English Version
আপডেট : ৩০ জুলাই, ২০১৭ ১৬:০৯

ঢাকায় রাস্তায় নামলেই ভোগান্তি

অনলাইন ডেস্ক
ঢাকায় রাস্তায় নামলেই ভোগান্তি

মিরপুর ১০ এর বাসিন্দা মণিষা চক্রবর্তী একজন গৃহিণী। সারা সপ্তাহ ঘরেই থাকেন। শুক্র ও শনিবার একটু বের হন। কিন্তু রাস্তায় খোড়াখুড়ির কারণে এখন আর তেমন বের হতে চান না। স্বামীর কর্মস্থলের কারণে বাসাও পরিবর্তন করতে পারছেন না। অগত্যা বাসায় বসে থাকেন । এভাবেই রাস্তা খোড়াখুড়ির কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত মিরপুরসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকাবাসীর।

সরেজমিনে দেখা যায়, মেট্রোরেল, ড্রেনের কাজ, গ্যাস লাইনসহ নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে খোড়াখুড়ি চলছে মিরপুরের বিভিন্ন জায়গায়। মিরপুর ১০ নম্বর থেকে মিরপুর ১২ নম্বর ও পল্লবীর বেশ কিছু অংশেও চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। তার উপর প্রধান সড়কের যে অংশ খোড়াখুড়ি করা হয়নি সেসব অংশও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বৃষ্টির পানিতে। রাস্তা খোড়াখুড়ি আর নির্মাণ সামগ্রী রাখার কারণে মানুষের হাঁটার জন্য কোথাও কোথাও ফুটপাথটুকুও নেই। অনেক স্থানেই বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। পানি জমে তৈরি হয়েছে ফাঁদ। এসব স্থানে প্রতিদিনই ঘটছে নানা দুর্ঘটনা।

মিরপুর এলাকার রিকশাচালক মিলন জানান, রাস্তা খোড়াখুড়ির কারণে প্রায়ই যাত্রী নিয়ে বিপাকে পড়েন তিনি। বর্ষাকালে এসব এলাকায় রিকশা উল্টে দুর্ঘটনার শিকার হন অনেক যাত্রী। 

এই রুটের একটি পরিবহনের চালক জানালেন রাস্তা খোড়াখুড়ির কারণে প্রতিদিনই অস্বাভাবিক যানজটের সৃষ্টি হয়। একই অভিযোগ মোহাম্মদপুর থেকে মিরপুর ১০ ও ১১ নম্বর রুটের একাধিক লেগুনা চালকের।

শুধু রাস্তা খোড়াখুড়ি করেই অনেক সেবাদানকারী সংস্থা দায় সারে। মেরামতের প্রয়োজনবোধ মনে করেনা। গ্যাস কিংবা সুয়্যারেজ লাইন মেরামতের পর রাস্তা অসম্পূর্ণ থাকে মাসের পর মাস। ফলে রাস্তাগুলোর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে পড়ে। রাজধানীর ব্যস্ততম এসব সড়ক যেন অনেকটাই পরিত্যক্ত অংশে পরিণত হয়। একদিকে পরিবহনগুলো চলতে পারে না ঠিকমতো, অন্যদিকে সাধারণ মানুষের পায়ে হাঁটার পথও রুদ্ধ হয়ে পড়েছে। 

প্রধান প্রধান সড়ক ছাড়াও অনেক গলির অবস্থাও খারাপ। এসব এলাকায় রিকশা চলাচলও বন্ধ হয়ে গেছে। বৃষ্টিতে কাদা, বালি, পানিতে একাকার। এর মধ্যেই চলাচল করছে মানুষ। রাস্তা খোড়াখুড়ির দুভোর্গ শুধু রাস্তাতেই সীমাবদ্ধ নেই। গ্যাস লাইনের কাজের জন্য প্রায়ই বন্ধ থাকে মিরপুরের গ্যাস সরবরাহ। ফলে বিপাকে পড়ে এই অঞ্চলের হাজারো মানুষ। 

রাজধানীর ব্যস্ততম মিরপুরসহ অনেক সড়কে পরিকল্পনাহীনভাবে খোড়াখুড়ির কারণে নাগরিক সেবার পরিবর্তে দুর্ভোগটাই বেশি পোহাতে হচ্ছে নাগরিকদের। বিভিন্ন উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সমন্বয়হীনতাই এই দুর্ভোগকে আরও বাড়িয়ে তুলবে বলে মনে করছেন সাধারণ নাগরিকরা। 

এদিকে ঢাকার মোহাম্মদপুরের বাঁশবাড়ি এলাকার সড়কটি অনেকদিন ধরেই ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়ে আছে। মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে শংকর যাওয়ার জন্য ব্যবহৃত সোজা সড়কটির বিভিন্ন অংশই ভাঙা। এর মধ্যে রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানাম করে বিভিন্ন বাস ও লেগুনা। ফলে এই রাস্তায় সবসময়ই যানজট লেগে থাকে। অথচ রাস্তাটি সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেই। বর্ষার সময়ে অবস্থা হয় আরো ভয়াবহ। ফলে অফিসগামী কর্মজীবী বা স্কুলগামী শিশু-কিশোরদের মূল্যবান কর্মঘণ্টা নষ্ট হয় রাস্তাতেই। এই দুর্ভোগের শেষ কোথায় জানে না কেউ।