English Version
আপডেট : ১৭ আগস্ট, ২০১৬ ০৩:২১

আটক চার শিক্ষিত নারী জঙ্গি

এমএজামান
আটক চার শিক্ষিত নারী জঙ্গি

চিকিৎসক মা-বাবার আদরের সন্তান ইসতিনা আক্তার ঐশী। তিনি নিজেও চিকিৎসক। গত জানুয়ারিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এমবিবিএস পাস করেন। মাস দুয়েক আগে একই হাসপাতালে শিক্ষানবিশ চিকিৎসক হিসেবে যোগ দেন ঐশী।

র‌্যাবের দাবি, মেধাবী এই তরুণী নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামা'আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সক্রিয় সদস্য। সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছেন 'জঙ্গিবাদে'। গত সোমবার ভোরে র‌্যাব-৪-এর একটি দল রাজধানীর মগবাজারের বাসা থেকে জঙ্গি-সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ঐশীকে আটক করে।

একই অভিযোগে গাজীপুর ও মিরপুর এলাকা থেকে আকলিমা রহমান মনি, ইশরাত জাহান মৌসুমী ওরফে মৌ ও খাদিজা পারভীন মেঘনা নামের আরো তিন তরুণীকে আটক করা হয়।

তারা মানারাত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে অধ্যয়নরত। আটক চারজনেরই বয়স ২৩ বছরের মধ্যে।

র‌্যাব বলছে, ওই চার তরুণী জেএমবির 'নতুন ধারার' নারী দলের সক্রিয় সদস্য। তাদের মধ্যে আকলিমা জেএমবির নারী ইউনিটের উপদেষ্টা।

তবে স্বজনরা বলছেন, তাদের সন্তান জঙ্গিবাদে জড়িয়েছে এটা তারা বিশ্বাস করতে পারছেন না। গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার পর কয়েকটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মেধাবী শিক্ষার্থীদের জঙ্গি গ্রুপে দলভুক্ত করার তথ্য পাওয়া যায়। এবারই প্রথম একজন শিক্ষানবিশ চিকিৎসক ও তিন ছাত্রীকে জঙ্গি-সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে একসঙ্গে আটক করা হলো।

অবশ্য শিক্ষানবিশ চিকিৎসক ঐশীর বাবা বিশ্বাস আক্তারের দাবি, 'তার মেয়ে জেএমবি বা জঙ্গি নয়। সে ব্যক্তিগত জীবনে ধার্মিক। জঙ্গিবাদ বা উগ্রবাদকে পারিবারিকভাবেই তার মেয়ে ঘৃণা করে।'

মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে মিরপুরে র‌্যাব-৪-এর কার্যালয়ে ওই চার তরুণীকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন র‌্যাব কর্মকর্তারা।

সেখানে র‌্যাব-৪-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি খন্দকার লুৎফুল কবির বলেন, গত ২১ জুলাই জেএমবির দক্ষিণাঞ্চলীয় আমির মাহমুদুল হাসান ওরফে হাসানকে টঙ্গী থেকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে কয়েকজন নারীর জেএমবিতে যুক্ত থাকার তথ্য পাওয়া যায়। অনুসন্ধান চালিয়ে তারা জানতে পারেন, আকলিমা রহমান নামের জেএমবির এক নারী সদস্য গত রমজান মাসে ১২ হাজার টাকার তহবিল সংগ্রহ করে দিয়েছেন।

অতঃপর তাকে গোয়েন্দা নজরদারিতে নেওয়া হয়। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে আকলিমাকে গাজীপুরের সাইনবোর্ড এলাকায় নিজ বাসা থেকে আটক করা হয়। ১২ হাজার টাকার তহবিলের মধ্যে আট হাজার টাকার জোগান দেন ঐশী। মৌ ও মেঘনা তাদের সহযোগী। লুৎফুল কবির বলেন, আকলিমা দেড় বছর ধরে সংগঠনটির সঙ্গে সম্পৃক্ত। কথিত ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য দলকে বড় করা এবং তিনি তহবিল সংগ্রহ করে মাহমুদুল হাসানকে পৌছে দিতেন। জেএমবির নারী গ্রুপটির গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আকলিমা ও ঐশীর কাছ থেকে আসত।