১৩টি প্রস্তাব অনুমোদন

১৩টি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। রোববার (১২ জুন) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ক্রয় কমিটির এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে আখাউড়া থেকে লাখসাম ডুয়েল গেজ ডাবল রেল লাইন নির্মাণ ও বিদ্যমান রেল লাইনকে ডুয়েলগেজে রূপান্তরের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যৌথভাবে এ কাজের ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছে সিটিএম জেভি। ট্যাক্স-ভ্যাটসহ এতে মোট ব্যয় হবে ৩ হাজার ৯৩৬ কোটি ২২ লাখ টাকা। এর মধ্যে ঠিকাদার কোম্পানিকে দিতে হবে ৩ হাজার ৪৭৩ কোটি টাকা।
তিনি জানান, বৈঠকে পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর পরিচালনার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়নের আওতায় ‘কাজল-তেতুঁলিয়া নদীপথ ড্রেজিং’ এবং ‘বেনাপোল ও বুড়িমারি স্থল বন্দর উন্নয়নে সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্পে’র আওতায় বেনাপোল স্থল বন্দর উন্নয়নে (প্যাকেজ -০২) পৃথক দুটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে ‘কাজল-তেতুঁলিয়া নদীপথ ড্রেজিং’-এর কাজটি সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে করবে বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী। এতে ব্যয় হবে ২৩৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। আর বেনাপোল স্থল বন্দর উন্নয়ন (প্যাকেজ -০২)-এর কাজটি যৌথভাবে পেয়েছে মনিকো-এটিসি। এতে ব্যয় হবে ৮৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।
অতিরিক্ত সচিব জানান, বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের তিনটি (ময়মনসিংহ, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম) জোনের জন্য দেড় লাখ করে মোট সাড়ে ৪ লাখ প্রিপেইড বৈদ্যুতিক মিটার ক্রয়ের তিনটি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তিনটি প্রস্তাবেই মিটার সরবরাহের কাজটি পেয়েছে চীনা প্রতিষ্ঠান হেক্সিং ইলেকট্রিক্যাল কোম্পানি। এতে মোট ব্যয় হবে ২২০ কোটি ২১ লাখ টাকা।
তিনি জানান, এছাড়া পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণের মাধ্যমে ১৫ লাখ গ্রাহক সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ৪ হাজার কিলোমিটার কণ্ডাক্টর, এসিএসআর, বেয়ার ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এটি সরবরাহের কাজটি পেয়েছে ‘ইস্টার্ণ ক্যাবলস লিমিটেড’। ট্যাক্স-ভ্যাটসহ এতে ব্যয় হবে ২৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা।
‘পল্লী বিদ্যুৎ বিতরণ সিস্টেমের ক্ষমতা বর্ধন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৫২ হাজার ৪৭৮টি বৈদ্যুতিক খুঁটি (এসপিসি পোল) ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ১৬৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। ২৬ হাজার ২৩৯টি করে দুটি লটে এটি ক্রয় করা হবে। প্রথম লটের সরবরাহকারী হচ্ছে যৌথভাবে ‘মেসার্স ক্যাসেল কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড’, ‘কনফিডেন্টস পাওয়ার লিমিটেড’ ও ‘মেসার্স রয়্যাল গ্রীণ প্রোডাক্ট’। প্রথম লটে ব্যয হবে ৮৩ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
দ্বিতীয় লটে সরবরাহের কাজটি পেয়েছে যৌথভাবে ‘মেসার্স দাদা ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড’, মেসার্স কনটেক কনস্ট্রাকশন লিমিটেড’, মেসার্স টিএসপি পাওয়ার লিমিটেড’ ও মেসার্স পোলস অ্যান্ড কংক্রীট লিমিটেড’।দ্বিতীয় লটে ব্যয হবে ৮৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
অতিরিক্ত সচিব জানান, বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আবাসন পল্লী এলাকায় অভ্যন্তরীণ স্যানিটারি, বৈদ্যুতিক সংযোগ ও গ্যাসলাইন স্থাপনসহ ১ হাজার ২৫০ বর্গফুট আয়তনের ৬ ইউনিট বিশিষ্ট ২০ তলা আবাসিক ভবন (ভবন নং-১) নির্মাণের ঠিকাদার নিয়োগের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যৌথভাবে এ কাজটি পেয়েছে ‘মেসার্স সাজিন এন্টারপ্রাইজ’ এবং ‘জামাল অ্যান্ড কোম্পানি’। এটি নির্মাণে ব্যয় হবে ৯০ কোটি ২৬ লাখ ৮৪ হাজার টাকা।
একই প্রকল্পের আওতায় ৮৫০ বর্গফুট আয়তনের ৬ ইউনিট বিশিষ্ট ২০ তলা আবাসিক ভবন (ভবন নং-১ ও ২) নির্মাণে ঠিকাদার নিয়োগের আরেকটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যৌথভাবে এ কাজটি পেয়েছে এমএসিএল-এমসিএল। এতে মোট ব্যয় হবে ১২৩ কোটি টাকা।
অতিরিক্ত সচিব জানান, এছাড়া বৈঠকে তিনটি ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- ‘পানি ভবন নির্মাণ’ (১ম পর্যায়) প্রকল্পের প্রথম প্যাকেজের (৩য় তলা পর্যন্ত) প্রথম ভেরিয়েশন অর্ডার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এটি নির্মাণ করছে কুশলী নির্মাতা লিমিটেড। ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুযায়ী নির্মাণ ব্যয় ১৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা বেড়ে মোট ব্যয় দাঁড়াবে ৬৭ কোটি ৩ লাখ টাকা।
বিশ্বব্যাংক ও নেদারল্যান্ড সরকারের অর্থায়নে ‘পানি ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়নাধীন সিরাজগঞ্জ হার্ড পয়েন্টের বিভিন্ন স্থানে মোট ১ হাজার ৯৩৪ মিটার শক্তিশালীকরণ (প্যাকেজ নং ডব্লিউ-০৪) কাজের ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ কাজটি বাস্তবায়ন করছে ‘আবদুল মোনেম লিমিটেড’। ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুযায়ী নির্মাণ ব্যয় ৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা বেড়ে মোট ব্যয় দাঁড়াবে ৮০ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
‘টেকনিক্যাল এসিস্টেন্স ফর সাব-রিজিওন্যাল রেল ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট প্রিপারেটরী ফ্যাসিলিটি’ শীর্ষক কারিগরি সহায়তা প্রকল্পের অধীনে ‘কনসালটেন্সী সার্ভিস ফর ফিজিবিলিটি স্টাডি অ্যান্ড ডিটেইলড ডিজাইন ফর রিজিওন্যাল কো-অপারেশন অ্যান্ড ইন্টিগ্রেশন প্রজেক্ট’ (আরসিআইপি) সেবার প্রথম ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুযায়ী পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে অতিরিক্ত দিতে হবে ৩২ কোটি ৫৪ লাখ ৬৬ হাজার টাকা।