English Version
আপডেট : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ১১:২৭

বাড়ছে গ্যাসের দাম

অনলাইন ডেস্ক
বাড়ছে গ্যাসের দাম

শিগগিরই গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী।

শনিবার তিনি জানান, এই সপ্তাহের শেষে বা আগামী সপ্তাহের শুরুতে এই ঘোষণা আসতে পারে।

এর আগে গতবছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সর্বশেষ গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়। দুই ধাপে গড়ে ২২ দশমিক ৭৩ শতাংশ গ্যাসের দাম বাড়ায় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। প্রথম ধাপ ১ মার্চ এবং দ্বিতীয় ধাপ ১ জুন থেকে কার্যকর হয়।

এদিকে বিইআরসি জানায়, এই সপ্তাহের শেষের দিকে বা আগামী সপ্তাহের শুরুতেই আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্রাহক বাদে অন্য খাতে ব্যবহৃত গ্যাসের বর্ধিত দাম ঘোষণা করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘দুই-চার দিনের মধ্যেই গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা আসতে পারে। তবে গ্যাসের দাম যেন সহনীয় পর্যায়ে থাকে, সে বিষয়ে বিইআরসিকে বলা হয়েছে।’

এর আগে গত ১১ জুন থেকে গ্যাসের দাম বাড়ানোর বিষয়ে গণশুনানি শুরু করে কমিশন। এই বছরের মার্চ মাসে গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলো গড়ে ৭৫ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব পাঠিয়েছিল।তবে আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়নি তারা। কমিশন গঠিত কারিগরি কমিটি এবার ১৪৩ ভাগ গ্যাসের দাম বাড়ানোর সুপারিশ করে।

  বিইআরসির সদস্য আব্দুল আজিজ খান বলেন, ‘সরকার এলএনজি আমদানির শুরুতে গ্যাসের ওপর থাকা সব ধরনের কর প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে কোম্পানিগুলোকে এ সংক্রান্ত চিঠি দেওয়া হবে। ওই চিঠি আমাদের কাছে এলে আমরা বর্ধিত গ্যাসের দাম ঘোষণা করবো।’

বিইআরসির একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী শুনানি শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে দামের বিষয়ে ঘোষণা দিতে হয় কমিশনকে। এ হিসাবে আগামী সপ্তাহে ৯০ দিন শেষ হচ্ছে। এর মধ্যেই দাম বাড়ানোর ঘোষণা আসবে।’

এর আগে সব বিতরণ কোম্পানিই তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) সঙ্গে সমন্বয় করে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। সে হিসেবেই কমিশনের মূল্যায়ন কমিটি গ্যাসের দাম বাড়ানোর সুপারিশ করে। গত ১৮ আগস্ট প্রথমবারের মতো পাইপলাইনে এলএনজি সরবরাহ শুরু হয় দেশে। আপাতত শুধু চট্টগ্রামে এই গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে।পাইপ লাইনের কাজসহ সব ধরনের নিরাপত্তা প্রস্তুতি শেষ হলে জাতীয় গ্রিডেও সরবরাহ শুরু হবে এলএনজি। এজন্য গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব মূল্যায়ন করে কতটুকু এলএনজি এলে দাম কত বাড়ানোর প্রয়োজন হতে পারে, তা নির্ধারণ করে রেখেছে কমিশন। এই দাম বাড়ানোর পর যে ঘাটতি থাকবে, তা পূরণের জন্য ভর্তুকির প্রস্তাব দেবে তারা।

কমিশন দাম মূল্যায়নের সময় জানিয়েছিল, এলএনজি পাইপলাইনে যুক্ত হলেই ছয় হাজার কোটি টাকার ঘাটতি তৈরি হবে। আর সেই ঘাটতি পূরণ করতে হলে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ গ্যাসের দাম বাড়াতে হবে। তবে এখাতে সরকার ভর্তুকির পরিমাণ যদি আরও বাড়ায়, তাহলে গ্যাসের দাম এর চেয়ে কম বাড়ালেও হবে।

বিইআরসির একজন কর্মকর্তা জানান, এলএনজি আমদানির ফলে ঘাটতির পরিমাণ প্রাথমিকভাবে হিসাব করা হয়েছে ৬ হাজার কোটি টাকার মতো। এই ঘাটতি পূরণ করতে গেলে গ্যাসের দাম প্রায় ৬০ ভাগ বাড়ানোর প্রয়োজন। একবারে গ্যাসের দাম এত বাড়ানো ঠিক হবে না বলেই এ খাতে তিন হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। সে হিসাবে গ্যাসের দাম ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ বাড়তে পারে। তবে যদি আরো কম বাড়ানো হয় অর্থাৎ ২০ থেকে ১৫ শতাংশের নিচে হয়, তাহলে ভর্তুকির পরিমাণ আরো বাড়াতে হবে।