English Version
আপডেট : ২৬ জুলাই, ২০১৬ ০০:০৫
সুন্দরগঞ্জের বন্যা বিপদসীমার উপরে

নদীগর্ভে ছ’শ পরিবারের ঘর-বাড়ি

নুরে শাহী আলম
নদীগর্ভে ছ’শ পরিবারের ঘর-বাড়ি

সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটায় নদী ভাঁঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করায় ৫৭০ পরিবারের ঘর-বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। দূর্গতরা ত্রাণের আশায় প্রহর গুনছেন। গত কয়েক দিনের অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এতে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ২২টি চর প্লাবিত হয়ে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছেন। ওই সকল এলাকায় খাদ্য, ওষুধপত্র, বিশুদ্ধ পানীয় জলসহ গো-খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যা দুর্গতরা ত্রাণের জন্য অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নুরুন্নবী সরকার জানান, প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানি বন্দি রয়েছে। বন্যার সাথে পাল্লা দিয়ে নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছে।

এই পর্যন্ত উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর, কঞ্চিবাড়ি, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে নদী ভাঁঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করায় ৫৭০ পরিবারের ঘর-বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। সে সাথে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে হাজার-হাজার হেক্টর আবাদি জমি, গাছপালা, পানের বরজ ও বাঁশঝাড়।

ভাঁঙ্গন কবলিত এলাকা গুলো হচ্ছে কাপাসিয়া, ভাটীকাপাসিয়া, বাদামের চর, উজান বুড়াইল, ভাটী বুড়াইল, লাল চামার, হরিপুর, লখিয়ারপাড়া, চরিতাবাড়ি, কানি চরিতাবাড়ি, বোচাগাড়ি, ছয়ঘরিয়া, দক্ষিণ শ্রীপুরসহ আরো কয়েকটি স্থান।

তিনি আরো জানান, নদী ভাঙ্গনের শিকার পরিবার গুলোর মাঝে ইতোমধ্যেই ১১ মেট্রিক টন চালসহ অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

গত শনিবার জেলা প্রশাসক আব্দুস সামাদ, ইউএনও হাবিবুল আলম ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হরিপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের নদী ভাঁঙ্গনের শিকার ৩০০ পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছেন।

ত্রাণ বিতরণের আগে ও পরে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলা প্রশাসক বন্যা কবলিত ও নদী ভাঁঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেন। ভাঁঙ্গনের শিকার পরিবারগুলো তাদের গবাদি পশু পাখি নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সরকারী লোকজনকে দেখলেই পানি বন্দি পরিবার গুলো ত্রাণের আশায় ছুটে যাচ্ছেন।

চরাঞ্চলের মাঠ-ঘাট পানিতে নিমজ্জিত থাকায় শ্রমিক শ্রেণির লোকজন বেকার হয়ে অলস জীবন যাপন করছেন।

ইউএনও (ভারঃ) হাবিবুল আলম জানান, ৫০ মেট্রিক টন চাল ও ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেলেও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল হওয়ায় অতিরিক্ত বরাদ্দের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রকাশ কুমার সরকার জানান, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদ-নদীর পানি এ অঞ্চলে বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।