English Version
আপডেট : ১১ জানুয়ারি, ২০১৬ ১০:৫৭

লাগাতার কর্মবিরতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
লাগাতার কর্মবিরতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা

নতুন বেতনকাঠামোতে সিলেকশন গ্রেড বহাল ও বেতন গ্রেডের সমস্যা নিরসনের দাবিতে আজ সোমবার সকাল থেকে পূর্বঘোষিত লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করেছেন দেশের সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। এতে দেশের ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। চট্টগ্রাম, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে খবর নিয়ে জানা যায়, কোথাও কোনো ক্লাস-পরীক্ষা হচ্ছে না।তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু পূর্বঘোষিত পরীক্ষাগুলো নেওয়া হবে। নতুন করে কোনো পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হবে না। দাবি না মানা পর্যন্ত শিক্ষকদের এই কর্মবিরতি চলবে।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকেরা বেতন সমস্যা নিয়ে গত প্রায় আট মাস ধরে আন্দোলন করছেন। বর্তমানে দেশের ৩৭টি সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এগুলোতে ১২ হাজারেরও কিছু বেশি শিক্ষক রয়েছেন। এদিকে শিক্ষার্থীদের আশঙ্কা, বছরের শুরুর দিকে লাগাতার এই কর্মবিরতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আবারও সেশনজট শুরু হবে। সাম্প্রতিক সময়ে এই সেশনজট কমে গিয়েছিল।

গত বছরের মাঝামাঝিতে অষ্টম বেতন কাঠামো প্রস্তাবের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা নানা কর্মসূচিতে নিজেদের ‘মর্যাদাহানি ও সুবিধা কমে যাওয়ায়’ আপত্তি জানিয়ে আসছিল। গত মাসে বেতন কাঠামোর গেজেট প্রকাশের পর শিক্ষকদের বিরোধিতার মুখে সরকার একটি কমিটি গঠন করে। কিন্তু এখনও দাবি-দাওয়ার বিষয়ে কোনো সুরাহা হয়নি। সরকার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের দাবি পর্যালোচনায় কমিটি করে। কমিটির সভাপতি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত শিক্ষকদের নিয়ে বৈঠকও করেন। গত ৬ ডিসেম্বর বৈঠকে অর্থমন্ত্রী শিক্ষকদের তিনটি দাবি মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও ১০ দিন পর বেতন কাঠামোর গেজেটে তার প্রতিফলন ঘটেনি বলে শিক্ষকদের অভিযোগ। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক সমিতিগুলোর ফেডারেশনের বৈঠকে ১১ জানুয়ারি থেকে লাগাতার কর্মবিরতি ডাকে। এরপর  এক অনুষ্ঠানে বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রায় নয় মাস আগে অষ্টম বেতন কাঠামোর প্রস্তাব আসার পর গ্রেডে মর্যাদার অবনমন এবং টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাতিলের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আন্দোলন শুরু হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সমর্থক শিক্ষক নেতা অধ্যাপক ফরিদ বলেন, “আমাদেরকে নয় মাস ধরে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরিয়ে এ অবস্থায় নিয়ে এসেছে। আমলারা ইচ্ছা করেই এ পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। ওরা ভাবছে ওরা কুলীন লোক, ওদের পর্যায়ে কাউকে দেওয়া যাবে না।”তিনি আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যদি আমরা মাত্র ৫ মিনিটও বসি, তাহলেই এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।” কর্মবিরতির ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে সরকারের পক্ষ থেকে কেউ এখনও যোগাযোগ করেনি বলে জানান তিনি।