English Version
আপডেট : ৮ জানুয়ারি, ২০১৬ ০৯:৩৩

আরেফ হত্যায় ৩ আসামির ফাঁসি কার্যকর

নিজস্ব প্রতিবেদক
আরেফ হত্যায় ৩ আসামির ফাঁসি কার্যকর

 মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) নেতা কাজী আরেফ আহমেদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামির ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।

এই তিনজন হলেন- কুষ্টিয়ার মীরপুর উপজেলার রাজনগর গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে সাফায়েত হোসেন হাবিব,  কুর্শা গ্রামের উম্মতের ছেলে আনোয়ার হোসেন ও একই গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে রাশেদুল ইসলাম ঝন্টু।  

বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ১ মিনিট থেকে পর্যায়ক্রমে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে তিন জনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। রাত ১১টা ১ মিনিটে হাবিব ও আনোয়ার এবং রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে ঝন্টুর ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

তিন জনের লাশ শুক্রবার সকাল ৭টায় যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে হস্তান্তর করা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন সিনিয়র জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ।

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে তিনজনের ফাঁসি কার্যকরের জন্য বুধবার বিকালে ফাঁসির মঞ্চে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (কারা) টিপু সুলতান ও কারগারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ফাঁসির মঞ্চ পরিদর্শন করেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফাঁসির আসামি রাশেদুল ইসলাম ঝন্টুর পরিবারের ২জন সদস্য ও আনোয়ার হোসেনের পরিবারের ৬ সদস্য শেষ সাক্ষাত করেন।  

রাতে কারাগারে প্রবেশ করেন যশোরের জেলা প্রশাসক ড. হুমায়ুন কবীর, পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, সিভিল সার্জন শাহাদাত্‌ হোসেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল হাসান। রাতে তিন আসামিকে গোসল করানোর পর তাদের তওবা পড়ান কারা মসজিদের ইমাম রমজান আলী। রাতে স্বজনদের সাথে শেষ সাক্ষাতের পর তাদের খাবার খাওয়ানো হয়। এরপর তাদেরকে রায় পড়ে শোনানো হয়। নিম্ন আদালতের রায়, আপিল এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমার আবেদন নামঞ্জুর হওয়ার বিষয়টি তাদের জানানো হয়। এরপর তাদেরকে জমটুপি পড়িয়ে ফাঁসির মঞ্চে নেয়া হয়।

তাদের ফাঁসি কার্যকর করেন জল্লাদ তানভীর হাসান রাজু ও হযরত আলী। ফাঁসি কার্যকরের জন্য দু'দিন আগেই তাদেরকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে যশোরে নিয়ে আসা হয়। এ সময় জেলা প্রশাসনের ওই শীর্ষ কর্মকর্তাবৃন্দ ছাড়াও ডিআইজি (প্রিজন) টিপু সুলতান ফাঁসি মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালে ১৬ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ায় জাসদের একটি সমাবেশে ব্রাশফায়ারে কাজী আরেফসহ ৫ জন নিহত হন। ঘটনার পরদিন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ ইসহাক আলী বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।

মামলার বিচার শেষে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত দায়রা জজ ২০০৪ সালের ৩০ আগস্ট ১০ আসামিকে ফাঁসি ও ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ দেন। পরে একজনকে খালাস দিয়ে অপর ৯ জনের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ১১ জনের সবাইকে হাইকোর্ট খালাস দেন।

হাইকোটের্র রায়ের বিরুদ্ধে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত ৪ জনের মধ্যে ৩ জনের আপিল আবেদন খারিজ করে আদেশ দেন আপিল বিভাগ। এ ছাড়া যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ১১ জনের সবাইকে হাইকোর্ট খালাস দিয়ে যে রায় দেন, সে রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।