English Version
আপডেট : ৫ অক্টোবর, ২০১৭ ১০:৫৬

মানুষ গোসল কেন করে, প্রতিদিন গোসল করা কি জরুরি?

অনলাইন ডেস্ক
মানুষ গোসল কেন করে, প্রতিদিন গোসল করা কি জরুরি?

জন্মের পরপরই নবজাতককে গোসল করানো হয়। সেই থেকে শুরু, মৃত্যু পর্যন্ত চলতেই থাকে গোসল। কখনো দিনে একবার, কখনো আবার দু-তিনবার। যদিও কেউ কেউ সপ্তাহে বা মাসে এক-আধবার গোসল করেন।

কিন্তু মানুষ গোসল কেন করে? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন শরীরকে রোগমুক্ত এবং চাঙ্গা রাখতে গোসলের কোনো বিকল্প নেই। তাই গোসল শুধু অভ্যাস বা দৈনিক রুটিনের একটা অংশ নয়, আরও বেশি কিছু।

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ক্লান্তি এবং গায়ের গন্ধ দূর করার পাশাপাশি গোসল করার অভ্যাস আরো অনেক উপকারে লাগে।

১. পেশির কর্মক্ষমতা বাড়ায়: সারা দিন ধরে কাজ করতে করতে আমাদের শরীরজুড়ে ছড়িয়ে থাকা পেশিরা যেমন ক্লান্ত হয়ে পড়ে, তেমনি চোট-আঘাতও লাগে। এমন অবস্থায় দিনের শেষে হলকা গরম পানিতে অথবা ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করলে পেশিগুলো চাঙ্গা হয়ে ওঠে।

প্রসঙ্গত, পেশির সচলতা বৃদ্ধির পিছনে গোসলের যে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে, তা মেনে নিয়েছেন গবেষকরাও।

২. রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি করে: গবেষণায় দেখা গেছে, গোসল করার সময় ঠাণ্ডা পানির স্পর্শ লাগার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সারা শরীরে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের সরবরাহ বেড়ে যায়। ফলে একদিকে যেমন হার্টের পাশাপাশি দেহের ভাইটাল অর্গানদের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, তেমনি অন্যদিকে রক্তচাপও কমতে থাকে। ফলে সার্বিকভাবে শরীর একেবারে তরতাজা হয়ে ওঠে।

৩. রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে: গোসলের সঙ্গে ডায়াবেটিস রোগের কী সম্পর্ক? গবেষণা বলছে ডায়াবেটিস রোগিরা যদি টানা ৩ সপ্তাহ, দৈনিক ২০-৩০ মিনিট গরম পানিতে গোসল করেন, তাহলে রক্তে শর্করার মাত্রা প্রায় ১৩ শতাংশ কমে যায়। ফলে ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে সময় লাগে না।

৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: শুধু ঠাণ্ডা নয়, গরম পানিতে গোসল করার সময়ও ভাসকুলার এবং লিম্ফ সিস্টেম থেকে প্রচুর মাত্রায় ইমিউন সেলের জন্ম হতে থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়তে থাকে। আর যেমনটা আপনাদের সকলেরই জানা আছে, রোগ প্রতিরোধ ব্য়বস্থা যত শক্তিশালী হয়ে ওঠে, তত রোগভোগের আশঙ্কা হ্রাস পায়। এবার বুঝেছেন তো প্রতিদিন গোসল করার গুরুত্ব কতটা!

৫. স্ট্রেস ও মানসিক চাপ কমায়: দিন শেষে ক্লান্তি এবং স্টেস যখন ঘারে চেপে বসে, তখন যেন পা এগতে চায় না। মনে হয় জীবনটা যেন থেমে গেছে কোনো বোল্ডারে বাঁধা পেয়ে। এমন অবস্থায় মহৌষধির কাজ করে এক বালতি ঠাণ্ডা পানি। সেটা যখন মাথা হয়ে সারা শরীরে ঝাপিয়ে পরে, তখন আমাদের মস্তিষ্কের অন্দরে বিটা-এন্ডোরফিন এবং নোরাএড্রেনালিনের মতো হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। ফলে নিমেষে স্ট্রেস এবং ডিপ্রেশন কমে গিয়ে মন চাঙ্গা হয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে ক্লান্ত জীবন ফিরে পায় তার হারিয়ে যাওয়া মরুদ্যান।

৬. ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বাড়ে: বেশ কিছু কেস স্টাডিতে দেখা গেছে প্রতিবার ঠাণ্ডা পানি মাথায় ঢালার সময় কোনো এক অজানা কারণে আমাদের ফুসফুস সংকুচিত হয়ে যায়। এমনটা বারে বারে হওয়ার কারণে লাং-এ অক্সিজেনের সরবরাহ বেড়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। প্রসঙ্গত, যে হারে আজকাল বায়ুদূষণের প্রকোপ বাড়ছে তাতে ফুসফুসকে অতিরিক্ত চাঙ্গা না রাখলে কিন্তু বিপদ! তাই যতই ল্যাথারজিক লাগুক না কেন, প্রতিদিন সকাল-বিকাল গোসল মাস্ট।