English Version
আপডেট : ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ১৬:১৯

এবার ঋণ শোধের পালা

নিজস্ব প্রতিবেদক
এবার ঋণ শোধের পালা

রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘তোমাদের অনেক ঋণ জমেছে দেশ ও জাতির কাছে। এখন তোমাদের সেই ঋণ শোধের পালা। দেশের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তোমরা একযোগে কাজ করবে। বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘলালিত স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে অগ্রসেনানী হিসেবে আপন স্থান করে নেবে।’

মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ৭ম সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ এসব কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘কৃষিখাতে আজ যে অভাবনীয় সাফল্য দৃশ্যমান এর পেছনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বাকৃবি’র গ্র্যাজুয়েটসহ অন্যান্য কৃষিবিদগণ। তাঁরা নিরন্তর গবেষণার মাধ্যমে পরিবেশ উপযোগী প্রযুক্তি উদ্ভাবনসহ সব পর্যায়ে তা দ্রুত হস্তান্তর ও বিস্তারের কাজে নিজেদের সারাক্ষণ নিয়োজিত রেখেছেন। উত্তরসূরীদের জন্য সামনে চলার পথ প্রদর্শন করেছেন।’

বাকৃবি'র প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ বলেন, ‘অতি সম্প্রতি বেশ কিছু শিক্ষা ও গবেষণার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এখানে। এর মধ্যে আইসিএফ অন্যতম। নেদারল্যান্ড সরকারের আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত এই সেন্টার থেকে খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদানের পাশাপাশি একটি অত্যাধুনিক ফুড সেফটি ল্যাব গড়ে তোলা হয়েছে।

এছাড়া, “হাওড় ও চর উন্নয়ন ইনস্টিটিউট” স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে এবং কক্সবাজারে “সামুদ্রিক মাৎস বিজ্ঞান, মাঠ গবেষণা ও শিক্ষাকেন্দ্র” স্থাপনের কাজ এগিয়ে চলছে।’

তিনি বলেন, ‘সেশনজটমুক্ত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অন্যতম। এখানে প্রতিবছর অধিক হারে ছাত্রীরা ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।’

সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য বলেন, ‘সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও এ বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে একটি নতুন ছাত্রী হল এবং শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য একটি বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণসহ শিক্ষা ও গবেষণা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার।’

স্বাগত বক্তব্যে বাকৃবি’র উপাচার্য প্রফেসর ড. আলী আকবর বলেন, দেশের খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণতা, ক্ষুধা-মঙ্গা দূরীকরণসহ কৃষির ক্ষেত্রে সবুজ বিপ্লব আমাদের কৃষিবিদদের অবদান। তাই আজ থেকে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের মানমর্যাদাকে সমুন্নত রাখার দায়িত্ব তোমাদের। আন্তরিকতা, মেধা, দক্ষতা ও প্রযুক্তিবিজ্ঞান প্রয়োগ করে দেশের কৃষি উৎপাদনে নতুন গতিশীলতা সঞ্চার হবে বলেও নবীনদের নিয়ে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

সমাবর্তনে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিককের উপাচার্য প্রফেসর ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী ও স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আলী আকবর। সমাবর্তনে ধর্মমন্ত্রী আলহাজ্ব অধ্যক্ষ মতিউর রহমান ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। 

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সপ্তম সমাবর্তনে জুলাই-ডিসেম্বর ২০১০ থেকে জানুয়ারি-জুন ২০১৪ পর্যন্ত স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডি পর্যায়ে ডিগ্রি প্রাপ্তদের মোট সংখ্যা ৪ হাজার ৯’শ ৯ জন। এদের মধ্যে ১৭ জন পিএইচ.ডি. ২’শ ৫৫জন স্নাতকোত্তর এবং ৬’শ ১৪ জন স্নাতকসহ সর্বমোট ৮৮৬ জন ডিগ্রিপ্রাপ্ত কৃষিবিদ সমাবর্তনে উপস্থিত ছিলেন। পরে রাষ্ট্রপতি স্নাতক পর্যায়ের ৬’শ ১৪ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫ কৃতি শিক্ষার্থার গলায় গোল্ড মেডেলে পরিয়ে দেন।