English Version
আপডেট : ২৬ জানুয়ারি, ২০১৬ ১০:২৮

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি ঠেকাতে আইন তৈরি হচ্ছে

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি ঠেকাতে আইন তৈরি হচ্ছে

 

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি বা মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করলে শাস্তির বিধান রেখে নতুন আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সাম্প্রতিক কটাক্ষের ঘটনায় বিভিন্ন মহল থেকে আইন তৈরির যে দাবি উঠেছে, তা বিবেচনা করে দেখা হচ্ছে। আইন কমিশন বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। এ নিয়ে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আইন কমিশন সূত্রে জানা যায়, এ নিয়ে আইনের প্রাথমিক খসড়া প্রায় চূড়ান্ত। আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে আইন ও মুক্তিযুদ্ধ–বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। জাতীয় সংসদ সচিবালয় সূত্র জানায়, সংসদের চলতি অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এই আইন করা হবে কি না, তা জানতে চেয়েছেন চট্টগ্রাম-৩ আসনের সাংসদ মাহফুজুর রহমান। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে যারা কটাক্ষ করে, তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।

উল্লেখ্য, গত ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেন, মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক আছে। তিনি বলেন, ‘আজকে বলা হয়, এত লাখ লোক শহীদ হয়েছে। এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে।’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম উল্লেখ না করে খালেদা জিয়া দাবি করেন, তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাননি। তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলে মুক্তিযুদ্ধ হতো না। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক মমতাজউদ্দীন আহমেদের আবেদন বিবেচনায় এনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করার অনুমতি দিয়েছে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে।

এর কয়েক দিন পর জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের ‘নির্বোধ’ বলে আখ্যায়িত করেন। তখন খালেদা জিয়া ও গয়েশ্বরের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করতে এবং স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতি রোধে কঠোর আইন করতেও সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বিশিষ্টজন, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পরিবারের সদস্য, বীরাঙ্গনা ও বিভিন্ন সংগঠন।

অত্যাচার-অবিচারকারী, খুনি, গণহত্যাকারীদের পক্ষে কথা বলবে, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গত ১৩ ডিসেম্বরের সভায় এ-সংক্রান্ত আইনের খসড়া তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আইন প্রণয়নে কমিশন সুপারিশ করলে মন্ত্রণালয় গুরুত্বের সঙ্গে তা আমলে নেবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী।