English Version
আপডেট : ২৮ জানুয়ারি, ২০১৮ ১০:১৪

খালেদাকে ছাড়া ভোটে যাবে না বিএনপি

অনলাইন ডেস্ক
খালেদাকে ছাড়া ভোটে যাবে না বিএনপি

দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বাইরে রেখে জাতীয় নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। শনিবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ ব্যাপারে দলটির নির্ধারকরা একমত হয়েছেন বলেও জানা যায়।

খালেদা জিয়ার মামলার রায় 'তড়িঘড়ি' করাকে 'সরকারি ষড়যন্ত্র' দাবি করে এর বিরুদ্ধে দেশবাসীকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি। বৈঠকের ফাঁকে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় দেখে কর্মসূচি ঘোষণা করবে বিএনপি। রায় ঘোষণার পর তা রাজনৈতিক ও আইনগতভাবে মোকাবেলারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। নেতাদের মতামত নিয়ে রায়-পরবর্তী করণীয় চূড়ান্ত করবে দলটি।

আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। মামলার ভবিষৎ রায় নিয়ে আইনি ও রাজনৈতিক পর্যালোচনা এবং করণীয় নির্ধারণে ওই বৈঠক ডাকা হয়। শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় শুরু হয়ে পৌনে ১২টায় বৈঠক শেষ হয়। আজ রোববার জোটের সঙ্গে বৈঠক করবেন খালেদা জিয়া।

বৈঠক সূত্র জানায়, সরকারের তড়িঘড়ি দেখে মনে হচ্ছে খালেদা জিয়াকে মামলায় সাজা দিয়ে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে সরকার নীলনকশা করেছে। এ ক্ষেত্রে চেয়ারপারসনকে সাজা দেয়া হলে নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে সবাই মত দেন। এ সময় এক নেতা জানতে চান, সরকার যদি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে নির্বাচন দিতে চায় তখন আমরা কী করব?

এ সময় সবাই মত দেন, ওই সময়ের পরিস্থিতি দেখে তখন সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। রায় দেখে কর্মসূচি ঘোষণা করা উচিৎ হবে বলে বৈঠকে সবাই এক মত হন। রায় বিপক্ষে গেলে জামিন না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকার পক্ষে মত দেন সবাই।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, খালেদা জিয়ার মামলা নিয়ে শীর্ষ নেতারা নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন। এ ক্ষেত্রে সাংগঠনিক প্রস্তুতির পাশাপাশি নেতাকর্মীদের সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। রায়ে নেতিবাচক কিছু হলে তাৎক্ষণিক সারা দেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখানোর কথা বলেছেন কোনো কোনো নেতা।

জানা গেছে, মামলার রায়ের তারিখকে সামনে রেখে দলের নির্বাহী কমিটির আরেকটি সভা ডাকা হতে পারে। সেখানে উদ্ভূত পরিস্থিতির আলোকে দলীয় নেতাদের পরামর্শ নেয়া হবে। খালেদা জিয়ার সাজা হলে দল কিভাবে চলবে কিংবা নির্বাচনে যাওয়া উচিত হবে কিনা- এ ব্যাপারে তাদের পরামর্শ নেয়া হবে।

খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে বৈঠকে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ছাড়াও স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

প্রেস ব্রিফিংয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এই রায়ের তারিখ ঘোষণা কেন্দ্র করে গোটা জাতি আজ উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ। আমরা মনে করি, এটা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংসের জন্য এবং সবার অংশগ্রহণে ইনক্লুসিভ ইলেকশন নষ্ট করার জন্য। এটি একটি গভীর ষড়যন্ত্র বলে আমরা মনে করি।

কোনো কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে কিনা- প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, এটা জানাব রায় ঘোষণা হওয়ার পর। পুরো বিষয় আমরা জানাব রায় ঘোষণা হলেই। তিনি আরও বলেন, ২৫ জানুয়ারি বিশেষ জজ আদালতে বিবাদীপক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য হঠাৎ সমাপ্তি করে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদের উপস্থিত প্রবীণ আইনজীবীদের মতে, এমন ঘটনা শুধু অস্বাভাবিক ও অপ্রত্যাশিত নয়, রহস্যজনকও।