English Version
আপডেট : ২৯ মার্চ, ২০১৬ ১৮:২১

২ হাজার উদ্যোক্তা দেউলিয়া হতে যাচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
২ হাজার উদ্যোক্তা দেউলিয়া হতে যাচ্ছে

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি চিঠিতে দেশের দুই হাজার প্রকল্পের উদ্যোক্তা দেউলিয়া হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে ইক্যুইটি এন্টারপ্রেনার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ নামের একটি সংগঠন।

সংগঠনের সভাপতি শেখ আতিকুর বাবু বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন প্রকল্পে সমূলধন সহায়তার অর্থ ছাড়সহ সকল কার্যক্রম স্থগিত করার একটি চিঠির আদেশের কারণে দেশের প্রায় দুই হাজার প্রকল্পের উদ্যোক্তা দেউলিয়া হতে যাচ্ছে।

মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ তথ্য দেন। ইক্যুইটি এন্টারপ্রেনার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

আতিকুর রহমান বাবু বলেন, দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নেয়ার জন্য সরকার ২০০০ সালে ইক্যুইটি এন্টারপ্রেনারশিপ ফান্ড (ইইএফ) নামে একটি উদ্যোগ নেয়। এ উদ্যেগের মাধ্যমে নবীন, উদ্যমী ও মেধাবীদের বিনিয়োগে উৎসাহ দেয়া হয় এবং আশা করা হয়। নবীন উদ্যোক্তরা কৃষিভিত্তিক ও আইসিটির ৩৩টি খাতে বিনিয়োগ করে দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নেবেন। এতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শিল্পায়নের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের উন্নয়ন ঘটবে।

এ উদ্যোগের মাধ্যমে মৎস্য হ্যাচারি, মৎস্য চাষ, একদিনের মুরগীর বাচ্চা উৎপাদন, অটোমেটিক রাইস মিল, অর্কিড চাষ, মাছ-মুরগীর খামার উৎপাদনসহ ৩৩টি খাতে সরকার তথা বাংলাদেশ ব্যাংক শর্ত সাপেক্ষে সমূলধন সহায়তা দেয়া শুরু করে।

শর্তের মধ্যে রয়েছে, যেকোনো উদ্যোক্তা মোট প্রকল্প ব্যয়ের ৫১ ভাগ নিজে বহন করলেই কেবল তাকে বাকি ৪৯ ভাগ অর্থ সহায়তা দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই মূলধন সহায়তা নিয়ে একজন নবীন উদ্যোক্তা স্বাবলম্বী হবেন এবং চতুর্থ বছর থেকে ব্যাংকের নেয়া সমূলধনের অর্থ কিস্তিতে ফেরত দিতে শুরু করবেন। সে মোতাবেক সরকার ২০০০-২০০১ অর্থ বছরের বাজেটে সর্বপ্রথম এখাতে ১শ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়।

এতে উৎসাহী হয়ে দেশের হাজার হাজার নবীন উদ্যোক্তা ইক্যুইটি এন্টারপ্রেনারশিপ ফান্ড (ইইএফ) থেকে সমূলধন সহায়তা নিয়ে স্বাবলম্বী হতে শুরু করেন। কিন্তু বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে এ ফান্ডে সমূলধন সহায়তা বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার সমূলধন সহায়তার এ প্রকল্প ফের চালু করে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে এই উদ্যোগে আরও বড় পরিসরে সমূলধন সহায়তা দিতে থাকে।

এ তহবিলের আওতায় এ পযন্ত ১৮০০টি প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। এর মধ্যে ৭৮০টি প্রকল্পের উদ্যোক্তাকে সমূলধন দিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে উদ্যোক্তারা সমূলধনের কিস্তির টাকা হিসেবে ২শ ৫০ কোটি টাকা সরকারকে ফেরতও দিয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় গত ৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক আইসিসিবিকে এক চিঠির মাধ্যমে এই সমূলধন সহায়তার অর্থ ছাড়সহ সকল কার্যক্রম স্থগিত করে দেয়।

এতে উদ্যোক্তরা ৫১ ভাগ অর্থ নিজে খরচের পরও মাছের পোনা কিনতে পারছেন না। পোনা কিনে অর্থের অভাবে মাছের খাবার দিতে পারছেন না। অনেকে গাভী কিনে খাবার দিতে পারছেন না। মেশিন স্থাপনের পর চলতি মূলধনের অভাবে উৎপাদনে যেতে পারছেন না অনেক নবীন উদ্যেক্তা। ১৮০০টি অনুমোদিত প্রকল্পের মধ্যে ১১৫টির উদ্যোক্তা সব শর্ত পূরণ করে সমূলধন সহায়তা পাওয়ার আশায় প্রহর গুনছেন।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সহ-সভাপতি জামসেদ আলম, সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার মাহমুদ, যুগ্ম-সম্পাদক শঙ্কর বিশ্বাস, কোষাধ্যক্ষ গৌতম বসুসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নবীন উদ্যোক্তা উপস্থিত ছিলেন।