English Version
আপডেট : ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ১৯:০২

এখন থেকে দেশের মাটিতেই চিকিৎসা নেব: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
এখন থেকে দেশের মাটিতেই চিকিৎসা নেব: প্রধানমন্ত্রী

 

বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর অনেকেই চিকিৎসার জন্য ভারত, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে যান। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদেরও বিদেশে চিকিৎসা নিতে যেতে দেখা যায় নিয়মিত। এতে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয়। এ নিয়ে কথাবার্তাও কম হয়নি। এই ইস্যু নিয়ে গত ডিসেম্বরে ঢাকায় রীতিমতো মানববন্ধনে করেছিল সিটিজেন রাইটস মুভমেন্ট নামের একটি সংগঠন। শুক্রবার গাজীপুরের কাশিমপুরে মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ শেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি যদি কখনও অসুস্থ হয়ে পড়ি তাহলে আপনারা আমাকে বিদেশে নেবেন না। এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ওঠাবেন না। আমি দেশের মাটিতেই চিকিৎসা নেব। এই হাসপাতালে চিকিৎসা নেব।

নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য শুক্রবার সকাল ৮টায় গণভবন থেকে বের হন শেখ হাসিনা। গাজীপুরের কাশিমপুরে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে হাসপাতালে তাকে স্বাগত জানান হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জয়তুন সোলায়মান ও পরিচালক আরিফ মাহমুদ। এসময় প্রধানমন্ত্রী নিজেই হাসপাতালের ফরম পুরন করেন ও চেকআপের ফি দেন। এরপর হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ্, নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত, চক্ষু বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. দীন মো. নুরুল হক ও অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী। এছাড়া ডা. ওয়াজিহা আক্তার জাহান, ডা. বনজবা ও ডা. শাহানা ফেরদৌস তার স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অংশ নেন।

স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে হাসপাতালের চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও উপস্থিত বিশিষ্টজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী। হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। একই সাথে আর্থিকভাবে অসচ্ছল রোগীদের সুবিধার জন্য প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসকদের ‘কনসালটেন্সি’ ফি কমানোর পরামর্শ দেন। তিনি হাসপাতালের ফার্মেসির আধুনিকায়ন ও নিয়মিত চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়ানোরও পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আরও আগেই আমার বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে এখানে আসার ইচ্ছা ছিল। যেহেতু দেশে জনসংখ্যার তুলনায় ডাক্তারের প্রয়োজন আরও রয়েছে। এছাড়া এখানে রয়েছে একটি আন্তর্জাতিক মানের নার্সিং ইনস্টিটিউট। কী করে জনগণের স্বাস্থ্যসেবা আরও বেশি করে নিশ্চিত করা যায়, সেই কারনে আমরা চিন্তা করেছি, ভবিষ্যতে এখানে আমরা একটি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করব।

২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর মালয়েশীয় প্রতিষ্ঠান কেপিজের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের যৌথ উদ্যোগে এ হাসপাতালের যাত্রা শুরু হয়। এর নামকরণ হয় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের নামে, যিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মা।

হাসপাতালের ফান্ডে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের পক্ষ থেকে আরও ১০ কোটি টাকার অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, যেহেতু হাসপাতালটি আমাদের মায়ের নামে, তাই এখানে আমাদের পরিবারের সবাই অনুদান দেবে। আপনাদের এবং হাসপাতালের যে কোনো সমস্যা আমাদের নিয়মিত জানাবেন। এখান থেকে আমরা কোনো লাভ নিতে চাই না। ফিক্সড ডিপোজিটের জন্য আরও যে ১০ কোটি টাকার ফান্ড দেওয়া হবে সেখান থেকে যে টাকা আসবে তা দিয়ে গরীব ও মুক্তিযোদ্ধাদের ফ্রি ট্রিটমেন্ট দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে এখানে ৩০% গরীব রোগী ফ্রি ট্রিটমেন্ট পাচ্ছেন।