English Version
আপডেট : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ১৬:১৭

'লতিফ সিদ্দিকীর ক্ষেত্রে এত উৎসাহ দেখালেন না কেন?'

নিজস্ব প্রতিবেদক
'লতিফ সিদ্দিকীর ক্ষেত্রে এত উৎসাহ দেখালেন না কেন?'

ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি যারা সোচ্চার তাদের একহাত নিয়েছেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড.মিজানুর রহমান। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে এক অনুষ্ঠান শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি আশ্চর্য হয়ে যাই, একজন সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের নিয়ে যখন দেখি কোন কোন বিদেশি সংস্থাও সরকারকে বলে যে যেসব মামলা হয়েছে সেগুলো তুলে নাও। ব্যক্তি মামলা করলে সেগুলো প্রত্যাহার করে নেয়ার ক্ষমতা কি রাষ্ট্র কিংবা সরকারের আছে ? তাদের কথা শুনলে মনে হবে রাষ্ট্র কোন ব্যক্তিকে দিয়ে মামলাটি করিয়ে নিচ্ছে। এই ধারণা তো অমূলক। ’

‘যারা এখন এত উৎসাহ দেখাচ্ছেন, একই উৎসাহ লতিফ সিদ্দিকীর ক্ষেত্রে দেখালেন না কেন ? তিনিও তো একটি বক্তব্য দিয়েছিলেন। সেই বক্তব্য নিয়ে দ্বিমত থাকতে পারে। কিন্তু তখন তাকে যেভাবে ‍অপদস্থ করা হয়েছিল সেটা নিয়ে আপনারা প্রশ্ন তুললেন না কেন ?’ বলেন মিজানুর রহমান।

২০১৪ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে টাঙ্গাইল সমিতির এক অনুষ্ঠানে তৎকালীন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা লতিফ সিদ্দিকী হজ নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য দেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা প্রকাশের পর শোরগোল ওঠে। বিভিন্ন মহলের দাবির মুখে অক্টোবরেই লতিফ সিদ্দিকীকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেন শেখ হাসিনা। একই মাসে তাকে দল থেকেও বহিষ্কার করা হয়। দলীয় পদ ও মন্ত্রিত্ব খোয়ানোর পর লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় মামলা হতে থাকে।

এসব মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি হয়। দেশে ফিরে কারাবন্দি লতিফ সিদ্দিকী মুক্তি পান গত বছরের সেপ্টেম্বরে।

মাহফুজ আনামের নাম উল্লেখ না করে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, জনৈক সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলার হিড়িক পড়েছে।

এক্ষেত্রে রাষ্ট্র কিন্তু কোন মামলা দায়ের করেনি। ব্যক্তি উদ্যোগে অতি উৎসাহী হয়ে কেউ কেউ মামলা করছে। ব্যক্তিরা যখন মামলা করে সেখানে তো রাষ্ট্র কিংবা সরকারের কোন হাত থাকেনা। আইনগত প্রতিকার চাওয়া তো ব্যক্তির অধিকার।

‘তবে কথা বলার স্বাধীনতা ব্যাহত করার জন্য কেউ যদি এসব মামলা করে থাকেন তার নিন্দা জানাই। ’

‘একটি বিশেষ সময়ে পত্রিকায় কিছু অসত্য, বিকৃত তথ্য দেয়া হয়েছে। পত্রিকার সম্পাদক, উনি ক্ষমা চেয়েছেন। এটা উনার মহত্ত্ব। উনার প্রশংসা করছি।

কিন্তু বিকৃত তথ্যের কারণে যারা ক্ষতিগ্রস্ত ও হয়রানির শিকার হয়েছেন তাদের প্রতিকার কী ? এই বিষয়টা আইনের উপরই ছেড়ে দেয়া উচিৎ। ’ বলেন মিজানুর রহমান।

সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ‘দুর্নীতির খবর’ সরবরাহ করেছিল জানিয়ে গত ৬ ফেব্রুয়ারি এক টেলিভিশন আলোচনায় মাহফুজ আনাম বলেন, যাচাই না করে ডেইলি স্টারে তা প্রকাশ করা ছিল ‘বিরাট ভুল’।

ওই সময় দেশের শীর্ষ রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অসংখ্য মামলা হয়, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ বহু রাজনীতিবিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। মাহফুজ আনামের এই স্বীকারোক্তির পর সারাদেশে বিভিন্ন এলাকায় তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা শুরু হয়। এ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে শ’খানেক মামলা হয়েছে।

এর আগে বেসরকারি চিটাগং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির আইন অনুষদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান। এরপর তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন।

--thebengalitimes.com