English Version
আপডেট : ৬ আগস্ট, ২০১৬ ১২:২২

বিলুপ্ত গরু দিয়ে হাল চাষ

উজ্জ্বল রায়
বিলুপ্ত গরু দিয়ে হাল চাষ

নড়াইলের বিভিন্ন এলাকায় আগের মত এখন আর গরু দিয়ে হাল চাষ দেখা যায় না। এক সময় বাণিজ্যিকভাবে কৃষক গরু পালন করতো । কিছু মানুষ গরু দিয়ে হাল চাষকে পেশা হিসাবেও নিত। নিজের সামন্য জমি টুকুর পাশাপাশি অন্যের জমিতে হাল চাষ করে তাদের সংসারের ব্যয় নির্বাহ করতো।

গরু দিয়ে হাল চাষে সময় লাগলেও মালিকরা হাল চাষের ব্যবস্থা করত। হালের গরু কিনে দারিদ্র মানুষ জমি চাষ করেই তাদের পরিবারে সচ্ছলতা ফিরে পেত।

নড়াইলে সদর উপজেলার ভদ্রবিলা ইউনিয়নের বাগডাংগা গ্রামের আতার ম্যোলা বলেন, ছোটবেলা আমাদের হাল চাষের কাজ করা হতো। বাড়িতে হাল চাষের জন্য বলদ গরু ছিল ৩ জোড়া।

হাল চাষের  জন্য দরকার হতো বলদ ১ জোড়া, কাঠ লোহার তৈরি লাঙ্গল, জোয়াল, মই, লরি (বাশের তৈরি গরু তাড়ানোর লাঠি)। গরুর মুখে টোনাও লাগতো এসময়ে। আগে গরু দিয়ে হাল চাষ করলে জমিতে ঘাস কম হতো। অনেক সময় গরুর গোবর জমিতে পড়ত, এতে করে জমিতে অনেক জৈব্য সার হতো ক্ষেতে ফলন ভালো হত। গরু দিয়ে হাল চাষ করে ছেলে মেয়ের লেখাপড়া ও সংসার মোটামুটি ভালই চলতো।

এখন নতুন নতুন মেশিন (ট্রাক্টর), পাওয়ার টিলার মেশিন দিয়ে এখানকার লোকজন চাষাবাস করে। আমাগো তো মেশিন নাই জমি চাষ করার, তাই এহন সংসার চালাতে অনেক কষ্ট হছে।

বাবার সাথে জমি চাষ করতে আসা  মুলিয়া স্কুলের পঞ্চম শ্রেনির শিক্ষার্থী বলেন, প্রতিদিন সকালে স্কুলে যাই, স্কুল থেকে আইসে বাবার সাথে নেমে পড়ি হাল চাষ করার জন্য। বাবার স্বপ্ন আমি লেখাপড়া করে ভালো  শিক্ষক হই।

আমি লেখাপড়া করে বাবার স্বপ্ন পূরন করতে চাই। তাই হাল চাষের পাশাপাশি লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছি।

এব্যাপারে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বলেন, গরুর পরিমান কমে যাওয়ার কারনে বর্তমানে ট্রাক্টর দিয়ে হাল চাষ হচ্ছে। এছাড়া গরু দিয়ে হাল চাষ না হওয়ার  কারনে মাটি জৈবিক ক্ষমতা হারাচ্ছে। তাই একদিকে যেমন ফলন কমে যাচ্ছে তেমনি রাসায়নিক সারের প্রভাব বেড়েছে। এছাড়া টেক্টরে যেমন খরচ বেশী হয়। কিন্তু গরু দিয়ে হাল চাষে খরচ কম হয়। বহু প্রান্তিক কৃষকের কর্ম-সংস্থান হয় বলে জানান।