English Version
আপডেট : ২১ এপ্রিল, ২০১৬ ১১:৩৩

নয় দিনে পুনঃনিবন্ধন করতে হবে সাড়ে ৬ কোটি সিম, বুথে গ্রাহকদের ভিড়

অনলাইন ডেস্ক
নয় দিনে পুনঃনিবন্ধন করতে হবে সাড়ে ৬ কোটি সিম, বুথে গ্রাহকদের ভিড়

 

বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের আর মাত্র ৯ দিন বাকি থাকলেও এখনো দেশের প্রায় সাড়ে ৬ কোটি সিমকার্ড অনিবন্ধন রয়েগেছে। সরকারের পক্ষ থেকে নির্ধারিত ৩০ এপ্রিলের মধ্যে সব সিম নিবন্ধন না করা হলে তা বন্ধ করে দেয়া হবে বলে আগেই জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।

বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালুর প্রথম চার মাসে (১৭ এপ্রিল পর্যন্ত) পুনঃনিবন্ধন হয়েছে ৬ কোটি ৩৫ লাখ সিমকার্ড। আরো এক কোটি সিমের নিবন্ধন করতে এসেও জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে আঙ্গুলের ছাপ না মেলার কারণে গ্রাহকরা নিবন্ধন করাতে পারেননি।

গত সোমবার বিটিআরসির প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশের ছয়টি মোবাইল ফোন অপারেটরের বর্তমান গ্রাহকসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩ কোটি ৮ লাখ ৮১ হাজার। ফলে অর্ধেকেরও বেশি সিম এখনো অনিবন্ধিত রয়ে গেছে।

তবে পুনঃনিবন্ধনের এ অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ। তিনি জানান, এ পর্যন্ত যতটা অগ্রগতি হয়েছে তা বেশ সন্তোষজনক। শেষ দিনগুলোতে এ গতি আরো বেড়ে যাবে বলে তিনি মনে করেন।

সিম নিবন্ধনে গ্রামীণফোন ও বাংলালিংক কিছুটা এগিয়ে থাকলেও রাষ্ট্রায়ত্ত অপারেটর টেলিটক অনেক পিছিয়ে আছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সিম নিবন্ধন করেছে দেশের শীর্ষ অপারেটর গ্রামীণফোন। তাদের নিবন্ধিত সিম তিন কোটি ২৩ লাখ ছাড়িয়েছে। বিটিআরসির হিসাবে ফেব্রুয়ারি শেষে গ্রামীণফোনের মোট গ্রাহক রয়েছে ৫ কোটি ৬২ লাখ। তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলালিংক। অপারেটরটির ৩ কোটি ১৯ লাখ গ্রাহকের বিপরীতে এখন পর্যন্ত নিবন্ধন করেছে এক কোটি ৭৫ লাখ ৫৫ হাজার সিম। আর জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে আঙ্গুলের ছাপ না মেলায় আরো ১০ লাখ সিম নিবন্ধন করা সম্ভব হয়নি।

মোবাইল অপারেটর রবি এই প্রক্রিয়ায় অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। এখন পর্যন্ত তারা মাত্র ৩৫ শতাংশ সিম পুনঃনিবন্ধন করতে পেরেছে। ২ কোটি ৭৪ লাখ সিমের বিপরীতে অপারেটরটি সফলভাবে নিবন্ধন করেছে মাত্র ৯৭ লাখ ৭৭ হাজার সিম। রবির মতোই পিছিয়ে রয়েছে তাদের সঙ্গে একীভূত হওয়ার অপেক্ষায় থাকা এয়ারটেলও। এক কোটি ১ লাখ সিমের মধ্যে তারা সফলভাবে নিবন্ধন করেছে মাত্র ৩৬ লাখ ১৪ হাজার সিমের। আর দেশের একমাত্র সরকারি মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটক ৪২ লাখ সিমের মধ্যে মাত্র ২ লাখ ৬ হাজার সিমের নিবন্ধন করেছে। সিটিসেল করেছে মাত্র ৪৫ হাজার নিবন্ধন।

এর আগে গত মঙ্গলবার সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মোবাইল সিম পুনঃনিবন্ধনের জন্য বায়োমেট্রিক নিবন্ধন বুথ চালুর সময় ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের সময় বাড়ানো হবে না। আগামী ৩০ এপ্রিলের পর সব অনিবন্ধিত সিম/রিম সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যারা সিম ‘ভেরিফিকেশন’ করবেন না তাদের আগামী ১ মে থেকে স্বল্প সময়ের জন্য ডিঅ্যাকটিভ করে দেয়া হবে। পর্যায়ক্রমে সিম বন্ধ রাখার সময় বাড়ানো হবে এবং এক সময় তা পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া হবে।

উল্লেখ্য, ভুয়া পরিচয় দিয়ে মোবাইলের সিমকার্ড কিনে নানা অপরাধে ব্যবহারের অভিযোগ বাড়তে থাকায় গত বছর গ্রাহকদের সিম পুনঃনিবন্ধনের উদ্যোগ নেয় সরকার। এরপর গ্রাহকদের সিমের তথ্য যাচাইয়ে শুরু হয় জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভাণ্ডার ব্যবহারের প্রক্রিয়া। গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর সিম নিবন্ধনে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু করে সরকার, যা চলতি মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে শেষ করার কথা।

রাজধানীতে সিম নিবন্ধনের ধুম: আর মাত্র ৯ দিন বাকি থাকায় বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের ধুম পড়েছে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়। বিভিন্ন বয়েসের মানুষ তাদের সিম নিবন্ধনের জন্য ভিড় করছেন রাস্তায় ও বিভিন্ন দোকানের বুথগুলোতে।

রাজধানীর তেজগাঁওয়ের নাখালপাড়ায় দেখো গেছে সিম নিবন্ধনের দীর্ঘ লাইন। গ্রহকরা টেলিটক, গ্রামীণফোন, সিটিসেল, এয়ারটেল, বাংলালিংক এবং রবি তাদের গ্রাহকদের নিবন্ধন সেবা দিচ্ছে বুথগুলো। তবে গ্রাহকদের অভিযোগ বুথের সংখ্যা খুবই কম আরো যদি আরো বুথ বাড়ানো হত তাহলে ভালো হত।

এতোদিন কেন নিবন্ধন করেননি জানতে চাইলে রমিজ উদ্দিন নামে একজন বলেন, এতদিন সিম নিবন্ধন করিনি আদালতের রিটের কারণে। এখন আদালত রায় দিয়েছেন সিম নিবন্ধন করতেই হবে। তাই সরকারি নিয়ম মেনে সিম নিবন্ধন করছি।