English Version
আপডেট : ২৮ জুলাই, ২০১৭ ১৬:৫৯

যাদের ক্ষমতা আছে তারাই বেশি দুর্নীতি করে : অর্থমন্ত্রী

যাদের ক্ষমতা আছে তারাই বেশি দুর্নীতি করে : অর্থমন্ত্রী

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ‘কোনো না কোনো ভাবে আমরা সবাই দুর্নীতিগ্রস্ত। তিনি বলেন, আমরা সবাই দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। যাদের ক্ষমতা আছে তারাই বেশি দুর্নীতি করে।

বুধবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে দুদকের হটলাইন-১০৬ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি। দুর্নীতিতে আমরা সবাই নিমজ্জিত। সবাই যদি নিমজ্জিত না থাকত তাহলে দুর্নীতি এতো বেশি হতো না।

তিনি বলেন, অনেক সময় বাধ্য হয়ে আমাদের দুর্নীতিতে জড়িত হতে হয়। বাংলাদেশে দুর্নীতির সংস্কৃতি ছিল না। এটা একটা গোপনীয়তার মধ্যে ছিল। একটু শরমের সংশ্লিষ্টতা ছিল।

দুদকের সাবেক এক চেয়ারম্যানের নাম উল্লেখ না করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এক সময় দুদকের এক চেয়ারম্যান দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিহাদ করবেন বলে ঘোষণা করেছিলেন। জিহাদের ভবিষ্যত সব সময় অন্ধকার হয়। কারণ জিহাদ অন্য জিনিস। অবশ্য ধর্মে, যুদ্ধে এসব ছিল। এখন আর নাই। জিহাদের নাম নিয়ে কোনো পরিবর্তন হয় না।

মামলার তদন্তের বিষয়ে তিনি বলেন, তদন্ত নিয়ে আমার একটি বক্তব্য আছে, তদন্ত করবেন ভালো কথা। তবে জিহাদি হবেন না। জিহাদি হলে তদন্তের কোয়ালিটি নষ্ট হয়ে যায়।

সরকারি চাকরিজীবীদের উদ্দেশ্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকারি চাকরিজীবিরা আগে চিন্তা করতো কিভাবে দুইবেলা খাবারের ব্যবস্থা করা যায়। এখন কিন্তু বলা যেতে পারে সরকারি বেতন মানে সুন্দর জীবনযাপন।

আগামী ১০ বছরের মধ্যে দুর্নীতির মাত্রা কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

তিনি বলেন, আমার ধারণা আট থেকে ১০ বছর পর আজকে যে দুর্নীতি, এই অবস্থার একটি পরিবর্তন আসবে। সাধারণ মানুষেরও অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে। দুর্নীতি যে করতে হবে এই মানসিকতারও পরিবর্তন হচ্ছে।

দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রযুক্তির ব্যবহারের উপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, প্রযুক্তি দুর্নীতি দমনে অনেক সুযোগ করে দিয়েছে। প্রযুক্তির সদব্যবহার দুর্নীতি কমিয়ে দিতে সহায়তা করবে।

দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা দুর্নীতি। আমরা যারা রক্ষক হিসেবে আছি, তারাই ভক্ষক হিসেবে অবতীর্ণ হয়ে আছি। এই প্রয়াস বন্ধ হওয়া চাই।

জনগণের অংশগ্রহণ না থাকলে দুর্নীতি প্রতিরোধ সম্ভব হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, হটলাইন-১০৬ খোলা হয়েছে। এতে যে কোনো ব্যক্তি দুর্নীতির ঘটনা ঘটার আগে ও পরে অভিযোগ করতে পারবেন। এর ফলে আমরা তড়িৎ গতিতে ব্যবস্থা নিতে পারবো। এই হটলাইন খোলার মাধ্যমে দুদকের সাথে মানুষের সরাসরি সম্পর্ক স্থাপন হলো।

দুদকের হটলাইন-১০৬। অফিস চলাকালীন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত যে কোনো মোবাইল ফোন অপারেটর থেকে বিনা পয়সায় ফোন দিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ দেয়া যাবে।

এ সময় অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) ড. মো. নাসির উদ্দিন, কমিশনার (তদন্ত) এ এফ এম আমিনুল ইসলাম এবং দুদক সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল প্রমুখ।