English Version
আপডেট : ২৮ মার্চ, ২০১৬ ০১:০১

রাষ্টধর্ম নিয়ে রুলের চূড়ান্ত শুনানি আজ

অনলাইন ডেস্ক
রাষ্টধর্ম নিয়ে রুলের চূড়ান্ত শুনানি আজ

সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে অন্তর্ভুক্তির বিধান নিয়ে হাইকোর্টের জারি করা রুলের শুনানির জন্য আবেদনটি কার্যতালিকায় এসেছে। আজ সোমবার বিচারপতি নাঈমা হায়দারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চে এই শুনানি হবে। বেঞ্চের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল।

 

হাইকোর্টের সোমবারের কার্যতালিকা অনুযায়ী বেলা দুইটা থেকে শুনানি হবে বলে জানান রিটের পক্ষের আইনজীবী জগলুল হায়দার আফ্রিক।

এদিকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানে অন্তর্ভুক্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জের রিট প্রত্যাহার ও শুনানি না করতে সভা-মিছিল করছে হেফাজতে ইসলামসহ ইসলামী দল ও সংগঠনগুলো। এরই মধ্যে তারা একাধিক কর্মসূচিও দিয়েছে। সোমবার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে জামায়াতে ইসলামী।

আওয়ামী লীগের গত মেয়াদে ২০১১ সালের ২৫ জুন পঞ্চদশ সংশোধনীতে সংবিধানের ওই ২ অনুচ্ছেদ আবারও সংশোধন করা হয়। প্রতিস্থাপিত ২ (এ) অনুচ্ছেদে বলা হয়, ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, তবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ অন্যান্য ধর্ম পালনে রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও সমঅধিকার নিশ্চিত করবে।’

এরপর রিট আবেদনকারী পক্ষ পঞ্চদশ সংশোধনীতে থাকা ওই বিধান চ্যালেঞ্জ করে সম্পূরক আবেদন করে। শুনানি নিয়ে ২০১১ সালের ১ ডিসেম্বর বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ সম্পূরক রুল দেন। রুলে পঞ্চদশ সংশোধনীতে আনা ২ (এ) অন্তর্ভুক্তি কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।

জাতীয় সংসদের স্পিকার এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

রিট আবেদনকারীরা হলেন- বিচারপতি দেবেশ চন্দ্র ভট্টাচার্য, বিচারপতি কে এম সোবহান, অধ্যাপক খান সরওয়ার মুর্শিদ, ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ, অধ্যাপক কবীর চৌধুরী, শিল্পী কলিম শরাফী, অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন, সেক্টর কমান্ডার অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল চিত্তরঞ্জন দত্ত, কলামিস্ট বদরুদ্দীন উমর, সাংবাদিক ফয়েজ আহমদ, অধ্যাপক বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর ও অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

অ্যামিকাস কিউরি রিট আবেদনের শুনানিতে আইনি সহায়তা দেয়ার জন্য হাইকোর্ট অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে ১৪ জ্যেষ্ঠ আইনজীবীর নাম ঘোষণা করেন। তারা হলেন- টি এইচ খান, কামাল হোসেন, রফিক-উল হক, এম আমীর-উল ইসলাম, এম জহির, মাহমুদুল ইসলাম, এ এফ হাসান আরিফ, রোকনউদ্দিন মাহমুদ, আখতার ইমাম, ফিদা এম কামাল, আজমালুল হোসেন কিউসি, আবদুল মতিন খসরু, ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, এ এফ এম মেসবাহ উদ্দিন। এ বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি আদালত এই মামলায় আইনি সহায়তাকারী হিসেবে ১৪ অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগের আদেশ প্রত্যাহার করেন।

উল্লেখ্য, সামরিক শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সময় ১৯৮৮ সালের ৫ জুন চতুর্থ জাতীয় সংসদে সংবিধানের অষ্টম সংশোধনী অনুমোদন হয়। এর মাধ্যমে সংবিধানে অনুচ্ছেদ ২-এর পর ২ (ক) যুক্ত হয়। ২ (ক)-তে বলা হয়, ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম হবে ইসলাম, তবে অন্যান্য ধর্মও প্রজাতন্ত্রে শান্তিতে পালন করা যাইবে’।

এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তখন ‘স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ কমিটির’ পক্ষে সাবেক প্রধান বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেন, কবি সুফিয়া কামাল, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীসহ ১৫ বিশিষ্ট নাগরিক হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। এরপর প্রায় ২৩ বছর সেটি পড়ে ছিল। ২০১১ সালের ৮ জুন রিট আবেদনকারী পক্ষ একটি সম্পূরক আবেদন করে। তার প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সেদিনই বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের তৎকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল দেন।

রুলে সংবিধানের ওই সংশোধনীর মাধ্যমে ২ (ক) অন্তর্ভুক্তি কেন অসাংবিধানিক ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।