English Version
আপডেট : ৩০ জানুয়ারি, ২০১৬ ১৮:৪৩

বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনীর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ

অনলাইন ডেস্ক
বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনীর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ

সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে শিশুদের যৌন নিপীড়নে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীও অভিযোগের মুখে রয়েছে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর এসেছে।জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব (ফিল্ড সাপোর্ট) অ্যান্থনি ব্যানবারি শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে যে নতুন অভিযোগগুলো তুলে ধরেন, তাতে বাংলাদেশি সৈন্যদের সংশ্লিষ্টতার কথাও রয়েছে বলে রয়টার্স এবং বিবিসি জানিয়েছে।

মধ্য আফ্রিকার দেশটিতে মুসলিম-খ্রিস্টান সংঘাত থামাতে ২০১৩ সাল থেকে বিদেশি সৈন্য রয়েছে। প্রথমে যায় ফ্রান্সের সৈন্যরা। পরের বছর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীও মোতায়েন করা হয় দেশটিতে। সেখানে বর্তমানে ১০ হাজারের বেশি বিদেশি সৈন্য কাজ রয়েছে। ২০১৫ সালে এই দেশটিতে বিদেশি সৈন্যদের দ্বারা শিশুদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল। সংবাদ সম্মেলনে নতুন ১২টি অভিযোগ তুলে ধরেন জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব, যা নিয়ে ঘটনার সংখ্যা বেড়ে ২২টি হল।

ছয়টি শিশু অভিযোগ করেছে, বাংলাদেশ, কঙ্গো, নাইজার, মরক্কো ও সেনেগালের শান্তিরক্ষীদের দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে তারা।ছয়টি শিশুর অভিযোগ ফ্রান্স, জর্জিয়া ও আরেকটি ইউরোপীয় দেশের সৈন্যদের দিকে। শিশুদের অভিযোগ অনুযায়ী, ঘটনাগুলো ঘটেছে ২০১৪ সালে দেশটির রাজধানী বাঙ্গির বিমানবন্দরের পাশের একটি শরণার্থী শিবিরের কাছে।

বিবিসি জানিয়েছে, এই শিশুদের কয়েকজন (১৪ থেকে ১৬ বছর বয়সী) অভিযোগ করেছে যে জর্জিয়ার সৈন্যরা তাদের ধর্ষণ করেছে। ফরাসি সৈন্য দ্বারা যৌন নিগ্রহের শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন সাত বছর বয়সী একটি মেয়ে এবং নয় বছর বয়সী একটি ছেলে। তবে কতটি ঘটনায় বাংলাদেশি কতজন সৈন্যের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এসেছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

এই অভিযোগ ওঠার পর গত মাসে একটি স্বাধীন তদন্ত সংস্থা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের যৌন নির্যাতনে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছিল। এখন জাতিসংঘও তা স্বীকার করল। শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে বাংলাদেশসহ সংশ্লিষ্ট অধিকাংশ দেশ তদন্ত শুরু করেছে বলে জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানিয়েছে। নাইজার ও সেনেগালের সৈন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জাতিসংঘই তদন্ত করছে।নিউ ইয়র্কে সংবাদ সম্মেলনে অ্যান্থনি ব্যানবারি আবেগঘন কণ্ঠে বলেন, যারা জাতিসংঘের হয়ে শান্তি রক্ষার কাজ করে, যারা নিরাপত্তা দেওয়ার কাজ করে; এই ধরনের অভিযোগ তাদের কতটা ক্ষুব্ধ করেছে, তা বলে বোঝানোর নয়।

নির্যাতিতদের জন্য জাতিসংঘের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সব কিছু করার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, এর বিচার হবে যাতে ভবিষ্যতে আর এমন ঘটনা না ঘটে।শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগের বিষয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার মুখপাত্র রুপার্ট কলভিল জেনেভায় সাংবাদিকদের বলেন, এটা কীভাবে বিস্তৃত হচ্ছে, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের ঘটনাই তা মেলে ধরেছে।শান্তিরক্ষীরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন, তা অস্বীকারের কোনো উপায় নেই। তারপরও এই বাহিনীর কিছু সদস্যের এই ধরনের অপকর্ম আমরা এড়িয়ে যেতে পারি না।