English Version
আপডেট : ২৭ জুলাই, ২০১৬ ১৫:১৬

কল্যাণপুরে নিহত তিন জঙ্গির পরিচয় মিলেছে

অনলাইন ডেস্ক
কল্যাণপুরে নিহত তিন জঙ্গির পরিচয় মিলেছে

রাজধানীর কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানায় সোমবার দিবাগত মধ্য রাত থেকে গতকাল ভোর পর্যন্ত ‘অপারেশন স্ট্রম-২৬’ নামের পুলিশের বিশেষ অভিযানে ৯ জঙ্গি নিহত হয়েছে। অভিযানে নিহতের তিন ‘জঙ্গির’ পরিচয় মিলেছে বলে জানা গেছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। 

আজ বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) একটি সূত্র জানায়, তিন ‘জঙ্গির’ একজনের নাম সেজাত রউফ অর্ক ওরফে মরক্কো। তিনি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএর ছাত্র ছিলেন। গুলশান হামলায় নিহত জঙ্গি নিবরাসের বন্ধু ছিলেন অর্ক। তাঁর বাবার নাম তৌহিদ রউফ। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সি ব্লকে ৩০৪ নম্বর বাড়িতে তাঁর পরিবারের বাস।

আরেকজন  নোয়াখালী সরকারি কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র নাম জুবায়ের হাসান (২০)। তাঁর বাবা আব্দুল কাইয়ুম তিনি নোয়াখালীতে আল-আমিন বিস্কুট কারখানার ভ্যানচালক। ছয় মাস আগে জুবায়ের বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। এ ব্যাপারে নোয়াখালীর সুধারামপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।

নিহত তৃতীয় ‘জঙ্গি’ আর্ন্তজাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের ছাত্র সাব্বির হক কনিকের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারায়। নিহত তৃতীয় ‘জঙ্গি’ আর্ন্তজাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের ছাত্র সাব্বির হক কনিকের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারায়। তার বাবা আজিজুল হক আনোয়ারার বরুমচড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি। সাব্বিরও ছয় মাস আগে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। তবে এ ব্যাপারে তাঁর পরিবার থানায় কোনো জিডি করেনি।

সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মিরপুর থানা পুলিশ, স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা মিলে কল্যাণপুরের মেস বাসায় জঙ্গিবিরোধী তল্লাশি শুরু করেন। কল্যাণপুরের ৬ নম্বর রোড থেকে তল্লাশি শুরু হয়। কয়েকটি মেসে অভিযান চালিয়ে তারা ৫ নম্বর রোডে আসেন। এই রোডে জাহাজ বিল্ডিং খ্যাত ৫ নম্বর বাসায় অভিযান শুরু করে পুলিশ। পুলিশ তিনতলায় পৌঁছার পরই তাদের ওপর জঙ্গিরা বোমা হামলা শুরু করে। বিয়ষটি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করার পর তারা উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসেন। 

বৈঠকে বিশেষায়িত দল সোয়াত টিমকে দিয়ে অপারেশন স্ট্রম-২৬ শুরু করার সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত হয় তাদের সঙ্গে থাকবে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ও থানা পুলিশ। কিছু সময়ের মধ্যেই জাহাজ বিল্ডিংয়ের আশপাশের ভবনের ছাদে সশস্ত্র অবস্থান নেয় পুলিশের সদস্যরা। ভোর ৫টা ৫১ মিনিটে শুরু হওয়া অপারেশনের সমাপ্তি হয় ৬টা ৫১ মিনিটে। এ সময় জঙ্গি এবং পুলিশের গোলাগুলিতে আশপাশের এলাকা কেঁপে ওঠে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকার মানুষের মধ্যে। 

জঙ্গি আস্তানায় অভিযান শুরু করলে জঙ্গিরা ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি দিয়ে পুলিশকে প্রতিহত করা শুরু করে। তারা পুলিশের ওপর গুলি ও হাতবোমা নিক্ষেপ করে। পুলিশ পাল্টা গুলি চালালে এক জঙ্গি গুলিবিদ্ধ হয়। তাকে আহতাবস্থায় আটক করে পুলিশ। অভিযান চালানোর পরে ওই ভবন থেকে পুলিশের ওপর একটি হ্যান্ডগ্রেনেডও নিক্ষেপ করা হয়। এতে একজন পুলিশ সদস্য আহত হন।