English Version
আপডেট : ৭ জানুয়ারি, ২০১৮ ১১:০৭

এই ৯ টি কথা কখনোই সন্তানদের বলবেন না

অনলাইন ডেস্ক
এই ৯ টি কথা কখনোই সন্তানদের বলবেন না

শিশুরা স্বভাবতই বড়দের চেয়ে অনেক বেশি সংবেদনশীল। আপনি তাকে বকা দিলে সেটা তাদের মনস্তত্ত্বের পাশাপাশি ব্যক্তিত্বেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। একইসঙ্গে আপনার সম্পর্কেও তার মনে ভয় ও ঘৃণার সৃষ্টি হতে পারে। তাই বিশেষ কিছু কথা তাদের সামনে না বলাই ভালো। এক্ষেত্রে ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’ অবলম্বনে জেন নিন সন্তানদের সামনে কোন কথা বলবেন না-

ভুল করবে না 

শুধু বাচ্চারা নয়, সকলেই ভুল করে। তাই বাচ্চারা ভুল করলেই তাদের শাস্তি দিবেন না। কারণ এটি শেখার প্রক্রিয়ার একটি অংশ। আপনার সন্তান যে কাজটা করতে চায় তাকে সেটা করতে দিন। আপনার ইচ্ছা কখনই তাদের ঘাড়ে চাপাবেন না। এমনকি আপনি তার কোন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনবেন না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে। একজন অভিভাবক হিসাবে আপনার কাজই হলো তাকে পথ দেখানো, তাকে আপনার মতামত মানতে বাধ্য করা নয়।

তোমার বয়সে আমি অনেক দায়িত্ববান ছিলাম

নিজের সঙ্গে সন্তানের তুলনা-একটি বোকামি ছাড়া আর কিছু হতে পারে না। সন্তানকে কখনই বলা ঠিক নয়, তোমার বয়সে আমি অনেক দায়িত্ববান ছিলাম। এমন কথাবার্তা বাচ্চাদের অস্বস্তিতে ফেলে। এর চেয়ে বরং তাদের ত্রুটিগুলো ধরিয়ে দিয়ে তা সংশোধনের চেষ্টা করুন। তা না হলে বাচ্চাদের আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি দেখা দেবে।

তোমার ভাইয়া/আপুর মতো লক্ষ্মী হতে পারো না? 

প্রত্যেকটি শিশুই স্বতন্ত্র। আপনি অবহেলা করে তাকে তার ভাইবোন/কাজিন বা অন্য কোন বাচ্চার সঙ্গে তুলনা করতে পারেন। এই ধরণের অযৌক্তিক তুলনাও ঠিক নয়। সবসময় দক্ষতা নিয়ে তুলনা করলে বাচ্চাদের মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি হতে পারে। এ কারণে আপনার প্রতি বাচ্চার নেতিবাচক অনুভূতি হতে পারে। কাজেই বাচ্চাদের একে অপরের তুলনা করা থেকে বিরত থাকুন।

তোমার লজ্জা হওয়া উচিত 

বাচ্চাদের কাছে এই ধরণের বিবৃতিও অনেক ভয়ংকর শোনায়। তারা দুষ্টু প্রকৃতির হতেই পারে। তাকে সুন্দর মানুষ করে গড়ে তোলার দায়িত্ব আপনার। তার মানে এই নয় যে তাকে আপনি এভাবে বলবেন। সেক্ষেত্রে এসব কথা এড়িয়ে চলুন। কারণ বাচ্চাদের বোঝানোর আরও ভালো অনেক পন্থা আছে।

আমাকে একা থাকতে দাও!

সংসার জীবনে প্রাপ্তবয়স্কদের অনেক দায়বদ্ধতা আছে। একইসঙ্গে বাচ্চাদের প্রতিও তাদের অনেক দায়িত্ব আছে। আর এই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমাদের সব দিন ভালো যায়না। এমন অনেক খারাপ সময় আসে যখন আমরা একা থাকতে চাই। শিশুরা কিন্তু এই পরিস্থিতি সম্পর্কে কিছুই বুঝতে পারেনা। তাই তাদের কখনই বলা ঠিক নয়, আমাকে একা থাকতে দাও। আপনার এমন মন্তব্যে শিশুরা নিজেদের অবহেলিত, অবাঞ্ছিত মনে করার পাশাপাশি হতাশাও বোধ করে। কাজেই যে কোন সংকটময় পরিস্থিতিতে নিজে ধৈর্য ধারণ করুন।

তুমি ঠিক তোমার বাবা/মায়ের মতো

সব বিবাহিত দম্পতি সুখী হয় না। যারা সুখী নয় তাদের সম্পর্কে সবসময় তিক্ততা থাকবে এটা স্বাভাবিক। এ কারণে প্রায়ই একে অপরের বিরুদ্ধে নির্লজ্জ শব্দ বিনিময় করেন। এটা করা কখনই ঠিক নয়। সবসময় মাথায় রাখবেন, বাচ্চারা এই পারস্পরিক শত্রুতা এবং সমালোচনায় সাক্ষী। সুতরাং যখন আপনি আপনার সঙ্গীর সঙ্গে শত্রুতা করে বাচ্চার ওপর তা প্রয়োগ করবেন, তার ফল কখনই ভালো হতে পারে না।

শিশুদের মতো আচরণ করো না 

উপরের এই উক্তির সঙ্গে আবেগের ব্যাপারটি অনেক বেশি জড়িত। এটা নিঃসন্দেহে অনেক আঘাতপূর্ণ একটি উক্তি, যেটা সন্তানকে আপনার কখনই বলা উচিত নয়। জীবনে যে কোন পরিস্থিতি আসুক না কেন এ ধরনের কথা এড়িয়ে চলাই ভালো।

খারাপ বন্ধুদের সঙ্গ ছাড়ো

আমরা আসলে বন্ধু তৈরি করার আগে ভেবে দেখিনা। তেমনি শিশুদের বেলা্য়ও এমনটি ঘটে। পার্থক্য কেবল একটাই, আমরা বুঝতে পারি কুসর্গ থেকে কীভাবে দূরে থাকবো। অন্যদিকে শিশুরা তা পারে না। বন্ধুরা শিশুদের কাছে সব কিছু।  তাই আপনি কখনই তাদের ছাড়তে আদেশ করতে পারেন না। বরং আপনার সন্তানকে কৌশলে ভালো বন্ধুদের সঙ্গে মিশতে সাহায্য করুন।

তুমি সবসময় আমাকে কষ্ট দাও

কখনও কখনও বাবা-মায়ের অমতে গিয়ে বাচ্চারা তাদের কষ্ট দিয়ে থাকেন। বেশিরভাগ সময়ই এটা অনিচ্ছাকৃত হয়ে থাকে। আবার কিছু কিছু সন্তান এটা ইচ্ছাকৃতভাবেই করে থাকেন। যেভাবেই করুক না কেন, সন্তানদের এ ধরনের কথা কখনই বলবেন না। এতে তারা নিজেদের অপরাধী মনে করতে শুরু করে। তখন হয়ত সে আপনাকে সুখী করার জন্য দাবি মেনে নেবে। কিন্তু সেটা বেশিদিন দীর্ঘস্থায়ী হবে না। কাজেই কিছু কিছু সিদ্ধান্ত শিশুদের নিজেদের নিতে দিন এবং তাদের অপরাধ মুক্ত রাখতে সাহায্য করুন।