English Version
আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ১০:৩৭

আন্দোলন থেকে সরে আসছে বিএনপি; সংগঠন গোছানোর আহ্বান খালেদার

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্দোলন থেকে সরে আসছে বিএনপি; সংগঠন গোছানোর আহ্বান খালেদার

 

বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে আন্দোলন থেকে সরে এসে সংগঠন শক্তিশালী করতে মনোযোগী হওয়ার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, এখন আন্দোলন বড় কথা নয়, এখন সংগঠন জোরদার করতে হবে। জনগণকে বুঝতে হবে, ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। অন্যায়, দুর্নীতি, জুলুম-অত্যাচারের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ করতে হবে। এই প্রতিবাদ হতে হবে শান্তিপূর্ণভাবে।

তাঁতী দলের ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গুলশানের কার্যালয়ে সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন খালেদা জিয়া। বর্তমানে দেশের অবস্থা ভীষণ খারাপ দাবি করে তিনি বলেন, গণতন্ত্র না থাকলে কোনো ভালো কিছু হতে পারে না, উন্নতি হতে পারে না। আজ গ্রামে-গঞ্জে কাজ নেই। তাঁতীরা- কৃষকরা কষ্টে আছেন। তারা পণ্যের মূল্য পাচ্ছে না। অন্যদিকে সব দ্রব্যের দাম বেড়ে গেছে। দেশে শুধূ জুলুম, খুন, গুম, দুর্নীতি চলছে।

পুলিশ বাহিনীর কর্মকান্ড নিয়ে বেগম জিয়া বলেন, এখন পুলিশ বাহিনী বলছে, আমরাই সরকার, আমরাই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছি। তাহলে এই পুলিশ বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করবে কে? তারা (সরকার) পুলিশকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। ফ্রি স্টাইলে পুলিশ চাঁদাবাজি করছে, মানুষ ধরে নিয়ে যাচ্ছে, মুক্তিপণ আদায় করছে, গুলি করছে, হত্যা করছে। অহরহ ঘটনা ঘটছে। মানুষের আজ কোনো নিরাপত্তাই নেই।

দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করে আসা বিএনপির নেত্রী সরকারকে অবৈধ দাবি করে বলেন, এই সরকার গায়ের জোরে সব কিছু করছে। তাদের কোনো বৈধ্যতা নেই। মিথ্যা মামলা দিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

কোনো ধর্মের মানুষই এখন ‘নিরাপদে নেই’- মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, আজকে মুসলমানরা নামাজ পড়তে পারেন না ঠিক মতো। বিভিন্ন জায়গায় হামলা করা হয়। একসঙ্গে বসে হয়ত দোয়া কালাম পড়বেন, সেখানেও বলা হচ্ছে তারা ষড়যন্ত্র করছে।হিন্দুরা ঠিকমতো ধর্মীয় কর্মকাণ্ড করতে পারছে না। হিন্দুদের মন্দির ভেঙে ফেলা হচ্ছে, সম্পত্তি দখল করে নেওয়া হচ্ছে, মেয়েদের ওপর অত্যাচার করা হচ্ছে। খ্রিস্টান ও বৌদ্ধদের অবস্থাও একই।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, মানুষের কথা বলার অধিকার নেই। আমরা কেউ কথা বলতে পারছি না। খবরের কাগজ সব কিছু লিখতে পারে না। টেলিভিশন সব কিছু দেখাতে পারে না, জোড়াতালি দিযে সংবাদ দেখায়। কেবল তাই নয়, আজ মানুষ সুবিচার পাচ্ছে না। আমরা বিচার পাচ্ছি না। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই। বিচারকরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছেন না। তাদের নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে- আজ এটা পরিষ্কার বোঝা যায়।

বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, দেশের মানুষ ভালো নেই। ভালো শুধু আওয়ামী লীগাররা। তিনারা খাচ্ছেন, ঘুমাচ্ছেন, টাকা বানাচ্ছেন। বাড়ি করছেন বিদেশে। শান্তিতে আছেন, নিরাপদে আছেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ছাড়া আর কেউ শান্তিতে থাকতে পারছে না অভিযোগ করে তিনি বলেন, শান্তিতে থাকতে হলে সকলকে আওয়ামী লীগ করতে হবে। কেন? বাংলাদেশ একটা বহুদলীয় গণতন্ত্রের দেশ। কেন সবাই ওই দল করবে? আমার মনে হয়, উপরওয়ালা একজন সবই দেখছেন- আরেকটু কর, আরেকটু কর, তারপর হয়ত তিনি লাগাম ধরবেন।