English Version
আপডেট : ৪ জুন, ২০১৬ ১৮:৪৪

ভারত থেকে গরু আনা বন্ধ করতে চান বিজিবি প্রধান

অনলাইন ডেস্ক
ভারত থেকে গরু আনা বন্ধ করতে চান বিজিবি প্রধান

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি’র প্রধান জানিয়েছেন, কেউ যাতে অবৈধভাবে গরু না আনে, সেজন্য বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকায় গরু ব্যবসায়ীদের সচেতন করার কার্যক্রম শুরু করেছে বিজিবি। বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, ভারত থেকে অবৈধ পথে গরু আনা বন্ধ হলে সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশী নাগরিক নিহত হবার ঘটনাও বন্ধ হয়ে যাবে। গরু ব্যবসায়ীদের কাছে প্রচারণার অংশ হিসেবে বিজিবি কর্মকর্তারা এরই মধ্যে দেশের সীমান্তবর্তী বিভিন্ন এলাকায় বৈঠকও করেছেন। এই প্রচারণার মূল কথা হচ্ছে- বাংলাদেশী নাগরিকরা যেন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুলিতে মারা না যায়। এর জন্য বাংলাদেশী গরু ব্যবসায়ীদের একটি বড় দায়িত্ব আছে বলে মনে করে বিজিবি। কর্মকর্তারা বলছেন, যারা মারা যাচ্ছে তাদের বেশিরভাগই গরু চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত। বিজিবি মহাপরিচালক জানিয়েছেন, সেটাই তাদের এই প্রচারণার উদ্যোগ। মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, ‘এই গরু পাচার নিয়েই কিন্তু বর্ডারে ম্যাক্সিমাম কিলিং হচ্ছে। আমরা চাচ্ছি এই কিলিং কীভাবে বন্ধ করা যায়।’ কেউ যাতে গরু পাচারের সঙ্গে জড়িত না হয় সে বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করার জন্যই এ প্রচারণার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিজিবি মহাপরিচালক। মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে অন্তত ৪৫ জন বাংলাদেশী নিহত হয়েছে। চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত এ সংখ্যা নয়জন। সীমান্তে যারা মারা যাচ্ছে, তাদের বেশিরভাগই যে ‘গরু চোরাকারবারী’ এ ধারণার সঙ্গে অনেকই একমত নয়। বিভিন্ন সময় খবরের কাগজে দেখা যায়, যারা গুলিতে নিহত হচ্ছেন তাদের কেউ ‘কৃষক’ আবার কেউবা ‘নিরীহ গ্রামবাসী’। উত্তরাঞ্চলীয় জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জের একজন গরু ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলাম জানালেন, তিন বছর আগে ভারত থেকে যত গরু বাংলাদেশে আনা হতো এখন সে সংখ্যা অর্ধেকেরও নিচে নেমে গেছে। সীমান্তে কিছু করিডোর দিয়ে এসব গরু বাংলাদেশে আনা হয়। গরু ব্যবসা নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আনুষ্ঠানিক কোনো ব্যবস্থা নেই। পুরো বিষয়টি অনানুষ্ঠানিক। কিন্তু দুদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর চোখের সামনেই এ ঘটনা ঘটছে। সীমান্ত করিডোর দিয়ে যেসব গরু বাংলাদেশে আসে সেখান থেকে সরকার রাজস্ব আদায় করে। গরু ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এলাকায় করিডোর ছাড়া কোন গরু আসেনা।’ বিজিবি কর্মকর্তারা বলছেন, সীমান্তে করিডোর ছাড়াও অন্য জায়গা দিয়েও গরু বাংলাদেশে আনার চেষ্টা করা হয়। মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে ভারত থেকে গরু আনার সম্পূর্ণ বিরোধী। বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, ‘আমাদের এখানকার লোকজন যদি ভারতের গরুর দিকে না তাকায়, বা ভারত থেকে গরু আসাটা যদি বন্ধ করা যায়, তাহালে সীমান্তে কিলিং অলমোস্ট জিরোর কোটায় চলে আসবে।’ এদিকে ভারত থেকে গরু আসার পরিমাণ কমে যাওয়ায় স্পষ্টত প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশে মাংসের বাজারে। গত দেড় বছরে গরুর মাংসের দাম কেজি প্রতি ৫০ শতাংশ বেড়েছে। সম্প্রতি ঢাকায় গরুর মাংসের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে কেজি প্রতি ৪২০ টাকা।