English Version
আপডেট : ১৫ জুন, ২০১৬ ১৭:৪৬

মুন্সীগঞ্জে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ৩৫০ একর জমি অধিগ্রহণ, ব্যয় ৫০৪ কোটি টাকা

অনলাইন ডেস্ক
মুন্সীগঞ্জে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ৩৫০ একর জমি অধিগ্রহণ, ব্যয় ৫০৪ কোটি টাকা

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ৩৫০.২২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। এজন্য ৫০৪ কোটি ২৩ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এ প্রকল্পটিসহ ৭টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।

এগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৩৩২৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ২৯৭১ কোটি ৭৬ লাখ এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৩৫৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা ব্যয়ের পরিকল্পনা রয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ জুন) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। ল্যান্ড অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফর ইমপ্লিমেন্টেশন অব গজারিয়া ৩৫০ মেগাওয়াট কোল ফায়ার্ড থারমাল পাওয়ার প্ল্যান্ট নামের এ প্রকল্পের বিষয়ে একনেক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল বলেন, প্রকল্পটি বিদ্যুৎ বিভাগের আওতায় বাস্তবায়ন করবে রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (আরপিসিএল)।

প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের মাধ্যমে মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের ষোলআনী ও দৌলতপুর মৌজায় ৩৫০.২২ একর জমি অধিগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। স্থানটি মেঘনা নদীর তীরে অবস্থিত। বিদ্যুৎ বিভাগের প্রশাসনিক অনুমোদন নিয়ে এরই মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কাছে অধিগ্রহণ প্রস্তাব জমা দেয়া হয়েছে।

অনুমোদিত প্রকল্পের মাধ্যমে ভূমি উন্নয়ন, ভূমি সুরক্ষায় বাঁধ নির্মাণ, বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য বৈদ্যুতিক সুবিধাদি স্থাপন এবং প্রকল্পের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের পুনর্বাসন করা হবে।

তিনি জানান, এর পরই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য হাতে নেয়া হবে আলাদা একটি প্রকল্প। একনেক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিস্তারিত তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

এ সময় পরিকল্পনা সচিব তারিক-উল-ইসলাম, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. শামসুল আলম, আইএমইডি’র সচিব ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী ও কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য এএন সামসুদ্দিন আজাদ চৌধুরীসহ পরিকল্পনা কমিশনের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, একনেকে ঢাকার চারপাশে অবস্থিত নদীগুলোর নাব্যতা ও পানি সরবরাহ ঠিক রাখতে মাস্টার প্লান তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এজন্য তিনি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে যৌথভাবে কাজ করতে বলেছেন।

নদীগুলোতে যাতে শিল্প ও মানব বর্জ্য না ফেলা হয় সেজন্য বর্জ্য শোধনাগার স্থাপন এবং বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধার প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় কমিয়ে নিয়ে আসারও নির্দেশ দেন।

তিনি আরও জানান, যমুনা নদী থেকে পানি এনে শুষ্ক মৌসুমে বুড়িগঙ্গাসহ ঢাকা মহানগরীর চারপাশের নদীগুলোর পানি প্রবাহ ঠিক রাখা হবে। তাছাড়া এসব নদী দখলমুক্ত করার পাশাপাশি নদীর ওপর নির্মিত ২২টি ব্রিজের মধ্যে ৪টি ব্রিজ ভেঙে ফেলা হবে। কোন কোন ব্রিজ ভাঙা হবে সে প্রসঙ্গে তিনি কিছু বলেননি।

অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে বুড়িগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধার প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১১২৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নসহ নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ, ব্যয় ১০২৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। মোবাইল গেইম ও অ্যাপ্লিকেশনের দক্ষতা উন্নয়ন, ব্যয় হবে ২৮১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। মিলিটারি ফার্ম আধুনিকায়ন প্রকল্প, ব্যয় ১১৩ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

হরিশপুর বাইপাস মোড় হতে বনবেলঘরিয়া বাইপাস মোড় পর্যন্ত নাটোর শহরের প্রধান সড়কের মিডিয়ানসহ পেভমেন্ট প্রশস্তকরণ, ব্যয় ৫৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকা এবং ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় মেঘনা নদীর ভাঙন হতে শাহবাজপুর গ্যাস ফিল্ড রক্ষা (২য় পর্যায়) প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ২১৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অনুমোদন দেয়া প্রকল্পটি প্রসঙ্গে মন্ত্রী জানান, প্রকল্পের আওতায় ২০৪ কিলোমিটার রাস্তা উন্নয়ন, ২৬৭ কিলোমিটার ড্রেন, ১১৯ কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণসহ আনুষঙ্গিক কাজ করা হবে।