English Version
আপডেট : ২৭ এপ্রিল, ২০১৬ ১৮:১৩

‘রিজার্ভ হ্যাকিংয়ের ঘটনায় অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে না’

ষ্টাফ রিপোর্টার
‘রিজার্ভ হ্যাকিংয়ের ঘটনায় অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে না’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-ফাইল ফটো।

প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা দেশের অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি কোনো প্রভাব পড়বে না। আজ বুধবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে দশম জাতীয় সংসদের দশম অধিবেশনে ঢাকা-৭ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিমের লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ দাবি করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ হ্যাকিংয়ের ঘটনায় দেশের অর্থনীতি আপাতত ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে ইতিমধ্যে কিছু অর্থ ফেরত পাওয়া গেছে। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাকি অর্থও ফেরত আনা যাবে বলে আশা করা যায়।’

তিনি আরো বলেন, ‘হ্যাকিংয়ের ঘটনার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক যথোপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে আরো বড় রকমের হ্যাকিং ঠেকানো গেছে। একই সঙ্গে ফিলিপাইন সরকারের সহযোগিতায় অর্থ ফেরত আনার তৎপরতার ফলে এ বিষয়ে সম্ভাব্য বিরূপ পরিস্থিতি ঠেকানো গেছে। এ বিষয়ে তদন্ত করার জন্য গঠিত কমিটি একটি অন্তবর্তীকালীন প্রতিবেদন দিয়েছে। সে অনুযায়ী নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এসব তৎপরতার ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ হ্যাকিংয়ের ঘটনা দেশের অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদি কোনো প্রভাব ফেলবে না।’

প্রধানমন্ত্রী জানান, মুদ্রানীতি গ্রহণের প্রাক্কালে ২০১৬ সালের জুনের শেষে যে পরিমাণ নীট বৈদেশিক সম্পদের (১ হাজার ৮৬৬ বিলিয়ন টাকা) লক্ষ্যমাত্রা প্রাক্কলন করা হয়েছে তার তুলনায় ২০১৬ সালের মার্চের শেষে প্রকৃত নীট বৈদেশিক সম্পদের পরিমাণ রিজার্ভ হ্যাকিংয়ের পরেও অনেক বেশি (১ হাজার ৯৮১ বিলিয়ন টাকা) দাঁড়িয়েছে। সুতরাং বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ হ্যাকিংয়ের ঘটনার ফলে মুদ্রানীতি বাধাগ্রস্ত হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই।

গত ৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের নামে সুইফট (সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টারব্যাংক ফিন্যান্সিয়াল টেলিকমিউনিকেশন) মেসেজিং সিস্টেমে ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে ১০১ মিলিয়ন ডলার ফিলিপাইন ও শ্রীলঙ্কার দুটি ব্যাংকে সরানো হয়। কিন্তু বানান ভুলের কারণে শ্রীলঙ্কায় ২ কোটি ডলার পাচার ব্যর্থ হয়। তবে চারটি বার্তার মাধ্যমে ফিলিপাইনের একটি ব্যাংকে সরিয়ে নেওয়া হয় ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার। ফেব্রুয়ারিতে ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ এই সাইবার জালিয়াতির ঘটনা জানাজানি হলে বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।

নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য নাবিল আহমেদের এক প্রশ্নের জবাব প্রধানমন্ত্রী জানান, বর্তমান সরকার জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ রোধে, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান এবং সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, জনগণের মৌলিক ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। সব ধরনের জঙ্গিবাদ, নাশকতা ও সহিংসতার সঙ্গে জড়িত ও হুকুমদাতাদের আইনের আওতায় আনতে ও তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নিতে সরকার পুলিশসহ সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাসগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে। পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পারস্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, বর্তমান সরকার পদক্ষেপের ফলে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। মানুষ ন্যায়বিচার পাচ্ছে। ফলে শান্তিপূর্ণ ও স্বাভাবিকভাবে দেশি-বিদেশি নাগরিকরা জীবনযাপন ও ব্যবসা-বাণিজ্য করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর থাকায় দেশে  সন্ত্রাসবাদ এবং জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি দৃঢ়তর হচ্ছে।