নিজের ও মায়ের নামে মনোনয়নপত্র নিলেন জাহাঙ্গীর আলম

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বহুল আলোচিত মো. জাহাঙ্গীর আলম বুধবার মেয়র পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তিনি তার মায়ের নামেও একটি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। মনোনয়নপত্র সংগ্রহের মাধ্যমে তিনি নির্বাচনী মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস দিলেন।
বুধবার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে জাহাঙ্গীর আলম বিষয়টি নিজেই নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা বলছেন, তফসিল ঘোষণার পর থেকে তার ওপর কর্মী-সমর্থকদের ব্যাপক চাপ তৈরি হয়েছিল নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন ইউনিটের কর্মী-সমর্থকরা তার বাড়িতে ভিড় করছেন। তিনি তাদের প্রার্থী হওয়ার নিশ্চয়তা দিয়ে আশ্বস্ত করে বলেছেন, তিনি আরো একবার পরীক্ষা দিতে প্রস্তুত। প্রথম থেকেই দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার আভাস পাওয়া গেলেও মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের মধ্য দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত হলো।
জাহাঙ্গীর আলমের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জনগণের সহানুভূতি থাকায় তিনি নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ নিতে যাচ্ছেন। তবে দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় দল থেকে কোনো চাপ এলে বিকল্প হিসেবে তার মাকে নিয়েই মাঠে নামবেন কর্মী-সমর্থকরা। সে জন্য তার মা জায়েদা খাতুনও নির্বাচনে অংশ নিতে সম্মত হয়েছেন।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি আরেকবার পরীক্ষা দিতে প্রস্তুত।
তিনি জানান, নির্বাচনে সাধারণ জনগণকে যে ওয়াদা দিয়েছিলেন, তিন বছরের মধ্যে তাকে বরখাস্ত করে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়। বাকি কাজ শেষ করতে তিনি চ্যালেঞ্জ নিচ্ছেন।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এ লক্ষ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নিজে মনোনয়ন ফরম তুলেছি। এ ছাড়া মায়ের নামেও মনোনয়ন ফরম তুলেছি।
বৃহস্পতিবার তিনি নিজে ও তার মা দুজনের মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপে জানা গেছে, যদি জাহাঙ্গীর আলম শেষ পর্যন্ত থেকে যান তবে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে। এতে আজমত উল্লাহ খানের নৌকা, স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম ও জাতীয় পার্টির লাঙ্গলের মধ্যে একটি জমজমাট নির্বাচন হবে।
তফসিল আনুযায়ী বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিন। আগামী ৩০ এপ্রিল মনোনয়ন পত্র যাচাই-বাছাই, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ৮ মে এবং প্রতীক বরাদ্দ হবে ৯ মে।
ইভিএমের মাধ্যমে ২৫ মে অনুষ্ঠিত হবে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন।
বিএনপির কেউ এখন পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেনি।
এদিকে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাবেক সচিব এমএম নিয়াজ উদ্দিন, গণফ্রন্টের আতিকুল ইসলাম আতিক, স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন মন্ডল এবং মো. হারুন অর রশীদ।
এ ছাড়া বুধবার পর্যন্ত মেয়র পদে ১৩, সংরক্ষিত নারী আসনে ৯৮, সাধারণ ওয়ার্ডে ৩৪০ প্রার্থীসহ মোট ৪৫১ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। এর মধ্যে জামা দেন মেয়র পদে ৪, সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে ৬৪ ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৯১ প্রার্থীসহ মোট মোট ২৫৯ জন।
বুধবার বিপুলসংখ্যক কর্মী-সমর্থক নিয়ে জেলা শহরের বঙ্গতাজ মিলনায়তনে অবস্থিত রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান প্রার্র্থীরা। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঁচজন করে প্রতিনিধি প্রার্থীর সঙ্গে প্রবেশ করেন।
এ সময় রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম মনোনয়নপত্র গ্রহণ করে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান।
নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সরকার ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মেয়র প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিজয়ের ব্যাপারে তিনি আশাবাদী।
আওয়ামী লীগ থেকে দলীয়ভাবে অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খানকে নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন দেওয়া হয়।