English Version
আপডেট : ২৪ জানুয়ারি, ২০১৬ ১২:৩৮

পঞ্চদশ সংশোধনী হচ্ছে মৃত বাকশালের প্রেতাত্মা : খালেদা জিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক
পঞ্চদশ সংশোধনী হচ্ছে মৃত বাকশালের প্রেতাত্মা : খালেদা জিয়া
ফাইল ছবি

 

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীকে 'মৃত বাকশালের প্রেতাত্মা' আখ্যায়িত করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, 'এই সংশোধনীর মাধ্যমে একদলীয় দুঃশাসন কায়েম করে কথা, চিন্তা, বিবেক, মত প্রকাশ, সংগঠন ও সমাবেশের স্বাধীনতা তথা সামগ্রিকভাবে মানুষের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে।' 'গণতন্ত্র হত্যা দিবস' উপলক্ষে রোববার এক বাণীতে তিনি একথা বলেন।

গণমাধ্যমে পাঠানো বাণীতে খালেদা জিয়া বলেন, 'পঞ্চদশ সংশোধনীতে প্রধানমন্ত্রীকে একচেটিয়া ক্ষমতা দিয়ে মূলত গণতন্ত্রকে সমাধিস্থ করে তার ওপর একক কর্তৃত্ত্ববাদী নির্দয় শাসনের ইমারত নির্মাণ করা হয়েছে।' পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে বহুত্ত্ববাদীতা বিনষ্ট করে সামাজিক স্থিতি ও ভারসাম্য নষ্ট করা হয়েছে— এমন অভিযোগ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, 'তাই এখন সর্বত্রই ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর দখলবাজদের দখলের জয়জয়কার চলছে। অবনতিশীল আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে দেশের মানুষের শান্তি, নিরাপত্তা, আশ্রয়, পেশা, ব্যবসা-বাণিজ্য সবকিছু এখন নৈরাজ্যের করাল গ্রাসে নিপতিত।' তিনি বলেন, 'সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনী আরেকটি কালো অধ্যায় এবং এই সংশোধনীর প্রণেতাগণ জনগণ, রাষ্ট্র ও গণতন্ত্রের শত্রুপক্ষ।'

খালেদা জিয়া বলেন, "১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারী তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করার লক্ষ্যে বহুদলীয় গণতন্ত্রের গলাটিপে হত্যা করে একদলীয় সরকার ব্যবস্থা 'বাকশাল' কায়েম করে। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী মানুষের বাক, ব্যক্তি, চলাচল ও সমাবেশের স্বাধীনতাসহ সকল মৌলিক অধিকার হরণ করে। দেশবাসীর দীর্ঘদিনের সংগ্রামের ফলে অর্জিত মানুষের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে তারা ভূলুণ্ঠিত করে সমাজে এক ভয়াবহ নৈরাজ্যের ঘন অমানিশা ছড়িয়ে দেয়।'
 
তিনি বলেন, 'এমনি এক দুঃসময়ে পঁচাত্তরের ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতার সম্মিলিত শ্রোত-ধারায় শহীদ জিয়া রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। স্বেচ্ছাচারীতার লৌহ কপাটের ভেতর থেকে তিনি গণতন্ত্রকে অর্গলমুক্ত করেন। পুনরায় শুরু হয় বহুদলীয় গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা। নিশ্চিত হয় মানুষের মৌলিক মানবিক অধিকার।'
 
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, 'বহু চক্রান্তের চোরাগলি দিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে এখন আবারও অবৈধভাবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী জোট বাকশালী চেতনায় নতুন করে অসংখ্য প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত গণতন্ত্রকে ভূগর্ভে সমাহিত করে ফেলেছে। এদের ঐতিহ্যই হচ্ছে গণতন্ত্র ও মানুষের মৌলিক অধিকার বিপন্ন করা।' তিনি বলেন, 'অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে তাদের ভরাডুবির বিপদ টের পেয়ে তারা সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনী পাশ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে। পঞ্চদশ সংশোধনী হচ্ছে মৃত বাকশালের প্রেতাত্মা, যা বর্তমানে ভয়াল দুঃশাসনের আত্মপ্রকাশকে প্রণোদিত করেছে।'
 
বিরোধী দলের প্রতি আচরণে আওয়ামী জোট কখনোই 'সভ্য রীতি-নীতি' অনুসরণ করেনি— এমন অভিযোগ করে খালেদা জিয়া বলেন, 'সুতরাং নব্য বাকশালী জগদ্দল পাথরকে অপসারণ করার লক্ষ্যে জনগণ আজ দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। আবারও কঠিন লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে চেপে বসা গণতন্ত্র-বিরোধী-শক্তিকে পরাভূত করে আমাদের রক্তস্নাত বহুদলীয় গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে।'