English Version
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ১২:২০

সুস্বাস্থ্যের জন্য কত ঘণ্টা ঘুমান দরকার

অনলাইন ডেস্ক
সুস্বাস্থ্যের জন্য কত ঘণ্টা ঘুমান দরকার

ঘুম বা নিদ্রা হচ্ছে মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীর দৈনন্দিন কর্মকান্ডের ফাঁকে বিশ্রাম নেওয়ার একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, যখন সচেতন ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া স্তিমিত থাকে। নিষ্ক্রিয় জাগ্রত অবস্থার সাথে ঘুমন্ত অবস্থার পার্থক্য হল এ সময় উত্তেজনায় সাড়া দেবার ক্ষমতা হ্রাস পায় এবং শীতনিদ্রা বা কোমার চেয়ে সহজেই জাগ্রত অবস্থায় ফেরত আসা যায়।

কর্মক্লান্ত দেহ আবার কর্মোচ্ছল করে তুলতে নিয়মিত ঘুম একটি অপরীহার্য বিষয়। ঘুম কাতুরে মানুষ বেশি সুস্থ, নাকি পরিমিত ঘুমের মানুষ বেশি সুস্থ- এমন বিষয় নিয়ে গবেষণা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ঘুম কাতুরে বা বেশি ঘুমানো মানুষ বলা হয়, যারা ৯ কিংবা ১০ ঘণ্টার বেশি ঘুমান।

ঘুমের অভাব শরীরে যে প্রভাব পড়ে

এক গবেষণার বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, বয়ঃসন্ধিকালের আগ পর্যন্ত প্রতি রাতে ১১ ঘণ্টা ঘুমানোর জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে। নবজাতকের জন্য প্রতিদিন ১৮ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। যাদের বয়স ১৩ থেকে ১৯ বছর, তাদের প্রতি রাতে ১০ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত।

ডাবলিনের ট্রিনিটি কলেজের মস্তিষ্ক বিষয়ক গবেষক শেন ও'মারা বলেন, শুধু কম ঘুমের কারণেই স্বাস্থ্য খারাপ হয় কিনা সেটি বলা খুব কঠিন। তবে একটির সঙ্গে আরকেটির সম্পর্ক আছে। যারা কম ব্যায়াম করে তারা শারীরিকভাবে কম ফিট থাকে। ফলে বেশি ঘুম পায় এবং নিজেকে ক্লান্ত মনে হয়। আবার ক্লান্ত থাকার কারণে ব্যায়াম করা কমে যায়। অনেকে আছেন যারা সাংঘাতিকভাবে ঘুম বঞ্চিত। রাতে এক-দুই ঘণ্টার বেশি তাদের ঘুম হয় না। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এর কারণে স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যায়।

ঘুমের গবেষণা পর্যালোচনা

কম ঘুমের কারণে শারীরিকভাবে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশ্বের ১৫৩টি গবেষণা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, কম ঘুমের কারণে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ এবং মোটা হয়ে যাবার সম্পর্ক আছে। প্রায় ৫০ লাখ মানুষের উপর এসব গবেষণা চালানো হয়েছে। গবেষণায় দেখা যায়, একটানা কয়েক রাত যদি ঘুম কম হয়, তবে সেটি আপনাকে ডায়াবেটিসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যেতে পারে। এ ধরনের নিদ্রাহীনতা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে শরীরের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়।

রাতে ঘুমের চক্র

ঘুম কম হলে টিকার কার্যকারিতা ও শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। গবেষণার তথ্য মতে, ঘুম হলে ক্ষুধার তীব্রতা বাড়ে এবং এতে বেশি খাবারের চাহিদা বাড়ে। এতে মোটা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যার প্রভাবে মস্তিস্কের কার্যক্ষমতা কমে যায় এবং দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি বিভ্রম তৈরি সম্ভাবনা দেখা দেয়।

অধ্যাপক ও'মারা বলেন, দিনের বেলায় মস্তিকের ভেতরে নানা ধরনের জিনিস তৈরি হয় এবং রাতে ঘুমের মাধ্যমে সেগুলো অপসারণ হয়ে যায়। এ কারণে মস্তিষ্ক দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। তবে অতিরিক্ত ঘুম হলে শরীরের উপর কী ধরনের প্রভাব পড়ে সেটি পুরোপুরি বোঝা যাচ্ছে না।

ঘুমের একটি চক্র আছে। প্রতিটি চক্র ৬০ থেকে ১০০ মিনিট পর্যন্ত থাকে। ঘুমের বিভিন্ন স্তরের সময় আমাদের শরীরের ভেতরে যেসব বিভিন্ন ধরনের ক্রিয়া-বিক্রিয়া ঘটে। এ স্তরগুলোর মধ্যে আছে- ঘুম-ঘুম ভাব, হালকা গভীর ঘুম এবং গভীর ঘুম।