English Version
আপডেট : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ১৮:৪১

সকল হুমকি অগ্রাহ্য করে একুশের গ্রন্থমেলায় মানুষের ঢল

সকল হুমকি অগ্রাহ্য করে একুশের গ্রন্থমেলায় মানুষের ঢল

 

অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলার আবহটা একটু ভিন্ন। গতবছর বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায়কে এই মেলার পাশেই কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তারপর গত এক বছরে বেশ কয়েকজন লেখক ও প্রকাশককে প্রাণ দিতে হয়েছে কেবল লেখালেখি ও লেখা প্রকাশের অপরাধে। গত কয়েক বছরে ধর্মীয় উগ্রবাদীরা তাদের বেপরোয়া অবস্থান স্পষ্ট করেছে। তাদের অবস্থান ও বক্তব্য বাঙলা, বাংলাভাষা, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বাঙালির মুক্ত সংস্কৃতির জন্য আজ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওরা প্রকাশ্য উল্লম্ফেনর মধ্য দিয়ে শঙ্কিত করে তুলতে চায় গোটা বাংলাদেশকে। সেই পশ্চাতপদ মৌলবাদীদের হুমকি অগ্রাহ্য করে বাঙ্গালীর প্রাণের বইমেলার প্রথম দিনেই নেমেছে মানুষের ঢল।

গত বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঘাতকদের বর্বর হামলার শিকার হয়ে প্রাণ দিতে হয়েছে বিজ্ঞান লেখক ও মুক্তমনা ব্লগার ড. অভিজিৎ রায়কে। ওই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন অভিজিতের স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা। এর পর একে একে একই কায়দায় উগ্রবাদী হামলায় উপর্যুপরি প্রাণ দিতে হয়েছে লেখক ও ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবু, নিলাদ্রী চট্টোপাধ্যায় নিলয়, অনন্ত বিজয় দাস এবং প্রকাশক ফয়সাল আরেফীন দীপনকে। এ সময়ের মধ্যে উগ্রবাদীদের হামলার শিকার হয়েছেন প্রকাশক আহমেদুর রশীদ টুটুল, লেখক-ব্লগার সুদীপ কুমার বর্মণ ও তারেক রহিম।

জাতির রুচি, মনন, চিন্তা-চেতনা, সাংস্কৃতিক শক্তি, ঐতিহ্যিক উত্তরাধিকার, সংগ্রামের চেতনাকে তুলে ধরার প্রধান এ উৎসব শত আঘাতেও মলিন হবে না-এমন প্রত্যয়ই বারবার উচ্চারিত হয়েছে সবার মাঝে। তাই প্রাণের মেলা অমর একুশে বইমেলার প্রথম দিনেই হাজার হাজার মানুষের ঢল রুখতে পারেনি কেউ। এরইমধ্যে উগ্রবাদীরা বইমেলা নিয়েও তাদের আক্রোশ প্রকাশ করেছে। কিন্তু সমস্ত আক্রোশ ও হুমকি তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে বাঙালি আজ থেকে মিলিত হচ্ছে টানা এক মাসের মিলনমেলায়।

গত বারের চেয়ে এবারের মেলার পরিসর বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তরফ থেকে জানানো হয়েছে, নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার বলয় তৈরি করা হয়েছে পুরো বইমেলাকে ঘিরে। কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বইমেলায়। মেলা ও মেলার আশেপাশে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এবার। তাছাড়া পুরো বইমেলাকে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। পুলিশের বিশেষ টিম সার্বক্ষণিক নজর রাখবে সেই ক্যামেরায়। ফলে নিশ্চিন্তে ঘুরাফেরা করতে পারবেন দর্শনার্থীরা। এরপরও পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, লেখক প্রকাশকদের ব্যাক্তিগত নিরাপত্তার প্রয়োজন হলে তার ব্যাবস্থা করা হবে।