বিএনপির মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে যারা

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর বেশি দেরি নেই। তাই আগামী এই নির্বাচনকে ঘিরে নির্বাচন কমিশন (ইসি) তার ঘোষিত কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী কার্যক্রম শুরু করেছে।
এদিকে, বিভিন্ন বিষয়ে মত পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও রাজনৈতিক দলগুলোও তাদের নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেছে। ইতিমধ্যে প্রার্থীরাও নিজ নিজ আসনে নির্বাচনী প্রস্তুতি হিসেবে ভোটের মাঠে নেমে পড়েছে।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা দেশের অন্যতম বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও দলের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নির্বাচনকে সামনে রেখে আসন ভিত্তিক সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকাও করা হয়েছে। ৩০০ আসনের জন্য ৯ শতাধিক প্রার্থী প্রস্তুত আছে। তবে এই তালিকার সংযোজন-বিয়োজন হতে পারে। এই নির্বাচনে তরুণ ও ত্যাগী নেতাদের প্রার্থীদের প্রাধান্য থাকবে বলেও জানিয়েছেন তারা।
বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতা বিডি২৪লাইভকে জানান, বর্তমান সরকার আমাদের দলের হেভিওয়েট প্রার্থীদের মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে নির্বাচনের অযোগ্য করার ষড়যন্ত্র করছে। যার ফলে প্রায় প্রতিটি আসনেই একাধিক প্রার্থী রাখা হচ্ছে।
এদিকে, মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও তাদের এলাকাভিত্তিক গণসংযোগ এবং নেতাকর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছেন। বিভিন্ন পোস্টার, ব্যানার, প্লাকার্ড দিয়ে এলাকাতে নিজেদের প্রার্থীতার জানানও দিচ্ছেন তারা।
জানা গেছে, রাজধানীসহ ঢাকা জেলার ৪৯টি থানাকে ২০টি আসনে ভাগ করা হয়েছে। জাতীয় সংসদের ৩০০টি আসনের মধ্যে আসন নং ১৭৪ থেকে ১৯৩ পর্যন্ত আসনগুলো ঢাকা জেলার নির্বাচনী এলাকা ধরা হয়েছে। এই তালিকা অনুযায়ী ঢাকা জেলার ১০টি সংসদীয় আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হতে পারেন যারা।
ঢাকা- ১ (দোহার ও নবাবগঞ্জ): বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান ও ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এবং নবাবগঞ্জ উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান খন্দকার আবু আশফাক, জিয়া নাগরিক ফোরাম (জিনাফ) কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার।
ঢাকা- ২ (কেরানীগঞ্জ- কামরাঙ্গীরচর): বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান ও কামরাঙ্গীরচর থানা বিএনপির সভাপতি মনির হোসেন।
ঢাকা- ৩ (কেরানীগঞ্জ): দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় অথবা তার মেয়ে বিএনপির প্রান্তিক জনশক্তি উন্নয়ন বিষয়ক সহ-সম্পাদক অপর্ণা রায়।
ঢাকা- ৪ (শ্যামপুর): ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক তানভীর আহমেদ রবিন ও জাসাস ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি জাহাঙ্গীর শিকদার।
ঢাকা- ৫ ( ডেমরা-যাত্রবাড়ী): সাবেক এমপি সালাউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি নবীউল্লাহ নবী, দলের কেন্দ্রীয় গণশিক্ষা-বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া। তবে ইতিমধ্যে এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া।
এলাকাবাসীর ধারণা, স্মার্ট বক্তব্য, সামাজিক আচরণ, সবার সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে সু-সম্পর্ক থাকায় সকলের নজর কেড়েছেন তিনি। বিএনপি নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণে সবার দাবি আগামী সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষের প্রতীকে সবাই শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়াকেই দেখতে চান।
ঢাকা-৬ (সূত্রাপুর-কোতোয়ালি): বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, দলের ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা অথবা, তার ছেলে ইশরাক হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার ও যুবদল দক্ষিণের সাবেক সভাপতি হামিদুর রহমান হামিদ।
ঢাকা-৭ (লালবাগ-চকবাজার): বিএনপির প্রয়াত সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুর স্ত্রী ও দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহ-সভাপতি নাসিমা আক্তার কল্পনা ও বিএনপির যুব বিষয়ক সহ-সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ।
ঢাকা-৮ (রমনা): দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক আলী ফালু ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেল।
ঢাকা-৯ (মুগদা-সবুজবাগ): জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, মহিলা দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি শামসুল হুদা ও মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব।
ঢাকা-১০ (ধানমণ্ডি-হাজারীবাগ): দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান অথবা, তার জামাতা বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম ও কেন্দ্রীয় নেতা শেখ রবিউল আলম (রবি)।