English Version
আপডেট : ২৯ মে, ২০১৬ ১৬:৩২

প্রকাশ্যে ধূমপানকারীর শাস্তি নগণ্য

এমএজামান
প্রকাশ্যে ধূমপানকারীর শাস্তি নগণ্য

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে পাবলিক প্লেস বা প্রকাশ্যে ধূমপানকারীদের শাস্তির যে বিধান রয়েছে তা খুবই নগণ্য বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রপোলিটন পুলিশের কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া।

বোরবার (২৯ মে) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ‘মানস’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পুলিশ কমিশনার এমন তথ্য জানান। আগামী ৩১ মে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) উদ্যোগে বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস পালনের প্রাক্কালে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধে কাজ করা বেসরকারি সংস্থা- মানস।

কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া বলেন, আমি মনে করি এ আইন সংশোধন করে শাস্তির পরিমাণ আরও বাড়ানো উচিৎ। কারণ উন্মুক্ত স্থানে ধূপমানের ফলে জনগণ ও পরিবেশের যে পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে তাতে এ শাস্তি মোটেও উপযুক্ত নয়। বিষয়টি ভেবে দেখার জন্য দেশের আইন প্রণেতাদের আহ্বান জানান তিনি।

‘মানস’ সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বারডেম হাসপাতালের ডিপার্টমেন্ট অব সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক অরূপ রতন চৌধুরী বলেন, সারাদেশে সিগারেট, বিড়ি এবং ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহার করছে প্রায় ৪ কোটি ৬০ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষ। ফলে এ তামাক ব্যবহারে প্রতি ১ ঘণ্টায় দেশের ১২ জন মানুষ মারা যাচ্ছে।

অরূপ রতন চৌধুরী বলেন, পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারকারী দেশের মধ্যে বাংলাদেশ এখন অন্যতম। দেশে তামাক গ্রহণকারীর মধ্যে ৫৮ শতাংশ পুরুষ এবং ২৯ শতাংশ নারী।

তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্লোবাল টোবাকো এপিডেমিক রিপোর্ট ২০১৩ অনুযায়ী বাংলাদেশে তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব এতটাই প্রকট যে, প্রতি বছর ১২ লাখ মানুষ তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারজনিত প্রধান ৮টি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে দেশে গড়ে প্রতি বছরে ১ লাখ মানুষ, প্রতিমাসে ৮ হাজার ৩৩৩ জন, প্রতি ১ দিনে ২৭৭ জন এবং প্রতি ১ ঘণ্টায় ১২ জন মানুষ মারা যাচ্ছে। আর সারা বিশ্বে প্রতি ৬ সেকেন্ডে ১ জন মানুষ তামাকজনিতে রোগের কারণে মারা যাচ্ছে।

ডব্লিউএইচও ২০১৩ সালের এক প্রতিবেদনে, দেশে হৃদরোগে আক্রান্ত মৃত্যুর ৩০ শতাংশ, ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর ৩৮ শতাংশ, ফুসফুসে যক্ষার কারণে মৃত্যুর ৩৫ শতাংশ এবং অন্যান্য শ্বাসতন্ত্রজনিত রোগে মৃত্যুর ২৪ শতাংশ ধুমপান ও তামাকজাত দ্রব্য সেবনের কারণে হয়। 

প্রতিবছরই বাংলাদেশে তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারজনিত রোগীর চিকিৎসা বাবদ সরকারের স্বাস্থ্য খাত ও রোগীর নিজস্ব ব্যয়ের পরিমাণ প্রায় ৯ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। অথচ তামাক খাত থেকে সরকার বছরে আয় করে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ তামাকের কারণে দেশের অর্থনীতিতে বছরে ক্ষতির পরিমাণ ৭ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।