English Version
আপডেট : ১ জুন, ২০১৬ ১৫:২৭

রাজাকার মহিবুরের মৃত্যুদণ্ড, দুই ভাইয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড

অনলাইন ডেস্ক
রাজাকার মহিবুরের মৃত্যুদণ্ড, দুই ভাইয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তিন রাজাকারের সাজা ঘোষণা করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে দুই সহোদর ভাই। এবং অপরজন তাদের চাচাতো ভাই।

রায়ে হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার খাগাউড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মহিবুর রহমান বড় মিয়াকে মৃত্যুদণ্ড। এবং তার ছোট ভাই চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান আঙ্গুর মিয়া ও চাচাতো ভাই আবদুর রাজ্জাককে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (১ জুন) বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা করেন। এই বেঞ্চের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি শাহীনুর ইসলাম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়াদী। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিচারপতি আনোয়ারুল হক নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে রায়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যানের প্রারম্ভিক বক্তব্যের পর বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদী ২৪০ পৃষ্ঠার রায়ের সার সংক্ষেপ পড়া শুরু করেন। এরপর বিচারপতি শাহিনুর ইসলাম রায়ের বাকি অংশ পড়েন এবং সবশেষে বিচারপতি আনোয়ারুল হক সাজা ঘোষণা করেন। রায়ে বলা হয়, আসামিদের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা চার অভিযোগের সবগুলোই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম অভিযোগে হত্যার দায়ে মুহিবুরকে মৃত্যুদণ্ড ও তার দুই ভাইকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বাকি তিন অভিযোগে আসামিদের প্রত্যেকের ৩৭ বছর করে সাজার আদেশ দিয়েছে আদালত। তাই সরকার ফাঁসিতে ঝুলিয়ে বা গুলি করে মুহিবুর রহমানের দণ্ড কার্যকর করতে পারবে। তিন আসামি বানিয়াচং উপজেলার মহিবুর রহমান, মুজিবুর রহমান এবং আব্দুর রাজ্জাক রায়ের সময় কাঠগড়াতেই উপস্থিত ছিলেন। এই রায়ে ‘সন্তুষ্ট নন’ জানিয়ে  আসামিপক্ষের আইনজীবী মাসুদ রানা তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, তারা আপিল করবেন। নিয়ম অনুযায়ী এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ আদালতে আপিলের সুযোগ পাবেন ট্রাইব্যুনালে দণ্ডিত আসামিরা। অন্যদিকে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সিমন এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, তারা যে রাজাকার ছিল তা আদালতে প্রমাণিত হয়েছে। এই রায়ে আমরা আনন্দিত। তাদের অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় জাতি খুশি হয়েছে। গত ১১ মে তিন আসামির উপস্থিতিতে উভয় পক্ষের চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। ওইদিন রায়ের জন্য অপেক্ষমান রেখেছিলেন ট্রাইব্যুনাল। তিন আসামির বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা. নির্যাতন, অপহরণ, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগসহ চার ধরনের অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনে ছিলেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ শিমন, তাপস ক্রান্তি বল ও রেজিয়া সুলতানা চমন। আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট গোলাম কিবরিয়া ও মাসুদ রানা। গত বছর ২৯ সেপ্টেম্বর এই তিন আসামির বিরুদ্ধে ৪টি অভিযোগ আমলে নিয়ে চার্জ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। এ মামলায় ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশন পক্ষে ১২ জন এবং আসামিপক্ষে ৬ জন সাক্ষ্য দেন।