জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুরকারী ও তাদের উস্কানিদাতাদেরকে উদ্দেশ্য করে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, চুপ কইরা সহ্য করি বইলা দুর্বল ভাইবো না। শান্তিকামী বাঙালি এক ৭ই মার্চের ভাষণে সশস্ত্রবাহিনী হয়ে গেছে, গেরিলা যুদ্ধ করছে। চুপ কইরা বইসা থাকি, সহ্য করি। শুধু দেশের বৃহত্তর স্বার্থে, সংবিধানের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে। নগর ভবনের মেয়র হানিফ অডিটোরিয়ামে বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আয়োজিত ৪৯তম বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে তিনি এই সতর্ক বার্তা দেন।

ডিএসসিসি মেয়র বলেন, শান্তিকামী বাঙালি এক ৭ মার্চের ভাষণে সশস্ত্রবাহিনী হয়ে গেছে, গেরিলা যুদ্ধ করছে। আমরা বাপ গেরিলা যুদ্ধ করছে রণাঙ্গনে। মুক্তিযোদ্ধা সংগঠন করছে, ট্রেনিং দিছে, নিজে রণাঙ্গনে যুদ্ধ করছে। সুতরাং আমাদেরকে দুর্বল ভাইবো না। চুপ কইরা বইসা থাকি, সহ্য করি। শুধু দেশের বৃহত্তর স্বার্থে, সংবিধানের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে।   বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙা প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার তাপস বলেন, জিগাইলাম, ভাস্কর্য কেন ভাঙছো ভাই? বলে- ইসলাম। আরে ভাই, ইসলাম কি তোমার একার? মুসলমান কি তুমি একা? খৎনা কি তোমার একার হইছে, আমার হয় নাই? আরে, তোমার বাপ তোমারে পিটাইয়া মাদ্রাসায় পাঠাইছে আর আমি ঘরে বইসা আলিফ, বা, তা, ছা, জিম, হা শিখছি। তোমারে জোর করছে বইলা তুমি শিখছ। আর আমি স্বইচ্ছায় শিখছি। তো তুমি আমার চাইতে বড় মুসলমান কোত্থেকে হইলা? আমি তিনটা ভাষা শিখছি- বাংলা, ইংরেজি ও আরবি- স্বইচ্ছায়। তুমি তো শিখছ পিটান খাইয়া। তাইলে তুমি বড় মুসলমান হইলা কিভাবে?

তিনি আরও বলেন, কথায় কথায় তারা ইসলামের কথা কয়। আরে, একটা আকাম করবে তারপর হাদিস আর কোরআন নিয়া আসবে। হাদিস আর কোরআন কি তুমি একা পড়ছ? তুমি না হয় কয়েকটা আয়াত মুখস্ত করছ। আর কোরআন শরীফ আমিও কয়েক দফা পড়ছি- তেলাওয়াত শেষ করছি, অর্থ শেষ করছি, তরজমা শেষ করছি। হ্যাঁ মুখস্ত করিনি। তুমি মুখস্থ করছ, তোমারে পিটাইয়া মুখস্ত করাইছে। কইতে থাকবি, কইতেই থাকবি, তোতাপাখির মতো কইতে থাকবি। নাইলে তোরে বেত দিয়া পিটামু, কান ধইরা উঠবস করামু। তুমি সেজন্য মুখস্থ করছ, আর আমি সারা বিশ্বের সব কিছু শেখার জন্য তোমার মতো মুখস্থ করি নাই। এই মুখস্ত শিক্ষার জন্য, পড়ার জন্য তুমি আমার চাইতে বড় মুসলমান হয়ে যাবা, আলেম হয়ে যাবা, এটা হলো?

তার পরিবারের ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, আমার পরিবারের দুজন আধ্যাত্মিক ব্যক্তি এই ভূখণ্ডে পদার্পণ করেছিলেন। ইসলামের জন্য, ইসলামের প্রচারের জন্য এই ভূখণ্ডে এসেছিলেন। আমার পরদাদা দরবেশ শেখ আব্দুল আউয়াল। ইসলামের জন্য জীবন দিয়ে চলে গেছেন। শেখ বোরহান উদ্দিন, তিনি ছিলেন বিজ্ঞ আলেম, ফরিদপুর এলাকায় আধ্যাত্মিক জগতের স্বনামধন্য আলেমদের একজন। আর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর যদি ঐশ্বরিক ক্ষমতা না থাকতো তাহলে জাতিকে স্বাধীনতা দিতে পারত না। আর দুই আয়াত মুখস্ত কইরা তুমি হইয়া গেলা বড় আলেম! বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙো?

নিজ অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ আমাদের জন্য গর্বের উল্লেখ করে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, বাঙালি জাতি আমি স্বাধীন করেছি গোলামী করার জন্য না। আজকে আমরা কারো গোলাম না। নিজ টাকায় বানায়। সেটা ৮ হাজার কোটি টাকা লাগুক, ২২ হাজার কোটি টাকা লাগুক, এক লাখ কোটি টাকা লাগুক, আমরা নিজ অর্থে দেবো। গর্বের জায়গায় আসতে হবে যে, আমরা পারি।