প্রশাসনে আবারও আসছে বড় পদোন্নতি, তালিকায় যারা

প্রশাসনে আবারও আসছে বড় পদোন্নতি।এ বিষয়ে সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডের প্রথম সভা অনুষ্ঠি হওয়ার কথা রয়েছে।বৈঠকের পূর্বে দুই স্তরে (অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব ও উপসচিব) পদোন্নতির জন্য প্রত্যেক কর্মকর্তার কর্মজীবনের সমস্ত নথিপত্র আলাদাভাবে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। বিশেষ করে প্রয়োজনীয় নম্বর, চাকরিজীবনের শৃঙ্খলা, দুর্নীতির বিষয়সহ সামগ্রিক বিষয় পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যুগ্ম সচিব থেকে অতিরিক্ত সচিব পদের পদোন্নতিতে নিয়মিত হিসেবে ১৫তম ব্যাচকে বিবেচনা করা হচ্ছে। প্রশাসন ক্যাডারের পাশাপাশি অন্যান্য ক্যাডার থেকেও উল্লেখযোগ্যসংখ্যক কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়া হবে। এ ছাড়া যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও আগে পদোন্নতি বঞ্চিত বিভিন্ন ব্যাচের কিছু কর্মকর্তাকেও এই পদে পদোন্নতির জন্য বিবেচনা করা হতে পারে।
এবারের অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতির জন্য যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার ২৯৫ জন যোগ্য কর্মকর্তা বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে নিয়মিত ১৫তম ব্যাচের রয়েছে ৯৮ জন (ইকোনোমিক ক্যাডার সহ) কর্মকর্তা। বিভিন্ন সময়ে পদোন্নতি বঞ্চিত (লেফট আউট) ১৪৭ জন কর্মকর্তা রয়েছে। অন্যান্য ক্যাডারের রয়েছে ৫০ জন কর্মকর্তা।
যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতির প্রক্রিয়া শুরু করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এ পদে গত বছর ২০তম ব্যাচের আংশিক পদোন্নতি দেওয়া হয়। বাকী কর্মকর্তাদের পদোন্নতির জন্য তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে মন্ত্রণালয়ের এপিডি শাখা।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রশিক্ষণ, সিআর, শৃঙ্খলা এবং পিএসিসি শাখায় চিঠি পাঠানো হয়। এবারের পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের ২০ তম ব্যাচ পর্যন্ত (লেফটআউটসহ) ১৮৬ এবং অন্যান্য ক্যাডারের ১৭৯জনকে বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে।
উপসচিব পদে পদোন্নতির জন্য আগ্রহী বা যোগ্য বিভিন্ন ক্যাডারের ২৮তম ব্যাচ পর্যন্ত কর্মকর্তাদের তালিকা চেয়ে ক্যাডার নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয়গুলোকে চিঠি পাঠায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। গত ১৫ নভেম্বরের মধ্যে যোগ্য কর্মকর্তাদের তালিকা পাঠাতে বলা হলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় এখনও তালিকা পাঠাতে পারেনি বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। এজন্য এই ব্যাচের পদোন্নতির প্রক্রিয়া এখনও শুরু করা যাচ্ছে না।
সূত্র জানায়, উপসচিব পদে পদোন্নতির জন্য ২৮ ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের ৩৬৩ জন কর্মকর্তাকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে নিয়মিত ব্যাচের রয়েছেন ১৬৪ জন কর্মকর্তা। ইকোনোমিক ক্যাডারের বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে ৪৫ জন কর্মকর্তাকে। বিভিন্ন সময়ে পদোন্নতি বঞ্চিত (লেফট আউট) ১৫৪ জন কর্মকর্তা রয়েছেন। চলতি বছরে অবসর জনিত কারনে সচিবের ১২ পদ ফাঁকা হচ্ছে। অতিরিক্ত সচিবকে পদোন্নতি দিয়ে ১২টি পদে নিয়োগ দেয়া হতে পারে। শূন্য হতে যাওয়া এসব পদ পাওয়া নিয়ে চলছে হিসাব-নিকাশ। অবসরের সময় হওয়ায় কোনো কোনো সচিব চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেতে চেষ্টা করছেন।
চলতি বছরে অবসরে যাবেন যারা:
আগামি ৯ এপ্রিল পিপিপির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা আফরোজ, ২২ এপ্রিল স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলাল উদ্দীন আহমেদ, ১৪ জুন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো: লোকমান হোসেন মিয়া, ২৬ জুলাই আইএমইডি সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী, ৫ আগস্ট এনএসডিএ এর নির্বাহী চেয়ারম্যান দুলাল কৃষ্ণ সাহা, ২৯ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: ফজলুল বারী, ৩০ সেপ্টেম্বর পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মো: ইয়ামিন চৌধুরী, ৩০ অক্টোবর জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মো: আখতার হোসেন, ২ নভেম্বর জনপ্রশাসন সচিব কেএম আলী আজম, ৩১ ডিসেম্বর পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মো: মামুন আল রশিদ, ৩১ ডিসেম্বর পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য রামেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, ৩১ ডিসেম্বর বিমান পরিবহণ ও পর্যটন সচিব মোকাম্মেল হোসেন।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন ও সচিব কেএম আলী আজমের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, বর্তমানে অতিরিক্ত সচিবের ২১২টি পদে কর্মরত রয়েছেন ৪২১ জন, যুগ্ম সচিবের ৪১১ পদে ৭৬৩ জন, উপসচিবের ১৩২৪ টি পদে কর্মরত আছেন ১৭৩৬ জন।