English Version
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৫ ১৬:০৮

খালেদার বক্তব্যের প্রতিবাদে গুলশানে অবস্থান

নিজস্ব প্রতিবেদক
খালেদার বক্তব্যের প্রতিবাদে গুলশানে অবস্থান

মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মন্তব্যের প্রতিবাদে তার বাসা ঘেরাও করতে গিয়ে  পুলিশের বাধায় গুলশান দুই নম্বর মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন মুক্তিযোদ্ধা এবং প্রগতিশীল বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরাআগের ঘোষণা অনুযায়ী মঙ্গলবার সকালে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম, গণজাগরণ মঞ্চসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা গুলশান ২ নম্বরে অবস্থান নেন। সেখানে তারা খালেদা জিয়ার শাস্তি এবং মুক্তিযুদ্ধবিরোধী বক্তব্য বন্ধে সংসদের আগামী অধিবেশনেই আইন প্রণয়ন করার দাবি জানান।

মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা ও একাত্তরের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের অবমাননাকর বক্তব্যেরও নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তারা।বিক্ষোভকারীরা বিএনপি চেয়ারপারসনের  বাড়ির দিকে এগোনোর চেষ্টা করলে তার কয়েকশো গজ সামনে পুলিশের ব্যারিকেডে আটকা পড়েন। কূটনৈতিক এলাকা হওয়ায় সেখানে সভা, সমাবেশ, মিছিল করার অনুমতি নেই, পুলিশের পক্ষ থেকে এ কথা জানানো হলে আবারও গুলশান-২ মোড়ে ফিরে গিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। 

এ সময় ক্ষোভ প্রকাশ করে মুক্তিযোদ্ধা, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা অনেক পুরনো এবং যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াতের পাশাপাশি বাংলাদশের মুক্তিযুদ্ধের মৌলিক ইতিহাসকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন দেশের অন্যতম শীর্ষ একটি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির শহীদের সংখ্যা নিয়ে মন্তব্যের জন্য খালেদা জিয়াকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে বলেন। এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করারও দাবি জানান তিনি।

গত ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের এক আলোচনা সভায় খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয়প্রকাশ করে বলেন, আজকে বলা হয়, এতো লক্ষ লোক শহীদ হয়েছেন। এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে যে আসলে কত লক্ষ লোক মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। নানা বই-কিতাবে নানারকম তথ্য আছে। এরপর ২৫ ডিসেম্বর খালেদার ওই বক্তব্যে সমর্থন জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা জরিপ করে দেখতে বলেন বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। একাত্তরে শহীদ বুদ্ধিজীবীরা নির্বোধের মতো মরেেছবলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তাদের এই বক্তব্যের পর তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। বক্তব্য প্রত্যাহার করে খালেদাকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানায় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। এক আইনজীবী উকিল নোটিস পাঠিয়ে বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিতে বলেন এবং খালেদার নামে আদালতে দুটি মামলাও করা হয়। 

পরে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তার তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ফেইসবুকে এক পোস্টে খালেদা জিয়ার বাড়ির সামনেগিয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে  তার ‘বিতর্কিত বক্তব্যের’ প্রতিবাদ জানাতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।

শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী, টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কাজী মুকুলসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা মঙ্গলবারের এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেন।দুই এক দিনের মধ্যে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে অবস্থান কর্মসুচি থেকে জানান বক্তারা।

গুলশান থানার পরির্দশক ফিরোজ করিম বলেন, শান্তিপূর্ণভাবেই ওই কর্মসূচি হয়েছে। অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা সেখানে ঘটেনি।