English Version
আপডেট : ২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ১২:০৬

স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস নেই বিএনপির

নিজস্ব প্রতিবেদক
স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস নেই বিএনপির

জাতীয় সংসদে ১/১১ এর কুশিলবদের বিষয়ে তথ্য প্রকাশ ও তাদের বিচারের আওতায় আনার জন্য তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন সংসদ সদস্যরা। রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, বিএনপি ও তাদের দোসরা এদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না। তাই এদের স্বাধীন দেশে রাজনীতি করার অধিকার নেই।

রোববার রাতে ১০ম জাতীয় সংসদের ৯ম অধিবেশনে এ আলোচনা চলাকালে প্রথমে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও পরে ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বি মিয়া সভাপতিত্ব করেন। 

আলোচনায় অংশ নেন- বেসরকারি বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মো. নাসিম, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ, সংসদ সদস্য আফম বাহাউদ্দিন নাসিম, খোরশেদ আলম, মো. জাহিদ হাসান রাসেল, তালুকদার মোহাম্মদ ইউনুস, নিজাম উদ্দিন ও ড. শামসুল হক ভূইয়া। 

ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর বক্তব্যে বেসরকারি বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এক এগারোর কুশিলবদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানান। এর পরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিমও একই দাবি করে বলেন, ‘এক এগারোর কুশিলবদের বিচার হওয়া উচিৎ। দ্রত একটি কমিশন গঠন করে এদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।’

সংসদে মেনন বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী এখনো যে অপরাধ করছে তাতে তাদের রাজনীতি করার অধিকার নেই। একইভাবে বিএনপি জামায়াতকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে যেভাবে রাজনীতি করার সুযোগ দিচ্ছে তাতে বিএনপির রাজনীতিও প্রশ্নবিদ্ধ।’

মেনন বিএনপিকে জামায়াত ত্যাগ করে স্বাধীন সার্বভৌমত্ব গ্রহণ করে সঠিক রাজনীতি করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘জামায়াতের নেত্রী খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমান ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে এবং সেসময় যে ষড়যন্ত্র করেছেন এবং পরে তারা যে ভুল করেছেন তার খেসারত জনগণ কেন দেবে?’

গত পৌর নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে মেনন বলেন, ‘আমার দলের অনেক প্রার্থীর ওপরও অন্যায় করা হয়েছে। কমিশনকে আমরা জানিয়েছি। কিন্তু কমিশন তা কানে নেয়নি। ওই নির্বাচনে মানুষ ইসির কারণে অনেকটা আস্থা সংকটে ভুগেছে। এবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যেন ইসি কোনো পক্ষপাতিত্ব না করে। এই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হলে তা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হবে।’

ডেইলী স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের প্রসঙ্গে মেনন বলেন, ‘এই সম্পাদকের স্বীকারোক্তি থেকে আমরা বুঝতে পারি- কীভাবে ১/১১ তে রাজনীতিবিদদের চরিত্র হনন করা হয়েছে।’ 

সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিম বলেন, ‘অন্য কোনো দেশের কাছ থেকে আমরা গণতন্ত্রের ফর্মুলা শিখতে চাই না। আমরা কাদের কাছ থেকে গণতন্ত্র শিখবো? যারা আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়েছে তাদের কাছ থেকে? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নে কাজ করে চলেছেন। কোনো অন্তবর্তী নির্বাচন নয়, ২০১৯ সালে সংসদ নির্বাচন হবে। তার আগে কোনো মতেই নয়।’ 

তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসা মানে হাওয়া ভবন থেকে রাষ্ট্র পরিচালনা করা। জনগণ আজ বুঝেছেন, বিএনপিকে ভোট দিলে উন্নয়নের গতি বন্ধ হয়ে যাবে। দেশ জঙ্গিরাষ্ট্রে পরিণত হবে। তাই আগামী নির্বাচনও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে হবে এবং আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসবে।’

এসময় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু মাহফুজ আনামের সমালোচনা করে বলেন, ‘ভুল স্বীকার করলেই দোষ খণ্ডায় না। তিনি তার ভুল স্বীকার করলেন, কিন্তু তার পরে সম্পাদকরা তার পক্ষে বিবৃতি দিলেন। সম্পাদকদের যেমন আমাদের সমালোচনা করার অধিকার রয়েছে, তেমনি আমাদেরও (এমপি) অধিকার রয়েছে তাদের সমালোচনা করার। এতে গণমাধ্যমের অধিকার খর্ব করা হয় না। স্বাধীনতা ধ্বংস করা হয় না।’

তিনি আরো বলেন, ‘বিএনপি এখন ইতিহাসের ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। খালেদা জিয়া এখন জঞ্জাল আকড়ে ধরার চেষ্টা করছেন। তারা গণতন্ত্রের কথা বলেন, কাদের হাতে গণতন্ত্র দেব, আগুন সন্ত্রাসীদের হাতে? যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল তাদের হাতে? জামাত-শিবিরের হাতে? এদের কোনো ছাড় নয়। এ দেশের মাটিতেই এদের বিচার হবে।’