English Version
আপডেট : ১৫ অক্টোবর, ২০১৭ ১০:৩৩

আধুনিক শহর গড়ায় এলাকাবাসীর ‘না’

অনলাইন ডেস্ক
আধুনিক শহর গড়ায় এলাকাবাসীর ‘না’

পুরান ঢাকাকে বদলাতে রাজউকের ব্লকভিত্তিক পাইলট প্রকল্প স্থানীয়দের আপত্তিতে স্থগিত ঘোষণা করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন। গতকাল শনিবার ডিএসসিসি নগর ভবনে আয়োজিত পুরান ঢাকাকে আধুনিক শহর গড়ে তোলার লক্ষ্যে পরীক্ষামূলকভাবে বংশাল পাইলট প্রকল্পের বাস্তবায়ন নিয়ে সম্ভাবতা যাচাইবিষয়ক মতবিনিময় সভায় এ ঘোষণা দেন মেয়র। সভায় রাজউক চেয়ারম্যান আবদুর রহমান, স্থানীয় ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবু সাঈদসহ প্রায় ৫০ জন জমির মালিক উপস্থিত ছিলেন।

সাঈদ খোকন বলেন, রাজউকের প্রতি আস্থা না থাকায় কেউ এই প্রকল্প বংশালে চান না। তাই এটি স্থগিত করা হলো। তবে আমরা এ প্রকল্পটি করতে চাই। ইংলিশ রোড, বাবুবাজারের দিকে ৭ একর জমি দখলে আছে। আপনারা দখলদার উচ্ছেদে সহায়তা করুন। সেখানেই আরবান রিডেভেলপমেন্ট প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারব। এরআগে বংশাল এলাকার একাধিক জমির মালিক তাদের অভিমত প্রকাশ করেন। সে সময় সবাই এই প্রকল্পের বিরোধিতা করেন।

বংশাল পঞ্চায়েত সদস্য আবদুল হাই বলেন, আমাদের ভবনে দোকান আছে। ভাড়া পাই। আবার আমাদের ওয়ারিশও আছে। আর এই প্রজেক্ট বাস্তবায়নে বলা হচ্ছে, তিন বছরের মতো সময় লাগবে। এ সময় আমরা কোথায় থাকব। আর যে ভাড়া পাই, সে টাকা কে দেবে। আবার ওয়ারিশরাও কীভাবে তাদের প্রাপ্য পাবেন, এসব নিশ্চিত করতে হবে। তাই এই প্রকল্পটি অন্য জায়গায় বাস্তবায়ন করে আগে আস্থা অর্জন করুন।

ব্যবসায়ী এনায়েতুল্লাহ বলেন, বংশালে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। তাই অন্য জায়গায় করে আগে আস্থা অর্জন করুন। এ ছাড়া বংশাল এলাকার পঞ্চায়েত সভাপতি হাজী আওলাদ হোসেনসহ স্থানীয় বাসিন্দা হাজী রহমত উল্লাহ, হাজী নাসির উদ্দিন ও হাজী মোস্তফা রাজউকের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে বলেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গেলে রাজউক অনেক খরচের মুখোমুখি হবে। এ ছাড়া আমাদের এলাকা পুরান ঢাকার মধ্যে অনেক উন্নত।

মতবিনিময় সভার শুরুতে রাজউকের ডেপুটি টাউন প্ল্যানার অ্যান্ড প্রজেক্ট ডিরেক্টর মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম বলেন, বিশ্বের অন্য সব পুরনো ও ঘিঞ্জি এলাকা কীভাবে বদলে গেছে। এ ছাড়া পুরান ঢাকার বংশাল এলাকায় পাইলট প্রকল্পে কী ধরনের নাগরিক সুবিধা দেওয়া হবে। তিনি বলেন, প্রথমে ১০ দশমিক ২৭ একর জমির ওপর এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। সেখানে একটি স্কুল, শিশু ও বয়স্কদের জন্য উন্মুক্ত স্থান, একটি মসজিদ স্থাপন করা হবে। এ ছাড়া মূল সড়ক ৪০ ফুট এবং অভ্যন্তরীণ সড়ক ২০ ফুট প্রশস্থ করা হবে।

মূলত স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় যখন রাজউক চেয়ারম্যান আবদুর রহমান বলেন, পাইলট এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে প্রায় ২৫ বছর সময় লাগবে। এরপর যখন প্রকল্প পরিচালক বলেন, ৬ মাসের মধ্যে স্থানীয়দের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হস্তান্তর করা হবে এবং ২ বছরের মধ্যে ফ্ল্যাট হস্তান্তর করা হবে। রাজউকের তরফ থেকে একই স্থানে দুই ধরনের তথ্য প্রকাশ করার পরই স্থানীয়রা আস্থার সঙ্কটের প্রশ্ন তোলেন।

সভার শুরুতে দক্ষিণের মেয়র বলেন, যেকোনো শহর বদলে যাওয়ার জন্য কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ বছর সময় দরকার হয়। ঢাকা শহর দীর্ঘদিন ধরে আস্তে আস্তে পরিবর্তন হচ্ছে। তবে গ্রামীণ জীবনযাপনের থেকে রাজধানীতে জীবনযাপন অনেক খারাপ অবস্থায় রয়েছে। তবে আরবান প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে কিছুটা চিত্র বদলে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।