English Version
আপডেট : ১০ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:৪৫

বিএনপিতে স্নায়ুযুদ্ধ বন্ধে ফখরুল গয়েশ্বরের উদ্যোগ

বিএনপিতে স্নায়ুযুদ্ধ বন্ধে ফখরুল গয়েশ্বরের উদ্যোগ

দীর্ঘ পাঁচ বছর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব পালন শেষ গত ৩০মার্চ ভার মুক্ত হয় দলটির মহাসচিব হন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে বিএনপির মহাসচিব পদে ফখরুলের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন দলটির স্থানী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। এনিয়ে দুই নেতার স্নায়ু চাপ ছিল। এর মধ্যেই ১৯ মার্চ বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল এর ১১ দিন পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে দলটির মহাসচিব মনোনীত করা হয়। এরপর দুই নেতার আর কোনো সাক্ষাৎ হয়নি।

বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পাশে গয়েশ্বর রায়ের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গিয়ে উপস্থিত হন মির্জা ফখরুল। এ সময় নতুন মহাসচিবকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান গয়েশ্বর। এর পর বিএনপির এই দুই শীর্ষ নেতা একসঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন। মধ্যাহ্নভোজে গয়েশ্বর রায়ের বাসা থেকে আনা খাবার পরিবেশন করা হয়। মধ্যাহ্নভোজে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব মো. শাহজাহান, সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আবুল খায়ের ভুঁইয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। আনন্দঘন পরিবেশে ওই মধ্যাহ্নভোজে দুই নেতা তাদের মধ্যকার স্নায়ু চাপ কাটিয়ে উঠেছেন বলে মনে করছেন বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে গয়েশ্বর রায়ের কার্যালয় ত্যাগ করেন বিএনপির নতুন মহাসচিব।

গয়েশ্বর রায়ের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, বিএনপির রাজনীতিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সত্যিই একজন ত্যাগী নেতা। তিনি দলের জন্য অনেক ত্যাগ শিকার করেছেন। মধ্যাহ্নভোজে দুই নেতা আগামীদিনে বিএনপির সাংগঠনিক ভিত্তি আরো শক্ত করতে একে অপরকে সব রকমের সহযোগীতার আশ্বাস দেন। 

দলের সহ তথ্য গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবীব বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে দলে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি প্রায় ৮৮টি মামলার আসামী, জেল খেটেছেন। তার বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ নেই। ম্যাডামের কথার অবাধ্য হন না, সব কিছু মিলে উনার প্রতি দলের কর্মীদের একটি সহানুভূতি ছিলো। এছাড়া সুশীল সমাজও উনাকে পছন্দ করেন।’ ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর বিএনপির সর্বশেষ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছিল। দীর্ঘ নয় বছর পর ১৯ মার্চ বিএনপির জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। তার ১১ দিনের মাথায় দীর্ঘ পাঁচ বছর পর ভারমুক্ত হন ফখরুল।  

এদিকে দুই নেতার এক সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ অংশ নেয়াকে স্বাগত জিনিয়েছেন তৃণমূলের অনেক নেতা। গুলিশান থানা বিএনপি শান্ত বলেন, দলের মহাসচিব পদে প্রতিযোগীতা থাকবে। তাই বলে রাগ করে বসেথাকলে চলবে না। গয়েশ্বর দাদা বিএনপির জন্য অনেক করেছেন। তেমনি মির্জা ফখরুল ও। এই দুই নেতার অবদান অনেক। তাই তারা যদি তাদের অর্জিত অভিজ্ঞতা দিয়ে বিএনপির সাংগঠনিক শক্তি আরো বৃদ্ধি করেন সে ক্ষেত্রে দল এবং তারা উভয়েই লাভবান হবে। 

উল্লেখ্য, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব নেওয়ার পর সাতবার জেল খেটেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আর মহাসচিব হয়ে ঘুরে এলেন জেলগেট পর্যন্ত। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে রয়েছে ৮৪ মামলা। ৩৫টি মামলায় তার বিরুদ্ধে চার্জশিটও গ্রহণ করা হয়েছে।