English Version
আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ১৮:৩৮

উত্তর কোরিয়ার উপকূলে মার্কিন বোমারু বিমান

অনলাইন ডেস্ক
উত্তর কোরিয়ার উপকূলে মার্কিন বোমারু বিমান

উত্তর কোরিয়ার পূর্ব উপকূলের দিকে আন্তর্জাতিক আকাশ সীমায় মার্কিন বোমারু বিমান বি-১বি উড়ে গেছে। পেন্টাগন জানিয়েছে, যে কোনো প্রকার হুমকিকে পরাজিত করার সামরিক শক্তি যে যুক্তরাষ্ট্রের আছে তার একটা প্রদর্শনী দেওয়াই তাদের মূল উদ্দেশ্য। খবর বিবিসি।

একুশ শতকে সুদূর উত্তরে মার্কিন ফাইটার বা বোমারু বিমান পৌঁছানোর ঘটনা এটিই প্রথম বলেও জানিয়েছে পেন্টাগন।

যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে ক্রমাগত বেড়ে চলা উত্তেজনা অবশেষে বোমারু বিমান ও জেট ফাইটারের মতন যুদ্ধাস্ত্রের দিকে মোড় নিয়েছে। 

এদিকে উত্তর কোরিয়ার পূর্ব উপকূলে মার্কিন বোমারু বিমানকে জেট ফাইটারের প্রহরায় নিয়ে যাবার পর দুই দেশের মধ্যে এখন বিরাজ করছে ভীষণ এক দম বন্ধ পরিস্থিতি। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র যে উত্তর কোরিয়ার ‘বেপরোয়া’ আচরণকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নিয়েছে তা বোঝানোই এই শক্তি প্রদর্শনীর একটা উদ্দেশ্য।

এর আগে প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশণে ভাষণ দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে ট্রাম্প তার বক্তব্যে উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনকে একটি আত্মঘাতী মিশনের ‘রকেট মানব’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। তার দেয়া বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েই উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রি ইউং হো, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে 'উন্মাদ' বলে উল্লেখ করেন এবং পরমাণু অস্ত্র বানানোর অধিকার যে তাদের আছে সে কথাও মনে করিয়ে দেন। হো বলেছেন, ট্রাম্প নিজেই একটা আত্মঘাতী মিশনে নেমেছেন। তিনি বলেন ট্রাম্পের এই আত্মঘাতী হামলার কারণে মার্কিন বেসামরিক নাগরিকের যদি কোনো ক্ষতি হয় তাহলে এই ক্ষেত্রে দায়ী থাকবে ডোনাল্ড ট্রাম্প।

হো বলেন, ট্রাম্পের মতো একজন মানসিক বিকারগ্রস্ত লোকের কাছ থেকে এমন মন্তব্যের পর যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে রকেট হামলা চালানো অনিবার্য হয়ে উঠেছে। উত্তর কোরিয়াকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়া হবে বলে ট্রাম্প যে মন্তব্য করেছেন তার জন্য তাকে চড়া মূল্য দিতে হবে বলেও হুমকি দিয়েছেন হো।

তিনি আরো বলেন, দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষা, দুরূহ শ্রম, সাধনা ও সংগ্রামের পর উত্তর কোরিয়া অবশেষে পরমাণু অস্ত্র প্রাপ্তির দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ফলে, তাদের উপরে যত কঠিন অবরোধই দেয়া হোক না কেন এখন আর তারা যে সরে আসবে না সেই সংকল্পও দৃঢ়তার সাথে জানিয়েছেন হো।

হো ডোনাল্ড ট্রাম্পকে মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত লোক বলেও তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন।

উত্তর কোরিয়ার মন্ত্রীর এইসব কথার জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রকে রক্ষা করতে প্রয়োজনে পূর্ণাঙ্গ মাত্রায় সামরিক শক্তির ব্যাবহারের প্রস্তুতি যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের রয়েছে। এই বাস্তবতায়, দুই দেশের মধ্যে উত্তেজিত কথাবার্তা বিনিময়ের পর বোমারু বিমান পাঠানোর এই ঘটনায় উত্তেজনা এখন নিয়েছে ভিন্ন এক মাত্রা।

গত ৩ সেপ্টেম্বর নিজেদের ষষ্ঠ ও সবচেয়ে শক্তিশালী পরমাণু বোমার পরীক্ষা চালায় উত্তর কোরিয়া। এ বছর কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্রও উৎক্ষেপণ করে দেশটি। যুক্তরাষ্ট্রে পরমাণু হামলা চালানোর সক্ষমতা অর্জনে কাজ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছে তারা। সর্বশেষ হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষার জেরে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ সর্বসম্মতিক্রমে দেশটির ওপর নতুন বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এরপর জাপানের ওপর দিয়ে ফের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে এই নিষেধাজ্ঞার জবাব দেয় উত্তর কোরিয়া।

পেন্টাগন বলছে, শনিবারের অভিযানে অংশ নেওয়া বি-১বি ল্যান্সার বোমারুগুলো গুয়াম ঘাঁটি থেকে আসে এবং জাপানের ওকিনাওয়া থেকে এফ-১৫সি ঈগল ফাইটার জেটগুলো ওই বহরে যুক্ত হয়।