য করা এবং ‘সেন্ট্রাল বন্ডেড ওয়্যার হাউস’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়ার কথা বলা হয়েছে। একইসাথে কমপ্লায়েন্ট পাদুকা ও চামড়াজাত শিল্প খাতের সংশ্লিষ্ট কারখানাগুলোকে সবুজ রং শ্রেণিভুক্ত করা হবে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে ইটিপি’র মাধ্যমে তরল ও কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অধীনে পরিবেশবান্ধব উপায়ে আমদানীকৃত চামড়া প্রক্রিয়াকরণের ক্ষেত্রে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী পুনরায় রফতানির অনুমতি দেওয়া হবে।

রফতানিতে গতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে আধুনিক আইসিডি নির্মাণ, চট্টগ্রাম বন্দরের জেটি সম্প্রসারণ, কনটেইনার টার্মিনালে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি প্রতিস্থাপন করে অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হবে। একইসাথে রফতানি শিল্পের ফেব্রিকস, স্যাম্পল, কাঁচামাল দ্রুত সরবরাহের জন্য বন্দর বা বিমানবন্দরে পৃথক উইন্ডো স্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে। এছাড়া প্লাস্টিকের তৈরী পণ্য, কাঁকড়া, কাজু বাদাম, চামড়াজাত পণ্য, সিনথেটিক জুতা, অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট রফতানিযোগ্য পণ্যের কাতারে যুক্ত করা হয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, নতুন নীতিমালায় রফতানি পণ্যে প্রণোদনামূলক সুবিধার জন্য মূল্য সংযোজন হার ৪০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০ শতাংশ করার প্রস্তাব আছে। এছাড়া শতভাগ রফতানিমুখী শিল্প কারখানা স্থাপনের জন্য সব ধরনের যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্ক সুবিধা দেওয়া হবে।

জানা গেছে, রফতানি নীতিমালায় দেশের হিমায়িত চিংড়ি ও মাছ প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, আমদানি নির্ভরতা কমানোর জন্য দেশে তুলার উৎপাদন বাড়ানো , বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্লাস্টিক শিল্প নগরী প্রতিষ্ঠা, তথ্য-প্রযুক্তি খাতকে অ্যাক্সপোর্ট ডেভলপমেন্ট ফান্ডে অন্তর্ভুক্ত করা এবং আইসিটি সেক্টরে কর্মরত মিড লেভেল ম্যানেজমেন্টকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়ার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

নতুন রফতানি নীতিতে তৈরি পোশাক খাতের জন্য ‘নীটপল্লী’সহ অন্যান্য বিশেষায়িত শিল্পাঞ্চলে গড়ে ওঠা পোশাকপল্লীর অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও ইউটিলিটি সুবিধাসহ বর্জ্য ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৯০০ কোটি মার্কিন ডলার। জুলাই-সেপ্টেম্বর মাসে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৯৩৩ কোটি ডলার। তার বিপরীতে আয় হয় ৯৯৪ কোটি ডলার। শুধু সেপ্টেম্বরে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৭৪ কোটি ডলার। আয় হয়েছে ৩১৪ কোটি ডলার।

এই ৩ মাসে নিটওয়্যার খাত থেকে রফতানি আয় এসেছে ৪২০ কোটি ডলার। আর ওভেন খাতে রফতানি আয় এসেছে ৩৯৮ কোটি ডলার। পোশাকের দুই খাতে এসেছে ৮১৯ কোটি ডলার। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৪২ কোটি ডলার। তিন মাসে পোশাক খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এছাড়া এ খাতে রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ।

শিল্পপণ্য খাতে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৯০৩ কোটি ডলার। তার বিপরীতে আয় হয় ৯৫১ কোটি ডলার।