English Version
আপডেট : ২৩ জানুয়ারি, ২০১৭ ১৯:২৪

‘পুলিশকে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করার আহ্বান’

নিজস্ব প্রতিবেদক
‘পুলিশকে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করার আহ্বান’

ঢাকা: গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সঙ্গে একাত্ম হয়ে ঔপনিবেশিক আমলের ধ্যান-ধারণার পরিবর্তে পুলিশের সেবাকে আরো জনবান্ধব করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) রাজারবাগ পুলিশ লাইনে ‘পুলিশ সপ্তাহ-২০১৭’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর পুলিশকে আধুনিক ও জনবান্ধব করে গড়ে তুলতে বহুমূখী পদেক্ষপ নিয়েছি আমরা।

বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে একটি আত্মমর্যাদাশীল এবং আত্মনির্ভরশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু একটি চক্র আমাদের এই অগ্রযাত্রাকে বানচালের অপচেষ্টায় লিপ্ত। গণতান্ত্রিক পথে মানুষের মন জয় করতে ব্যর্থ হয়ে তারা এখন সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোমলমতি যুবক-কিশোরদের ধর্মের নামে বিভ্রান্ত করে জঙ্গিবাদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে তাদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে মানুষ হত্যার মতো বর্বরোচিত কর্মকাণ্ডে প্ররোচিত করছে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ একটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ এবং উন্নয়নের প্রধান বাধা।

পুলিশ বাহিনীর প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সম্প্রতি হলি আর্টিজান এবং শোলাকিয়া জঙ্গি হামলা মোকাবেলায় ৪ জন পুলিশ সদস্য আত্মোৎসর্গ করেছেন। নির্ভীক ওই পুলিশ সদস্যের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অসংখ্য প্রাণ রক্ষা পেয়েছে। আশুলিয়ার আশকোনা এবং মিরপুরের কল্যাণপুর জঙ্গিবিরোধী বিশেষ অভিযান সফলভাবে পরিচালনা করেছে পুলিশ। জঙ্গি হামলার মাস্টারমাইন্ড, অস্ত্রদাতা, প্রশিক্ষক এবং আশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে তারা। শুধু দেশেই নয়, গত প্রায় দুই যুগের বেশি সময় ধরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করে নিজেদের কর্মদক্ষতা ও পেশাদারিত্বের পরিচয় দিচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ। বহির্বিশ্বে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেছে এ বাহিনী।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইজিপি এ.কে.এম. শহীদুল হক এবং প্যারেড কমিটির সভাপতি অতিরিক্ত আইজিপি মো. মোখলেসুর রহমান প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।

‘পুলিশ সপ্তাহ-২০১৭’ উপলক্ষে পুলিশ সদস্যদের মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজের সালাম গ্রহণ করেন প্রধানমমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্যারেড কমান্ডার পুলিশ সুপার শামসুন্নাহারকে সঙ্গে করে একটি খোলা জিপে করে প্যারেড পরিদর্শন করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে ৪টি ক্যাটাগরিতে ১৩২ জন পুলিশ সদস্যের মাঝে বাংলাদেশ পুলিশ পদক ও রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক বিতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

২০১৬ সালের মরনোত্তর পুলিশ পদক বিপিএম পান গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় নিহত পুলিশ সদস্য শহীদ রবিউল ইসলাম এবং গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শহীদ মো. সালাউদ্দিন খান। মরনোত্তর পদক গ্রহণ করেন তাদের স্ত্রী। একইসঙ্গে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদ জামাতে জঙ্গি হামলা প্রতিরোধে নিহত পুলিশ কনস্টেবল শহীদ জহীরুল ইসলামের পক্ষে তার স্ত্রী এবং পুলিশ কনষ্টেবল শহীদ আনসারুল হকের পক্ষে তার মা মরনোত্তর পদক গ্রহণ করেন।

এসময় মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, ঢাকা সিটি কর্পোরেশন উত্তরের মেয়রসহ সামরিক ও বেসামরিক পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিদেশি কূটনিতিক, কূটনৈতিক মিশনের সদস্য, দাতা সংস্থার প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।