English Version
আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০৪:৪৫

মুখমণ্ডল প্রতিস্থাপনের ঐতিহাসিক অপারেশনে আমূল বদলে গেল চেহারা

নিজস্ব প্রতিবেদক
মুখমণ্ডল প্রতিস্থাপনের ঐতিহাসিক অপারেশনে আমূল বদলে গেল চেহারা

অস্ত্রোপচারের পর আয়নায় মুখ দেখে অবাক মিনেসোটার ২১বছরের তরুণ অ্যান্ডি স্যান্ডনেস। তার নাক, চিবুক, মুখ, ঠোঁট, চোয়াল, গাল, এমনকী দাঁতগুলোও অন্যের- দাতা ২১বছরেরই তরুণ ক্যালেন রস।

অন্য লোকের চেহারা নিয়ে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা অ্যান্ডি অস্ত্রোপচারের পর কথা বলতে সক্ষম ছিলেন না। কিন্তু আয়নায় তার নতুন মুখমণ্ডল দেখার পর তিনি চিকিৎসক ও পরিবারের উদ্দেশ্যে কাগজে লিখে দেন, "আমার প্রত্যাশা ছাড়িয়ে গেছে।"

দুই তরুণ একে অপরকে চিনতেন না, কিন্তু একটা ব্যাপারে তাদের মধ্যে মিল ছিল।

তারা দুজনেই আত্মহত্যার জন্য নিজেদের গুলি করেছিলেন।

২০০৬ সালে অ্যান্ডি স্যান্ডনেসের আত্মহত্যার চেষ্টা ব্যর্থ হয়। ওয়াওমিং এলাকার এই তরুণ প্রাণে বেঁচে যান, কিন্তু মুখমণ্ডল সম্পূর্ণ বিকৃত হয়ে যায়।

অনেকগুলো অস্ত্রোপচার করেও তার চেহারা চলনসই করতে পারেন নি চিকিৎসকরা।

অ্যান্ডি তখন সবাইকে বলতেন শিকার করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় তার মুখ নষ্ট হয়ে গেছে।

মিনেসোটাতেই থাকতেন দাতা ক্যালেন রস। ২০১৬র জুন মাসে গুলি করে আত্মহত্যা করেন তিনি। তার স্ত্রী লিলি তখন ছিলেন অন্তসত্ত্বা।

তার প্রয়াত স্বামী ক্যালেন মৃত্যুর আগে তার অঙ্গদান করার ইচ্ছে প্রকাশ করে গিয়েছিলেন।

স্বামীর ইচ্ছাকে সম্মান জানাতে লিলি তার দেহ দান করতে রাজি হন, কিন্তু তার মুখমণ্ডল আরেকজনকে দেওয়ার ব্যাপারে তিনি খুব স্বচ্ছন্দ ছিলেন না।

"আমি চাই নি পথ চলতে গিয়ে হঠাৎ দেখব আমার স্বামী ক্যালেন ঘুরে বেড়াচ্ছেন," সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানান লিলি।

মিনেসোটাতেই থাকতেন দাতা ক্যালেন রস। ২০১৬র জুন মাসে গুলি করে আত্মহত্যা করেন তিনি। তার স্ত্রী লিলি তখন ছিলেন অন্তসত্ত্বা।

তার প্রয়াত স্বামী ক্যালেন মৃত্যুর আগে তার অঙ্গদান করার ইচ্ছে প্রকাশ করে গিয়েছিলেন।

স্বামীর ইচ্ছাকে সম্মান জানাতে লিলি তার দেহ দান করতে রাজি হন, কিন্তু তার মুখমণ্ডল আরেকজনকে দেওয়ার ব্যাপারে তিনি খুব স্বচ্ছন্দ ছিলেন না।

"আমি চাই নি পথ চলতে গিয়ে হঠাৎ দেখব আমার স্বামী ক্যালেন ঘুরে বেড়াচ্ছেন," সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানান লিলি।

তবে চিকিৎসকরা তাকে আশ্বাস দিয়ে বলেন মিঃ স্যান্ডনেসের চোখ ও কপাল তার নিজেরই থাকবে- চোখের নিচ থেকে বাকিটা প্রতিস্থাপন করা হবে। তাই হুবহু তার স্বামীর চেহারা অ্যান্ডি পাবেন না।

মিনোসোটার রচেস্টারে মেয়ো ক্লিনিকে গত বছর জুন মাসে এই বিরল ও জটিল অস্ত্রোপচার করেন ডাক্তার সামীর মারদানি, যিনি মুখমণ্ডল পুর্নগঠন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।

এই অপারেশনের জন্য হাত পাকাতে তিনি তিন বছর ধরে ৫০টি শনিবার মৃত ব্যক্তির উপর পরীক্ষামূলক অস্ত্রোপচার চালিয়েছেন।

প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল অ্যান্ডির শরীর নিতে পারবে এমন দাতা পেতে কয়েক বছর লেগে যাবে। কিন্তু ৫ মাসের মধ্যেই ক্যালেনের মৃত্যুর পর তার মুখমণ্ডল গ্রহণযোগ্য বিবেচনায় এই অপারেশন চালানো হয়।

অপারেশনটি খুবই জটিল, কারণ নিজের স্নায়ু ব্যবহার করে অন্যের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের কাজ অ্যান্ডি যাতে ঠিকমত করতে পারেন চিকিৎসককে সেই সম্বন্বয়ের কাজটা নিশ্চিত করতে হয়েছে- যেমন হাসা, চোখ খোলা বা বোজা, বা দাঁত ব্যবহার করা।

মিঃ স্যান্ডনেস এখনও তার দাতার স্ত্রী লিলিকে দেখেন নি। কিন্তু তাকে চিঠি লিখে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।