English Version
আপডেট : ১৪ মার্চ, ২০১৭ ১১:৩৪

অর্থের অভাবে কারাগারে অবরুদ্ধ কোটিপতির স্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক
অর্থের অভাবে কারাগারে অবরুদ্ধ কোটিপতির স্ত্রী

শীর্ষ আদালত জামিন মঞ্জুর করলেও স্রেফ টাকার অভাবে মুক্তি পাচ্ছেন না সারদা কাণ্ডে আটক মনোরঞ্জনা সিং। জামিন মঞ্জুর হয় গত ৬ ফেব্রুয়ারি। জামিনের শর্ত হলো দুই জন জামিনদারের মাধ্যমে দুই কোটি টাকার বন্ড দিতে হবে। এক মাসের বেশি পেরিয়ে গেছে, এক কোটি টাকাও জোগাড় করতে পারেননি মনোরঞ্জনা।  

অথচ তিনিই এক সময়ে ছিলেন কোটিপতির স্ত্রী। প্রাক্তন স্বামী মাতঙ্গ সিং ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন কংগ্রেসের শাসনামলে।

মনোরঞ্জনার আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী জানিয়েছেন, টাকার জন্য মনোরঞ্জনা বাবা-মায়ের দ্বারস্থ হয়েছেন। মনোরঞ্জনার বাবা কেদারনাথ গুপ্ত জানিয়েছেন, তাদের দিল্লির বসতবাড়ি ও কিছু সম্পত্তি আদালতের কাছে বন্ধক রেখে মনোরঞ্জনাকে টাকা পাঠাবেন।

সারদা কাণ্ডে ২০১৫ সালের অক্টোবরে মনোরঞ্জনাকে গ্রেফতার করে সিবিআই। দু'দিন সিবিআইয়ের হেফাজতে থাকার পর থেকেই তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। একের পর এক বেসরকারি হাসপাতাল বদল করে এখন তিনি সোনারপুরের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি রয়েছেন। জামিনের শর্ত পূরণ করতে না পারায়, সেখান থেকে বেরোতে পারছেন না। বন্দিদশাই কাটাচ্ছেন। এক জন পুলিশ তার পাহারায় থাকছেন।

গত ১৭ মাস ধরে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে মনোরঞ্জনা প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার বিল মিটিয়েছেন বলে দাবি সিবিআইয়ের। বিপ্লববাবু জানিয়েছেন, ওই টাকা তার ব্যবসায়ী ভাই মনীশ সিং দিয়েছেন। কিন্তু, এ বার জামিনের দুই কোটি টাকা জোগাড় করতে সমস্যা হচ্ছে। অথচ, এই মুহূর্তে মনোরঞ্জনার নামে সম্পত্তি কম নেই। ঘনিষ্ঠ মহলে মনোরঞ্জনা জানিয়েছেন, তার তিনটি অ্যাকাউন্টে ৯৭ লাখ টাকা রয়েছে। মাতঙ্গের কাছে তার ৬৩ কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে। ওই টাকা, সম্পত্তি ও তার নিউজ চ্যানেলের অফিস বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি।

এই অবস্থায় মনোরঞ্জনার ভরসা এখন তার বাবা কেদারনাথ। তিনি বলেন, এখন সম্পত্তি বন্ধক রেখে টাকা পাঠাব। পরে মনোরঞ্জনা সম্পত্তি ও ব্যাঙ্কের নগদ টাকা ফেরত পেলে, আমাদের সম্পত্তি ফেরত নিয়ে নেয়া হবে।  

মনোরঞ্জনার আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী জানিয়েছেন, কেদারনাথবাবুর সম্পত্তির মূল্যায়ন করা হচ্ছে। সপ্তাহ খানেক পরই আদালতে নথি পেশ করা হবে। তার বক্তব্য, সারদার সঙ্গে দিল্লির বাসিন্দা মনোরঞ্জনার ৪২ কোটি টাকার চুক্তি হয়েছিল খবর সম্প্রচার করা নিয়ে। ঠিক হয়েছিল গুয়াহাটিতে সারদার একটি চ্যানেল খুলবেন মনোরঞ্জনা।  

জেরার মুখে মনোরঞ্জনা সিবিআইকে জানিয়েছেন, সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন তাকে ২১ কোটি টাকা দিয়েছিলেন। সিবিআইয়ের অভিযোগ, চুক্তি মতো সেই টাকা খরচ না করে সারদার কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন মনোরঞ্জনা।