বাচ্চাদের বড় করা একই সঙ্গে কঠিন ও আনন্দের কাজ। তাই একথা না বললেই নয় যে, ভালো বাবা-মা হয়ে ওঠার জন্য কতগুলি প্রচলিত ধারণা এখনই ভুলে যাওয়াটা খুব দরকার। না হলে তা মা-বাবা এবং বাচ্চা, উভয়ের জন্যই বিপদ।

প্রথমবার বাবা হলেই আশেপাশ থেকে অনেক উপদেশ আসে। কখনও বন্ধুরা সেই উপদেশের বাহক হোন তো কখনো প্রতিবেশি বা আত্নীয়রা। এখন প্রশ্ন হল, সব উপদেশ কি কাজের? একেবারেই না। তাই এই বিষয়টা পুরটাই আপনার উপর নির্ভর করছে যে তারা কোনও উপদেশটা নেবেন, আর কোনওটা নেবেন না।

তবে একটা বিষয় মাথায় রাখবেন, আপনি যে উপদেশেই বিশ্বাস রাখুন না তার কুপ্রভাব যেন আপনার বাচ্চার উপর না পড়ে। তাই একটু পড়াশোনা করেই জেনে নিন না কোন জিনিসটা আপনার বাচ্চার ভালো, আর কোনটা নয়।

বাবা-মায়ের যে সাতটি জিনিস কখনই বিশ্বাস করা উচিত নয়!

বাচ্চা কাঁদলে তাকে কোলে নেবেন না : অনেকই এটা বিশ্বাস করেন যে, বাচ্চা কাঁদার সময় তাকে কোলে তুললে তার অভ্যাস খারাপ হয়ে যায়। এখানেই শেষ নয়, তারা আরও বিশ্বাস করেন এমনটা করলে নাকি পরবর্তীকালে সেই বাচ্চা একেবারেই শৃঙ্খলাপারায়ণ হয় না। এই ধরণা একেবারেই ভুল। বরং কাঁদার সময় বাচ্চাকে কোলে নিলে সে তাড়াতাড়ি শান্ত হয়ে যায়।

ঠাণ্ডার সময় সর্দি-কাশি হবেই : এটা আরেকটা ভুল ধারণা। আপনার বাচ্চার শরীর খারাপ হবে কিনা, তা নির্ভর করে তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর। বাচ্চার শরীর দুর্বল হলে, শুধু ঠাণ্ডার সময় নয়, যে কোনও মরসুমেই তার শরীর খারাপ হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। তাই বাচ্চার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যাতে ভালো হয় সেদিকে একটি খেয়াল রাখুন।

দুধের দাঁত বেরনোর সময় জ্বর আসবেই : সেই আদিকাল থেকে এই ধারণা চলে আসলেও এর মধ্য়ে একটুও সত্য়তা নেই। বাচ্চার মাড়িতে বা মাথায় ব্য়থা হওয়া মানেই তা দাঁত ওঠার কারণে হচ্ছে এমনটা ভেবে নেবেন না।

জুস বাচ্চার শরীরের জন্য ভালো : জুস যদি ১০০ শতাংশ অর্গানিক না হয় তাহলে তা মোটেই বাচ্চার জন্য স্বাস্থ্যকর হয় না। কারণ সাধারণ জুসে মাত্রাতিরিক্ত শর্করা থাকে, যা বাচ্চার দাঁতের পক্ষে একেবারেই ভালো নয়।

নিজের প্রয়োজনের আগে রাখতে হবে বাচ্চার প্রয়োজনকে : এমন ভাবনা কিন্তু একেবারেই ঠিক নয়। বাচ্চার জন্য দিনের বেশিরভাগ সময় দিয়ে দেওয়ার মধ্য়ে কোনও ভুল নেই। কিন্তু বাবা-মায়েদের নিজেদের ইচ্ছা পূরণের জন্যও আলাদা করে সময় রাখা উচিত। না হলে জীবনের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে, দেখা দেবে অন্য ধরনের সমস্যা।

বাচ্চার ওপর রাগ করা মানেই আপনি বাজে বাবা-মা : বাচ্চা ভুল করলে তাকে বকা উচিত, বোঝান উচিত ষে সে ভুল করেছে। এই কাজের মধ্যে কোনও খারাপ কিছু নেই। তাই কখনও বাচ্চাদের বকা দিলে মনোকষ্টে ভুগবেন না যে আপনি ভুল কাজ করেছেন।

ভ্যাকসিন দিলেই বাচ্চা অটিজমের শিকার হবে : এই ধরণাটা অনেকে বিশ্বাস করলেও বাস্তব হল ভ্যাকসিন দেওযার সঙ্গে অটিজমের কোনও সম্পর্ক নেই। এমনকী এই বক্তব্যটি একাধিক গবেষণাতেও প্রমাণিত হয়েছে। তাই নিশ্চিন্তে আপনার বাচ্চাকে প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন দিন, তার কোনও ক্ষতি হবে না দেখবেন!

ইন্টারনেট থেকে