English Version
আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ১৭:৩৯

বিএনপির গঠনতন্ত্রে যুক্ত হচ্ছে ইউনূসের তত্ত্ব

নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপির গঠনতন্ত্রে যুক্ত হচ্ছে ইউনূসের তত্ত্ব

দলের আসন্ন জাতীয় কাউন্সিলে গঠনতন্ত্রে বড় ধরনের সংশোধন আনছে বিএনপি। দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির আলোকে এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। গঠনতন্ত্রে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান এবং নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রবর্তিত ক্ষুদ্রঋণের তত্ত্ব সংযোজন করবে বিএনপি। দলের ভেতর বিরোধিতা থাকলেও 'জাতীয়তাবাদী যুব মহিলা দল' নামে আরেকটি সহযোগী সংগঠন গঠনতন্ত্রে যুক্ত করার কথা ভাবছে দলটি। একই সঙ্গে দলে এক নেতার এক পদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির পাশাপাশি একাধিক বিষয়ভিত্তিক উপকমিটিও গঠন করা হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, এবার বিএনপির কাউন্সিলে গঠনতন্ত্রকে আরও

যুগোপযোগী করা হবে। এ লক্ষ্যে বেশ কিছু নতুন বিষয় সংযোজন ও বিয়োজন হবে। বিশেষ করে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিএনপির দৃঢ় অবস্থান দলের গঠনতন্ত্রে সংযোজন হতে পারে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়েও এ ব্যাপারে বিএনপি অঙ্গীকারবদ্ধ।

এরই মধ্যে দলের স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য তরিকুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে গঠনতন্ত্র সংশোধনী উপকমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তার নেতৃত্বাধীন কমিটি কাজ করছে। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দিকনির্দেশনায় তিনি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো যুক্ত করে গঠনতন্ত্র সংশোধনের খসড়া প্রণয়ন করবেন। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদও সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, বিএনপির গঠনতন্ত্র সংশোধনের কাজ চলছে। সংশোধনীতে সুপারিশ করতে তৃণমূল নেতাদের কাছেও প্রস্তাব চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সূত্র জানায়, এরই মধ্যে তৃণমূল নেতারা নানা প্রস্তাবনা পাঠাতে শুরু করেছেন।

সূত্র জানায়, বর্তমানে বিএনপির গঠনতন্ত্রের 'উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য' শীর্ষক ২ নম্বর ধারার (খ) উপধারায় আছে, 'ঐক্যবদ্ধ এবং পুনরুজ্জীবিত জাতিকে অর্থনৈতিক স্বয়ম্ভরতার মাধ্যমে সাম্রাজ্যবাদ, সম্প্রসারণবাদ, নয়া-উপনিবেশবাদ, আধিপত্যবাদ ও বহিরাক্রমণ থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করা।' এ ধারার শেষ শব্দ 'বহিরাক্রমণের' আগে 'সন্ত্রাসবাদ' শব্দটি যুক্ত করা হবে।

গঠনতন্ত্র সংশোধনের সঙ্গে জড়িত বিএনপির নীতিনির্ধারক কয়েকজন নেতা জানান, বাংলাদেশ বর্তমানে জঙ্গিদের অভয়ারণ্য হিসেবে বিশ্ববাসীর কাছে পরিচিতি পেতে যাচ্ছে। সন্ত্রাস একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে চায় বিএনপি। তাদের অন্যতম লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থাকবে সন্ত্রাসীদের তৎপরতা থেকে দেশকে মুক্ত করা। পাশাপাশি বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে প্রতিবেশী কোনো দেশকে হুমকির মুখে না রাখার ব্যাপারে সতর্ক থাকবে বিএনপি।

বিএনপির প্রভাবশালী এক নেতা জানান, বিএনপি ভবিষ্যতে ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশের মাটি কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে ব্যবহার করতে দেবে না। আগামীতে ক্ষমতায় এলে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিএনপির 'জিরো টলারেন্স' দেশি-বিদেশিদের দেখাতেই কার্যত গঠনতন্ত্রে 'সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের' বিষয়টি যুক্ত করতে যাচ্ছে।

সূত্র জানায়, নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূসের সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সম্পর্কে টানাপড়েন চলায় বিএনপি তার সঙ্গে সম্পর্ক নিবিড় করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য থেকে ইউনূসের 'ক্ষুদ্রঋণ' তত্ত্বটি গ্রহণ করতে যাচ্ছে দলটি। এবারের কাউন্সিলে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটিতে 'ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ক সম্পাদক' বা 'এনজিও বিষয়ক সম্পাদক' নামে নতুন একটি পদ সৃষ্টি করা হবে।