English Version
আপডেট : ২৯ এপ্রিল, ২০১৬ ০২:২২

ফ্রি বায়োমেট্রিক সিম নিবন্ধন ২০ টাকায়!

আনোয়ার হোসাইন সোহেল
ফ্রি বায়োমেট্রিক সিম নিবন্ধন ২০ টাকায়!

ফ্রি বায়োমেট্রিক সিম নিবন্ধন এখন ২০ টাকায়।  চলতি মাসের ২০ তারিখ থেকে প্রতিটি সিম নিবন্ধনের জন্য গ্রাহকদের গুনতে হচ্ছে ২০ টাকা করে। সরকারের পক্ষ থেকে ৩০ এপ্রিল রাত ১০টা পর্যন্ত মোবাইল সিম নিবন্ধনের সর্বশেষ সময় সীমা বেঁধে দেয়ার পর থেকেই বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় রাস্তা দেখা যাচ্ছে অস্থায়ী সিম নিবন্ধনের বুথ। এসব বুথে কাজ করছেন একদল তরুণ-তরুণী। সেই সাথে গ্রাহকরাও হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন নিবন্ধন সেরে নিতে।  এই সুযোগে সিম প্রতি ২০টাকা হারে আদায় করছে বুথ কর্মীরা। 

সরেজমিনে রাজধানীর তেজগাঁও, ফার্মগেট, মোহাম্মদপুর, উত্তরা, মিরপুর, ফকিরাপুল ,খিলগাঁও,গোড়ান ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।  এসব এলাকায় প্রায় প্রতিটি অপারেটরের সিম নিবন্ধন করাতে গ্রাহকদের ২০টাকা হারে গুনতে হয়।  তেজগাঁও নাখালপাড়া সমিতির বাজারের সামনে রমিজ উদ্দিন (২৭) রবি সিম নিবন্ধন করাতে এসেছেন। এসময় বুথ কর্মী প্রকাশ্যে তার কাছে ২০ টাকা দাবি করেন। তিনি অবশ্য শুরুতে আপত্তি করেন পরে পকেট থেকে একটি ২০টাকা নোট তাকে দিলেন। যদিও মোবাইল অপারেটর কোম্পানি গুলো সিমের নিবন্ধন খরচ একে বারেই ফ্রি করে দিয়ে ছিলো।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম ঘোষণা করেছেন রেজিঃ করতে কোন দোকানদার টাকা চাইলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে অবহিত করলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। আর টাকা গ্রহন করা হবে দন্ডনীয় অপরাধ। মোবাইল কোম্পানি গুলোর অস্থায়ী বুথ কর্মীরা এখন টাকা ছাড়া রেজিঃ করে না। অপরদিকে সরকারের ঘোষণা ৩০ এপ্রিলই শেষ তারিখ তাই একান্ত বাধ্য হয়েছে নিজেদের অতিপ্রয়োজনীয় মোবাইল নাম্বারটি ঠিক রাখতে নিবন্ধন করাচ্ছেন গ্রাহকরা। এব্যাপারে প্রশাসন নিব্রিকার। গ্রাহকদের প্রশ্ন  তাহলে বিড়ালের গলায় ঘন্টি বাধবে কে?

এদিকে সিম নিবন্ধন করতে গিয়ে কোনও গ্রাহককে টাকা দিতে হলে সংশ্লিষ্ট রিটেইলারকে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার মোবাইল ফোন অপারেটরদের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি বৈঠক শেষে প্রতিমন্ত্রী এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। সেসঙ্গে ওই রিটেইলারের অনুমোদনও বাতিল করতে মোবাইল অপারেটরদের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।

তারানা হালিম বলেন, তার ফেসবুক পেইজে অনেকেই অভিযোগ করেছেন, সিম নিবন্ধনের সময় গ্রাহকদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা আদায় করা হচ্ছে। এ পর্যায়ে বাড়তি টাকা নেওয়ার কোনও সুযোগ নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তারানা হালিম তার ফেসবুক পেইজেও আজকের বৈঠকের ছবি দিয়ে একটি পোষ্ট শেয়ার করে এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে লেখেন। তিনি লিখেছেন "বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম/রিম রেজিস্ট্রেশন নিয়ে বিভিন্ন মোবাইল অপারেটরদের সম্পর্কে আপনাদের কাছ থেকে যে অভিযোগ গুলো আমার এই ফেসবুক পেইজে পেয়েছি সেগুলো নিয়ে সকল মোবাইল অপারেটরদের সিইও এবং বিটিআরসির কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করছি এবং যে যে রিটেইলার আপনাদের কাছ থেকে বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে সিম/রিম রেজিস্ট্রেশনের জন্য টাকা নিচ্ছে তাদের লাইসেন্স ক্যান্সেল করতে নির্দেশ দিয়েছি"।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, “অপারেটররা এ বিষয়ে তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের ব্ল্যাকলিস্টেড করবে এবং তাদের রিটেইলারশিপ বাতিল করবে।” অপারেটরগুলোকে এ ব্যাপারে দ্রুততার সঙ্গে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান তারানা হালিম। দেশের সমস্ত মোবাইল ব্যবহারকারীদের নিবন্ধনের আওতায় আনার লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশে আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মোবাইল ফোনের সিম নিবন্ধন বা পুনঃ নিবন্ধনের কার্যক্রম গত ডিসেম্বর মাস থেকে চলছে।