English Version
আপডেট : ২৪ জুন, ২০১৮ ১৪:০৯

বিদেশে বিনিয়োগে নীতিমালা হচ্ছে

অনলাইন ডেস্ক
বিদেশে বিনিয়োগে নীতিমালা হচ্ছে

বর্তমানে দেশে চলছে ডলারের চরম সংকট। যাতে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমছে। সেই সাথে প্রবাসী ও রপ্তানি আয়ও খুব বেশি বাড়ছে না। তবে প্রতিনিয়ত বাড়ছে আমদানি ব্যয়। এ অবস্থায় দেশের ব্যবসায়ীদের বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ উন্মুক্ত করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

এ জন্য 'ক্যাপিটাল অ্যাকাউন্ট ট্রানজেকশন গাইডলাইন- ২০১৮' নামে একটি নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে। শিগগির তা অনুমোদনের জন্য অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় উত্থাপন করা হবে।   জানা গেছে, প্রস্তাবিত নীতিমালায় রয়ে গেছে নানা ফাঁকফোকর। তাই এই নীতিমালা অনুমোদন হলে বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে বড় ধরনের সংকট তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অনেকে।

বৈদেশিক মুদ্রা কীভাবে ব্যবহার হবে, তা 'বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৪৭' স্পষ্ট করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, বিদেশে কী ধরনের বিনিয়োগের অনুমোদন দেওয়া যাবে, সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করে বাংলাদেশ ব্যাংক তা ঠিক করতে পারবে।

বিদেশে বিনিয়োগসংক্রান্ত একটি নীতিমালা করতে ৮ জুন বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। এরপরই অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ জন্য কারও মতামতও নেয়নি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এব্যাপারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এমনিতেই দেশ থেকে টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রাও চাপের মুখে পড়েছে, রিজার্ভও কমছে। এ সময়ে এ ধরনের নীতিমালা নেওয়ার আগে অনেক গবেষণা হওয়া প্রয়োজন।   এ ধরনের নীতিমালা অনুমোদনের আগে দেশের ব্যাংকগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে। কঠোর তদারকির মধ্যে রাখতে হবে এসব বিনিয়োগকে। ব্যবসায়ীরা যদি এখনই বিনিয়োগে আগ্রহী হন, তাহলে তো দেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করতে পারেন। তাতে রপ্তানি বাড়তে পারে। না বুঝে এমন বিনিয়োগের সুযোগ দিলে দেশীয় মুদ্রা দুর্বল হয়ে পড়বে, যার প্রভাব পড়বে পুরো অর্থনীতিতে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, ৬ জুন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে হয়েছে ৩ হাজার ২৪৬ কোটি ডলার, এক বছর আগেও যা ৩ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের বেশি ছিল। গত জুলাই-মার্চ সময়ে আগের চেয়ে আমদানি বেড়েছে সাড়ে ২৪ শতাংশ, তবে রপ্তানি বেড়েছে মাত্র সাড়ে ৬ শতাংশ।

যার ফলে বেড়ে গেছে ডলারের দাম। সংকট কাটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিনিয়ত ডলার বিক্রি করছে। ২০১৭ সালের জুনে প্রতি ডলারের বিনিময়মূল্য ছিল ৮০ টাকা ৫৯ পয়সা, এখন যা বেড়ে হয়েছে ৮৩ টাকা ৭০ পয়সা।   অর্থ মন্ত্রণালয় যে নীতিমালার খসড়া করেছে তাতে দেখা গেছে, সেখানে বিদেশে বিনিয়োগের অনুমোদন দেওয়ার পর তা তদারকির কোনো কৌশল নেই। আবার বিদেশে অর্থ নেওয়ার পর কেউ মুনাফা ও মূলধন দেশে না আনলে কোন আইনে বিচার হবে তাও সুনির্দিষ্ট করা নেই। কোন ধরনের প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসা বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ পাবে, তারও সুস্পষ্ট উল্লেখ নেই।

তাই এই নীতিমালার আওতায় বিদেশে বিনিয়োগ হলে তা অপব্যবহারের সুযোগ থাকবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিদেশে বিনিয়োগ করতে চাইলে আগ্রহী কোম্পানির রপ্তানি প্রত্যাবাসন কোটা (ইআরকিউ) হিসাব এবং তাতে পর্যাপ্ত অর্থ থাকতে হবে।