English Version
আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ১২:৩৭

ফোর জি থেকে আয় হবে ১১ হাজার কোটি টাকা

অনলাইন ডেস্ক
ফোর জি থেকে আয় হবে ১১ হাজার কোটি টাকা

দেশের টেলিযোগাযোগ খাতে চালু হতে যাওয়া চতুর্থ প্রজন্মের (ফোর জি) থেকে সরকারের আয় হবে ১১ হাজার কোটি টাকা। আর এই সেবা আগামী ডিসেম্বর মাস থেকেই শুরু করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। আর এই ফোরজি সেবায় নতুন অপারেটর আসার সুযোগও রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি। আজ বুধবার টেলিযোগাযোগ বিভাগে ফোরজি লাইসেন্স বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই তথ্য জানান। এ সময় টেলিযোগাযোগ সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদারসহ বিটিআরসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। জানা যায়, তরঙ্গ বরাদ্দের চূড়ান্ত নীতিমালায়, ১৮০০ মেগাহার্টজের তরঙ্গ নিলামে প্রতি মেগাহার্টজের ভিত্তিমূল্য ৩০ মিলিয়ন ডলার, থ্রি জির ২১০০ মেগাহার্টজের প্রতি মেগাহার্টজ ২৭ মিলিয়ন ডলার এবং ৯০০ মেগাহার্টজের প্রতি মেগাহার্টজ ৩০ মিলিয়ন ডলার ভিত্তিমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ফোরজি এবং তরঙ্গ নিলাম নিয়ে অপারেটরদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে জানিয়ে তারানা হালিম বলেন, মূল্যে পরিবর্তন করার আর ইচ্ছা নাই। যেমন আছে তেমনই থাকবে। ইমপ্লিমেন্টেশন, রোল আউট (বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু)- নিয়ে অপারেটরদের সাথে কথা বলে তাদের জন্য একটু সহজসাধ্য করে না দিলে, ঠিকভাবে রোল আউট করতে পারবে না। প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের টার্গেট হচ্ছে, নভেম্বরের শেষের মধ্যে আমরা (ফোরজি তরঙ্গের) নিলাম শেষ করব। আর ডিসেম্বরের মধ্যে ফোর-জি সুবিধা জনগণকে দিতে পারব। এটি আমরা টার্গেট বলছি এই কারণে যে, এর মধ্যে কিছু ইকুইপমেন্ট আমদানির বিষয় আছে, সেটির উপর আমাদের হাত নেই। আমাদের টার্গেট মতো আনুষঙ্গিক কাজ সম্পন্ন করব ডিসেম্বরের মধ্যে। ফোরজি তরঙ্গ নিলাম এবং ফোরজি সেবা দিতে অপারেটরদের বিদ্যমান প্রযুক্তি নিরপেক্ষতায় রূপান্তর বাবদ সরকার ১১ হাজার কোটি টাকা আয় করবে। তরঙ্গ বরাদ্দের খসড়া নীতিমালা থেকে চূড়ান্ত নীতিমালায় কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে বলেও জানান তিনি। তারানা হালিম বলেন, আবেদন করার যোগ্যতার ক্ষেত্রে কোনো অপারেটরের বিদেশি অংশীদারকে বাংলাদেশ থেকে কোনো ঋণ না নিয়ে বিনিয়োগের যে বিধানটি ছিল, সেটি বাদ দিয়েছি; তারা বাংলাদেশের যে কোনো ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারবেন। তরঙ্গ নিলাম এবং ফোর-জি লাইসেন্সিং গাইডলাইন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুমোদন দিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, গাইডলাইন অনুযায়ী ২১০০ মেগাহার্টজ, ১৮০০ মেগাহার্টজ এবং ৯০০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ নিলাম হবে। এই নিলামে যে অপারেটররা আছেন তারা অংশ নিতে পারবেন। প্রাক মূল্যায়নে উত্তীর্ণ নতুন প্রতিষ্ঠান ২১০০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ নিলামে অংশ নিতে পারবে। এই ব্যান্ডে বিজয়ী হলে পরবর্তী সময়ে তারা ১৮০০ ও ৯০০ মেগাহার্টজের তরঙ্গ নিলামে অংশ নিতে পারবে। তরঙ্গ নিলামে বরাদ্দ করা তরঙ্গ ‘প্রযুক্তি নিরপেক্ষ’ হবে জানিয়ে প্রতিন্ত্রী বলেন, এই তরঙ্গে টু-জি, থ্রি-জি এবং ফোর-জি এলটি সেবা দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা যাবে। মোবাইল অপারেটররা তাদেরকে আগে বরাদ্দ দেওয়া তরঙ্গ প্রযুক্তি নিরপেক্ষতায় রূপান্তর করতে পারবে জানিয়ে তিনি বলেন, এজন্য প্রতি মেগা হার্টজে সাড়ে ৭ মিলিয়ন ডলার ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি জানান, ফোরজি লাইসেন্সের জন্য অপারেটরদের আবেদন ফি হিসেবে ৫ লাখ টাকা দিতে হবে। ১০ কোটি টাকায় লাইসেন্স এবং বার্ষিক লাইসেন্স নবায়ন ফি ৫ কোটি টাকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। ফোরজি সেবা সর্বস্তরে পৌঁছাতে কাজ শুরুর বাধ্যবাধকতা থ্রিজি লাইসেন্সের মতোই করা হয়েছে বলে জানান তিনি। তারানা বলেন, কল রেকর্ডের ক্ষেত্রেও আমার তথ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। অন্যান্য ক্ষেত্রে সে রকম কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি, যেমন ছিল তেমনই মোটামুটি রাখা হয়েছে। ফোরজি সেবার মাধ্যমে সেবার মান উন্নত হবে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ২০১৩ সালে স্পেকট্রাম (তরঙ্গ) অকশনের সময় অপারেটররা স্পেকট্রাম নেননি। তাই আমি মনে করি এই স্পেকট্রাম অকশনের মধ্য দিয়ে শুধু ফোর-জি সেবা জনগণের কাছে পৌঁছাবে সেটিই নয়, সেবার মানও উন্নত হবে।  নিলামে অপারেটররা অংশ নেবে আশা প্রকাশ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্পেকট্রাম কেনার ক্ষেত্রে কৃপণতা করার সুযোগ নাই। মার্জারের ( রবি-এয়ারটেল) পরে এখন মার্কেটে অনেক প্রতিযোগিতা। কিছু অপারেটরের টিকে থাকার প্রতিযোগিতা, কিছু অপারেটরের নাম্বার ওয়ানে যাওয়ার প্রতিযোগিতা। কাজেই প্ল্যান সময় মতো করেছি, যাতে সবাই কেনেন। অপারেটরের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে মূল্যও কমিয়েছি। বলেছি, এবার কোয়ালিটি অব সার্ভিসের ব্যাপারে সরকার কোনো কমপ্রোমাইজ করবে না। টেক নিউট্রালিটি দিয়েছি, এটা তাদের দীর্ঘদিনের চাহিদা।